ওয়েব ডেস্ক: প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কোনোরকম একতরফা পরিবর্তন বরদাস্ত করা হবে না। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির বিদেশ মন্ত্রীদের সম্মেলনে ফাঁকেই চিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এমনই কড়া বার্তা দিলেন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শংকর। সীমান্ত সহ একাধিক ইস্যু নিয়ে কথা ভারত-চিনের। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রীর। দুই দেশের সেনা আধিকারিকদের মধ্যে বৈঠক করার ক্ষেত্রে সায় দিয়েছেন তাঁরা দু’জনেই।
বৈঠকের পর টুইটারে জয়শঙ্কর লেখেন, ‘ওয়ের্স্টান সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনায় জোর দেওয়া হয়েছে। চিনকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে আলোচনা ছাড়া প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একতরফা পরিবর্তন কোনোভাবেই করা যাবে না। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুতের ক্ষেত্রে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় সম্পূর্ণ শান্তি ফিরিয়ে আনা দুই দেশের পক্ষেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ জয়শঙ্কর আরও জানান যে, উচ্চপর্যায়ের সামরিক বৈঠকের সময় এগিয়ে আনার বিষয়েও একমত হয়েছে নয়াদিল্লী এবং বেজিং।
প্রসঙ্গত, গত বছর মে’তে পূর্ব লাদাখ সীমান্ত বরাবর ভারত এবং চিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। মুখোমুখি অবতীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি ১৫ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় এবং চিনা সেনার সংঘর্ষ হয়েছিল। তাতে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান মারা গিয়েছিলেন। চিনের তরফে যথারীতি হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সেই সংখ্যাটা ৪৫-এর কম নয়। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্যাংগং লেকের উত্তর এবং দক্ষিণ সীমান্ত থেকে সেনা পিছনে সরিয়ে নেয় ভারত এবং চিন। সেই সঙ্গে প্রথম থেকেই ভারত স্পষ্ট জানিয়ে আসছে, সার্বিকভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য সীমান্ত শান্তি ফেরাতে হবে।
তালিবানিদের থেকে নিস্তার পেতে এখন উপায় কি দিল্লি!
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মস্কোয় এসসিও বৈঠকের সময়েই ভারত ও চিন মুখোমুখি হয়েছিল। আলোচনায় বসেছিলেন দুই বিদেশ মন্ত্রী। সেই সময়ে পাঁচ দফা পরিকল্পনা নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছিলেন তাঁরা। গত বছরের মে মাসে লাদাখে গালোয়ানের সংঘাতের পর যাকে দুই দেশের সেই আলোচনা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সে বারও শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সহমত হয়েছিলেন জয়শঙ্কর ও ওয়াং ই। মস্কোয় ওই বৈঠকের পরে কমান্ডার স্তরে ভারত ও চিনের মধ্যে ১১টি বৈঠক হয়ে গিয়েছে। এখনও সীমান্তের একটা বিস্তীর্ণ অংশে জারি রয়েছে চিনা সেনার আনাগোনা।
করোনার তৃতীয় ঢেউ অবশ্যম্ভাবী! এবার সতর্ক করল কেন্দ্র
যদিও নয়াদিল্লীর সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বেজিং। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ‘বেশ কিছু সময় ধরেই সীমান্ত বরাবর সৈন্য সংখ্যা বাড়াচ্ছে ভারত। উদ্দেশ্য চিনা ভূখণ্ডে জবরদখল করা। সীমান্ত বরাবর উত্তেজনা তৈরি হওয়ার এটাই মূল কারণ।‘ তিনি আরও বলেন, চিনের মতে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সঙ্গে সীমান্তের সমস্যাকে জুড়ে দেওয়া উচিত নয়। দুটি সম্পূর্ণ পৃথক বিষয়।