ওয়েব ডেস্ক: ভোট পরবর্তী হিংসায় খুন ও ধর্ষণের মামলাগুলির তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন সোমবার রাজ্যের পক্ষ থেকে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব নিয়ে সওয়াল তোলা হয়। কমিশনের সদস্যদের রাজনৈতিক পরিচয়ের বিষয়টি তুলে ধরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতে বলেন, “মাই লর্ড এটা কি বিজেপি তদন্তকারী কমিটি? আপানারা ভাবতে পারছেন এই মানুষগুলিকে তথ্য সংগ্রহের জন্য নিয়োগ করা হয়েছে!”
হিংসার মামলায় বিশেষ তদন্তকারী প্যানেলেরও কোনও প্রয়োজন নেই বলে শীর্ষ আদালতের সামনে রাজ্যের তরফে দাবি করেছেন সিব্বল। তাঁর বক্তব্য, ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাগুলির জন্য তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই রয়েছে। এবং অন্যান্য হিংসার ঘটনার জন্য সিট গঠন করা হয়েছে। যা নিয়ে পাল্টা বিচারপতি বিনীত শরণ এবং অনিরুদ্ধ বসুর বেঞ্চ পাল্টা প্রশ্ন করে, “কোনও ব্যক্তির যদি রাজনৈতিক অতীত থাকে এবং তিনি একটি সরকারি জায়গায় এসে বসেন, তাহলেই কি আমাদের ধরে নিতে হবে যে তিনি রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট?”
রাজ্যের তরফে সওয়াল করতে গিয়ে সিবাল প্রথমে প্রশ্ন তোলেন রাজীব জৈনের ভূমিকা নিয়ে। জৈন-বিজেপি ঘনিষ্ঠতার ‘প্রমাণ’ হিসেবে সিবালের যুক্তি, বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পরেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগ আইবির প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন রাজীব৷ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তাঁর চাকরির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও ছ’মাসের এক্সটেনশন দেওয়া হয়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, এই এক্সটেনশনের মধ্যেই ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন মিটে যায়। এই বিষয়টির উল্লেখ গোপালিকার হলফনামাতেও ছিল। লোকসভা ভোট মিটলে ২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে রাজীবকে ‘ডেপুটি ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর’ পদে নিয়োগ করা হয়৷ শুধু তা-ই নয়, সিবাল আদালতে এ-ও জানান, ২০০৫-২০০৮ পর্যন্ত গুজরাটের (তখন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ) গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে আমেদাবাদে কর্মরত ছিলেন রাজীব জৈন৷
টিকা নেওয়ার দু-তিন মাস পর থেকেই কমছে অ্যান্টিবডি, চাঞ্চল্য ICMR-র গবেষণায়
কমিটির আর এক সদস্য আতিফ রশিদ সম্পর্কে রাজ্যের দাবি, তিনি বিজেপির টিকিটে দিল্লি পৌরনিগমের ভোটে লড়েছিলেন, দিল্লি বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি ছিলেন এবং বর্তমানে বিজেপি যুব মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্যও৷ কমিটির তৃতীয় সদস্য রাজুলবেন দেশাই গুজরাটে বিজেপির মহিলা মোর্চার সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেন সিবাল। তিনি ২০১৭ সালে গুজরাটে কেন্দ্রের ‘বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও’ প্রকল্পের প্রধান ছিলেন বলেও দাবি রাজ্যের।
উল্লেখ করা যেতে পারে, এই বিতর্কিত কমিটির সদস্যরা বাংলার বিভিন্ন জায়গা ঘুরে কমিশনের কাছে রিপোর্ট পেশ করেন, যার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছিল কমিশন। তাদের অভিযোগ ছিল, কমিটির সদস্যদের সঙ্গে সহযোগিতা করেনি রাজ্য সরকার।
রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে ৪,৪০০ কোটি টাকা দিচ্ছে কেন্দ্র, জোর গ্রামে
তাঁদের ভালো ভাবে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়নি। এই অভিযোগ খণ্ডন করে শীর্ষ আদালতে আগেই হলফনামা দিয়েছেন গোপালিকা। সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে এ দিন সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে রাজ্য সরকারের দাবি, কমিটির তিন সদস্য ও তাঁদের সহযোগীদের থাকা-খাওয়া বাবদ সরকারের ৭,৯৯,৩৮২ টাকা খরচ হয়েছে। সদস্যদের যাতায়াত ও অন্যান্য সব কিছুর ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য সরকার।