ওয়েব ডেস্ক: বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর বামফ্রন্টকে সামনে রেখেই এগোতে চায় সিপিএম (CPM)। ১৬টি বাম দলের ঐক্যে জোর দেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবার ফ্রন্টের বৈঠকে সিপিআই, আইএসএফ ও কংগ্রেসের প্রসঙ্গ তুললেও তা সন্তর্পণে এড়িয়ে গিয়েছে আলিমুদ্দিন। বরং বাম-জোট কেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে কেন্দ্র-বিরোধী কর্মসূচি নিয়েই আন্দোলনের পথে যেতে চাইছে তারা। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকার বিরুদ্ধেও বিরোধী শিবির হিসেবে কড়া অবস্থান নিতে চলেছে বামেরা।
আলিমুদ্দিনে মঙ্গলবার বামফ্রন্টের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, পেট্রল-ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি-সহ একাধিক বিষয়ে দেশ জুড়ে কেন্দ্র-বিরোধী যে কর্মসূচি পাঁচ বাম দল নিয়েছে, এ রাজ্যেও একই ভাবে তা পালন করা হবে। কার্যত লকডাউনের মধ্যে কলকাতায় কোনও কেন্দ্রীয় কর্মসূচি না করে জেলা এবং ব্লক স্তরে আগামী ২৪ থেকে ৩০ জুন কর্মসূচি চলবে। বামফ্রন্টের বাইরে অন্যান্য বাম দলকেও সেই কর্মসূচিতে শামিল করার চেষ্টা হবে। সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে প্রস্তাব দেন, লক্ষদ্বীপের প্রশাসকের মতো এ রাজ্যের রাজ্যপালকেও ‘কল ব্যাক’-এর দাবি তোলা হোক বামেদের তরফে। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় এই রাজ্যপালের ভূমিকা একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। তবে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলার আগে তাঁর মতিগতি আরও একটু পর্যবেক্ষণে রাখা ভাল। আপাতত রাজ্যপালের ‘পক্ষপাতমূলক ভূমিকা’র প্রেক্ষিতে সমালোচনামূলক অবস্থান নিয়েই এগোবে বামফ্রন্ট।
ঐশী ঘোষের নামে শোকজ নোটিস JNU এর
জানা গিয়েছে, পেট্রোপণ্য এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলনে পা মেলাবে রাজ্যের বামদলগুলি। এই আন্দোলনে বামফ্রন্টের শরিকদলগুলো তো থাকবেই, তাৎপর্যপূর্ণভাবে থাকবে সিপিআইএমএল ও পিডিএস-এর মত দলগুলিও। প্রসঙ্গত দিল্লিতেও আজ থেকেই আন্দোলন সংগঠিত করছে বামদলগুলি। রাজধানীর বুকে আন্দোলন চলবে আগামী ১৫ দিন।
কি করে বুঝবেন কিডনিতে পাথর জমেছে বা জমতে চলেছে? কীভাবে হবেন বিপদমুক্ত
বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস এবং আইএসএফের সঙ্গে জোট করেও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বামেরা। ভোট পরবর্তী বামফ্রন্টকে মজবুত করেই এগোনোর পক্ষে শরিকরা। শরিক তো বটেই, সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকেও আব্বাস সিদ্দিকীর সঙ্গে জোটের বাস্তবতা নিয়ে উঠেছে ঝড়। তাই দুই ‘ক্র্যাচ’ কংগ্রেস এবং আইএসএফ-কে ছেড়ে বামফ্রন্ট ফের নিজের পায়ে চলুক, প্রকাশ্যেই এই দাবি তুলেছিল বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। সিপিআই নেতারা এ দিনের বৈঠকে বলেন, ফরওয়ার্ড ব্লক যে কথা প্রকাশ্যে এনেছে, তা চলতে থাকলে ফ্রন্টের পক্ষে ভাল হবে না। তাই এই বিতর্কের সমাধান প্রয়োজন। অবস্থান চূড়ান্ত করার কথা বলেন অন্য শরিক নেতৃত্বও। আলোচনায় ঠিক হয়েছে, সিপিএম-সহ ফ্রন্টের শরিকদের দলীয় পর্যালোচনার প্রক্রিয়া আগে সম্পূর্ণ হোক। শুধু ভার্চুয়াল বৈঠকে সব কাজ করা অসুবিধাজনক। কংগ্রেস এখন কোন দিকে এগোবে, তা-ও দেখা প্রয়োজন। তার পরে আলোচনার ভিত্তিতে বামফ্রন্টের অবস্থান ঠিক করা যাবে। প্রসঙ্গত, সিপিএমের পরবর্তী রাজ্য কমিটির বৈঠক রয়েছে ১৯-২০ জুন। কার্যত লকডাউন পরিস্থিতিতে ওই বৈঠকও হবে ভার্চুয়াল।
এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে চলেছে বামেরা
সিপিএমের বৈঠকে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছিলেন,”কাউকেই জোট থেকে বেরিয়ে যেতে বলব না। কিন্তু কেউ যদি চান তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।” সূত্রের খবর, শরিকি ও দলের অন্দরের চাপে আপাতত বিষয়টি নিয়ে ধীরে চলো নীতিতে হাঁটতে চাইছে সিপিএম। শরিকদের সঙ্গে বৈঠকে আইএসএফ ও কংগ্রেসকে নিয়ে বিতর্ক এড়িয়ে গিয়েছেন নেতারা। তড়িঘড়ি ১৬টি বাম দলের বৈঠক ডাকতে চলেছে আলিমুদ্দিন। ঐক্যবদ্ধ বামফ্রন্টের চেহারা তুলে ধরতে চাইছেন নেতারা।