ওয়েব ডেস্ক: প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে আবারও বোমাতঙ্ক রাজধানীতে। পূর্ব দিল্লির ত্রিলোকপুরীতে দুই বেওয়ারিশ ব্যাগকে ঘিরে ছড়াল বোমার আতঙ্ক। সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে জঙ্গি হামলার গোয়েন্দা সতর্কতা মাথায় রেখে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয় দিল্লি পুলিশ। মুহূর্তে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এনএসজি। পুরো জায়গাটি ঘিরে ফেলে তারা। তৎক্ষণাৎ বম্ব স্কোয়াড পৌঁছে পরীক্ষা করে ব্যাগ দুটি। যদিও ব্যাগ থেকে সন্দেহজনক কিছু মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন দুপুরে ত্রিলোকপুরী অঞ্চল থেকে দিল্লি পুলিশের কাছে একটি ফোন আসে। ফোনে স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, রাস্তার ধারে বহুক্ষণ ধরে দুটি বেওয়ারিশ ব্যাগ পড়ে রয়েছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান আধিকারিকরা। রাজধানীর ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) Priyanka Kashyap জানিয়েছেন, ব্যাগ দুটি থেকে ল্যাপটপ, চার্জার এবং জলের বোতল পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও ব্যাগের মধ্যে প্রচুর খাবারও ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে কে কারা কি উদ্দেশে ওই ব্যাগ দুটি ওখানে রেখেছিল তা খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকরা।
জানা গিয়েছে, এদিন দুপুর ১ টা নাগাদ দিল্লির ত্রিলোকপুরী মেট্রো স্টেশনের কাছে এই ব্যাগ দুটি পড়ে থাকতে দেখেন এক পথচারী। সঙ্গে সঙ্গে তিনি খবর দেন পুলিশকে। মুহূর্তে ডাক পড়ে এনএসজির। দিল্লি পুলিশ জানিয়ে দেয়, এই ব্যাগ নিয়ে তারা কোনও ঝুঁকি নেবে না। যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করে এনএসজি। সঙ্গে আসে দমকলও। উল্লেখ্য, দিল্লির বুকে বিস্ফোরকের পর ব্যাগ উদ্ধার ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, সামেনই ২৬ জানুয়ারি। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে, কার্যত দিল্লি জুড়ে রয়েছে সাজা সাজো রব। এই দিনের বিশেষ অনুষ্ঠান ঘিরে দিল্লির রাজপথে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। এমন এক অবস্থায় গাজীপুরের ঘটনার পর পূর্ব দিল্লির ত্রোলকপুরীতে এমন ব্যাগ উদ্ধারের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এনএসজি। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক এক গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, নরেন্দ্র মোদীকে টার্গেট করে সন্ত্রাসবাদী শিবির হামলার ছক কষে চলেছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে এই রিপোর্ট হাতে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে দিল্লি। গোটা রাজধানী জুড়ে রয়েছে অ্যালার্ট। তবে তারই মাঝে এই নতুন করে ব্যাগ উদ্ধার আরও কোনও সাংকেতিক দিককে নির্দেশ করছে কি না, তা নিয়ে রয়েছে জল্পনা।
সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে বাংলার ট্যাবলো বাতিলের কারণ জানিয়ে মমতাকে চিঠি রাজনাথের
এদিকে, গত ১৪ জানুয়ারি রাজধানীর গাজীপুরে একটি ফুলের দোকানের সামনে পরিত্যক্ত ব্যাগ ঘিরে আতঙ্ক ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বম্ব স্কোয়াড। ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় IED। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নিস্ক্রিয় করা হয় সেটি। গোয়েন্দাদের অনুমান, সবথেকে বেশি ক্ষতির লক্ষ্যে বাজারে ভিড় যে সময় বেশি থাকে সেসময়ই বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল পাক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন । কিন্তু, পুলিশি তৎপরতায় তা ব্যর্থ হয়। এর আগে শুধু পঞ্জাব নয়, দিল্লি এবং গুজরাট থেকেও বাজেয়াপ্ত হয়েছে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক।
ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ আইএনএস রণভীরে বিস্ফোরণ, ৩ নৌসেনা কর্মী শহীদ, বহু আহত
ড্রোন ব্যবহার করেও এই হামলা করা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী লস্কর-ই-তৈবা, দ্য রেজিস্ট্যান্স ফোর্স, জইশ-ই-মোহাম্মদ, হরকাত-উল-মুজাহিদিন এবং হিজবুল-মুজাহিদ্দিন-এর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলি এই ছক কষার নেপথ্যে থাকতে পারে। গত কয়েকমাসে পঞ্জাব থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিস্ফোরক। পঞ্জাব পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ২০ IED, ৫-৬ কেজি বিস্ফোরক, ১০০টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে।