ওয়েব ডেস্ক: জোর করে যদি কারোর বেতন কেটে কোন তহবিলে দান করা হয়, তাহলে তা বেআইনি। ‘অনুদান’ বিষয়টি দাতার ইচ্ছার উপর নির্ভর করে। কলকাতা হাই কোর্টের এহেন পর্যবেক্ষণে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মুখ পুড়ল।
প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, ২০২০ সালের মে মাসে আমফান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সাহায্যে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে প্রত্যেক অধ্যাপকের এক দিনের বেতন দান করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় বিশ্বভারতীর অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন। সেই মামলার শুনানির প্রেক্ষিতেই এই বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
মামলাকারী অধ্যাপকের অভিযোগ, তাঁর ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয়ে কোনও ভাবে জানতে না চেয়েই তাঁর একদিনের বেতন কেটেছে কর্তৃপক্ষ। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে চলা মামলায় হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা পর্যবেক্ষণ দেন, ‘অনুদান বিষয়টা স্বেচ্ছায় হওয়ার কথা। তা সেই ব্যক্তির উপরে নির্ভর করে। তা কখনও জোর করে বেতন থেকে কেটে দেওয়া হতে পারে না। তাই একদিনের বেতন কাটা অনৈতিক।’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘উদ্দেশ্য ভালো হলেও একতরফা ভাবে কখনওই জোর করে বেতন কাটা যায় না। তাছাড়া অনুদানের নামে আইনি অধিকার খর্ব করা উচিত নয়।’
প্রতি দু’মাসে দিল্লি আসার বার্তা দিয়ে সফর শেষে করলেন Mamata
এছাড়াও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি রায়ের বলেছেন, “একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতীর রবিন্দ্র সংস্কৃতি ও কবিগুরুর ঐতিহ্যেরও পরিপন্থী।” যদিও ওই কেটে নেওয়া অর্থ মামলাকারীকে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়নি উচ্চ আদালত। আদালতের যুক্তি, যে হেতু টাকা ত্রাণ তহবিলে জমা পড়ে গিয়েছে, তাই সেখান থেকে তা ফেরত আনা যায় না। ফলে বেআইনি হলেও গ্রহীতা ওই অর্থ ফেরত পাবেন না। যদিও দান- অনুদানের মধ্যে পার্থক্য করতে গিয়ে কিছুটা ধন্দে পড়েন বিচারপতি সিনহা। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, দান এবং অনুদানের মধ্যে কোনটি স্বেচ্ছায় নেওয়া হয়। কিন্তু শেষে দেখা যায় দান এবং অনুদানের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। স্বেচ্ছায় যা দেওয়া হয় তাকেই দান বা অনুদান বলা হয়।
এবার পশ্চিম বঙ্গেও চালু হতে চলেছে ‘এক দেশ এক রেশন কার্ড’, কি কি বদল এলো পদ্ধতিতে?
এদিকে এর আগে জুন মাসের বেতন না পেয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল থানায়। বেতন না পাওয়ার ঘটনায় একাধিকবার কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রককে চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। এর আগে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে ১৫ জুলাইয়ের পর জুন মাসের বেতন দেওয়া হবে। এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।