Table of Contents
ভারত তার ক্ষমতার পতাকা এমনভাবে তুলেছে যে সারা বিশ্ব তার আধিপত্য মেনে নিতে বাধ্য হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার থিঙ্ক ট্যাঙ্ক লোই ইনস্টিটিউট সম্প্রতি প্রকাশিত এশিয়া পাওয়ার ইনডেক্স র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের অনেক শক্তিশালী দেশকে হারিয়ে শীর্ষ তিনে জায়গা করে নিয়েছে ভারত। এশিয়ার ভৌগোলিক এলাকায় আমেরিকা ও চীনের আধিপত্য। এই দুই দেশের পর ভারত এখন তৃতীয় বৃহত্তম সুপার পাওয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। রাশিয়া ও জাপানের মতো সুপার পাওয়ারকেও পেছনে ফেলেছে ভারত। এই র্যাঙ্কিংয়ে 39.1 স্কোর নিয়ে, ভারত তার বৈশ্বিক অবস্থান আরও শক্তিশালী করেছে, যেখানে জাপান 38.9 স্কোর নিয়ে চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে। অন্যদিকে, এই র্যাঙ্কিংয়ে পাকিস্তানের অবস্থা আরও খারাপ বলে মনে হচ্ছে।
জাপান ও রাশিয়াকে পেছনে ফেলে ভারত হয়ে ওঠে সুপার পাওয়ার
লোভির রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়েছে যে এশিয়ায় ক্ষমতার ভারসাম্য এখনও আমেরিকা ও চীনের হাতে, কিন্তু ভারতের উদীয়মান হুমকি এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে পারে। চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তার শক্তি স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের শক্তি বাড়ছে না কমছে না, বরং স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। আটটি শক্তির মধ্যে ছয়টি প্যারামিটারে আমেরিকা এখনও শীর্ষে রয়েছে। এর সাথে সাথে ভারতের অবস্থানের উন্নতি হচ্ছে এবং জাপান ও রাশিয়াকে পেছনে ফেলে এশিয়ায় তৃতীয় অবস্থানে জায়গা করে নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি এশিয়া পাওয়ার সূচকে ভারতের উত্থানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং বৈশ্বিক কৌশলকে দায়ী করেছেন। রিপোর্ট অনুসারে, 2023 সালে, ভারত এশিয়া পাওয়ার সূচকের দেশগুলির সাথে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক সংলাপে অংশ নিয়েছিল। যা দেখায় ভারত তার কূটনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করতে সক্রিয়।
ভারতের শক্তি যেভাবে বাড়ছে
অস্ট্রেলিয়ান থিঙ্ক ট্যাঙ্কের মতে, ভারতের ক্রমবর্ধমান শক্তির মূল ভিত্তি হল এর বিশাল জনসংখ্যা এবং দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতি। প্রতিবেদনে ভারতের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা 4.2 পয়েন্ট বেড়েছে। এর সাথে, ভবিষ্যতের সম্পদের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের স্কোর 8.2 পয়েন্ট বেড়েছে। এর মানে হল যে ভারতের তরুণ জনসংখ্যা আগামী দশকগুলিতে একটি জনসংখ্যাগত সুবিধা প্রদান করতে পারে, যা এটিকে অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত ভাবে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।
এশিয়ার বিশেষ খেলোয়াড় হয়ে উঠেছে ভারত
লোই ইনস্টিটিউট রিপোর্ট এশিয়ায় ক্ষমতার উদীয়মান রূপরেখা তুলে ধরে। প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়েছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন প্রধান শক্তি রয়ে গেছে, তবে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে ভারতের অর্থনৈতিক শক্তি, সামরিক শক্তি এবং কূটনৈতিক কৌশলগুলির আন্তঃপ্রক্রিয়া এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের অবস্থান এই র্যাঙ্কিংয়ে অস্থিতিশীল। তালিকায় পাকিস্তানের নম্বর 14.4 এবং প্রতিবেশী দেশটি 16 তম স্থানে রয়েছে।
এই রিপোর্টের ফলে, ভারতের শক্তি বৈশ্বিক ভূরাজনীতিতে একটি নতুন দিক নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারত তার সম্পদকে যথাযথভাবে ব্যবহার করে এবং তার কূটনৈতিক সক্ষমতা বাড়ালে, এটি এশিয়ার একটি বড় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে। এই পরিবর্তন শুধুমাত্র ভারতের জন্য নয়, সমগ্র এশীয়া অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে, কারণ ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তন বৈশ্বিক স্তরে ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করতে পারে।