ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যে প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ঊর্ধ্বমুখী কোভিড আক্রান্তের গ্রাফ। ৪ পৌরনিগমের ভোট নিয়ে বড় পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। পুরভোট পিছানো নিয়ে বিবেচনার নির্দেশ দিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। সেক্ষেত্রে ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পিছিয়ে যেতে পারে পুরভোট। রায় ঘোষণা করে একথা জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কমিশনকে সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে আদালত। পুরভোট ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পিছনো যায় কিনা? সেই বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ হাইকোর্টের।
আদালত এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পুরভোট মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। অর্থাৎ আদালতকে জানানোর আর বিশেষ কিছু প্রয়োজন নেই। গোটি বিষয়টি নিয়ে এবার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। যাবতীয় অর্ডার দেখে কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে মনে করছে আদালত।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মামলা চলাকালীন যে ভাবে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশন একে অপরের কোর্টে বল ঠেলেছে, তাতে স্তম্ভিত আদালত। বৃহস্পতিবারের গোটা শুনানি পর্বে প্রধান বিচারপতির উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ ছিল, আইন তৈরির ২৭ বছরেও কেন স্পষ্ট নয় কে পুরভোট করবে! তবে এদিন আদালতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, নির্বাচন কমিশনকেই বিবেচনা করে দেখতে হবে ৪-৬ সপ্তাহ পুরভোট পিছিয়ে দেওয়া যায় কিনা। তবে সচেতকদের মতে, এরই মাধ্যমে স্পষ্ট হল যে নির্বাচন সংক্রান্ত সর্বোচ্চ ক্ষমতা কমিশনকেই দিতে চায় আদালত।
উল্লেখ্য, গতকাল রাজ্য না কমিশন, কে পুরভোট স্থগিত করার নির্দেশ দিতে পারে? পুরভোট স্থগিত করার ‘ক্ষমতা’ সংক্রান্ত ইস্যুতে আদালতের ‘উষ্মা’র মুখে পড়তে হয় দু’পক্ষকেই। কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন যে, “আইনে বলা আছে, রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনের সাথে আলোচনা করে নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করে। তাই যদি ভোট পিছতে হয়, তাহলে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ভোট পিছিয়ে দিতে পারে না।”
মিলেছে অগ্নি-সুরক্ষা সংক্রান্ত ছাড়পত্র, এবার খুব শীঘ্রই ছুটবে শিয়ালদা থেকে মেট্রো
কমিশন যখন আদালততে একথা জানাচ্ছেন, তখন রাজ্যের তরফে আইনজীবী সম্রাট সেন বলেন, “রাজ্য নির্বাচন কমিশন প্রাথমিকভাবে দিন ঘোষণা করেছে। রাজ্য তাদের মতামত জানায়। যদি ভোট পিছতে হয় তাহলে কমিশনের একমাত্র দায়িত্ব আইন প্রয়োগ করে তারা সেটা করতে পারে।” এই পরিস্থিতি সমাধান সূত্র অধরাই থেকে গিয়েছিল। রায়দান স্থগিত রেখেছিল আদালত।
যার প্রেক্ষিতে আদালত প্রশ্ন ছোঁড়ে যে, “তাহলে কি রাজ্যের ক্ষমতা বেশি?” উত্তরে রাজ্যের আইনজীবী সম্রাট সেন জানান যে,”কমিশন দিনক্ষণ ঠিক করবে। রাজ্য সুপারিশ করতে পারে।” এরপরই আদালতের ‘উষ্মা’-র মুখে পড়ে রাজ্য ও কমিশন উভয়পক্ষ-ই। উষ্মাপ্রকাশ করে আদালত বলে যে, “আপনারা বলছেন রাজ্য সুপারিশ করবে। কিন্তু কমিশন বলছে, রাজ্য দিনক্ষণ ঠিক করবে। এটা আশ্চর্যের যে এই আইন চালুর ২৯ বছর পরে আদালতে রাজ্য এবং কমিশন দু’ধরনের বক্তব্য বলছে।”
TMC-তে যোগ দিলেন প্রাক্তন Congress বিধায়ক ভিক্টর গনসালভেস
এদিনের আদালতের নির্দেশ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আদালত অত্যন্ত সাংবিধানিকভাবে ও সঙ্গতকারণে এই নির্দেশ দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন একটা স্বাধীন সংস্থা। তাকে স্বাধীনভাবে বিচারবিবেচনা করতে হবে। সরকারের মুখাপেক্ষী না হয়ে। আদালত নিজে থেকে স্থগিতাদেশ দেয়নি। আমার মনে হয় আদালত স্বতন্ত্র কোনও প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি। ”