নয়াদিল্লী: যোগব্যায়াম গুরু বাবা RAMDEV-প্রচারিত পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ কর্তৃক COVID-19 এর বিরুদ্ধে অনাক্রম্যতা বাড়ানোর দাবিদার ওষুধ করোনিল শংসাপত্রের দাবি নিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছে।
১৯ শে ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যেখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকরি উপস্থিত ছিলেন, সেখানে পতঞ্জলির তৈরি পণ্যকে “COVID-19 এর প্রথম প্রমাণ ভিত্তিক ওষুধ” হিসাবে ছাড়পত্র দিয়েছিল।
রামদেব এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যে টেবিলে বসেছিলেন, তার একটি বড় পোস্টারে লেখা ছিল যে “মেডিসিন” CoPP এবং WHO GMP কর্তৃক অনুমোদিত – এর অর্থ এটি একটি ওষুধ পণ্য (CoPP) এর একটি শংসাপত্র রয়েছে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার WHO দ্বারা স্বীকৃত লাভ করেছে।
রামদেবের এই ঘোষণায় শোরগোল পড়ে যায় চারিদিকে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে করোনিলের গুণাগুণ বোঝাতে শুরু করেন RAMDEV। BJP এর জাতীয় মুখপাত্র সঞ্জু বর্মা টুইটারে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন পতঞ্জলিকে। তিনি লেখেন, ‘‘ডিজিসিআই এবং WHO-র ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছে পতঞ্জলির করোনিল। এতেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের অধীনে আয়ুর্বেদিক ওষুধ এবং আত্মনির্ভর ভারতের সাফল্য প্রমাণিত হয়’।
কিন্তু এই শোরগোলের মধ্যেই WHO-র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের টুইটার হ্যান্ডলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, যে তারা COVID-19 এর চিকিৎসা বা প্রতিরোধের জন্য কোনও ঐতিহ্যবাহী ঔষধ পর্যালোচনা বা শংসাপত্রিত দ্যায় নি। দেয়নি তারা। WHO-র একটি দল এসে তাঁদের কাজকর্ম খতিয়ে দেখে গিয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন RAMDEV। কিন্তু WHO-র টুইটার হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘কোভিড চিকিৎসার জন্য কোনও চিরাচরিত ওষুধের গুণমান না বিচার করে দেখেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, না তার কার্যকারিতা নিশ্চিত করে ছাড়পত্র দিয়েছে’।
শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় পতঞ্জলি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, “WHO শংসাপত্রের স্কিম অনুসারে কেন্দ্রীয় ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের আয়ুশ বিভাগ থেকে ফার্মাসিউটিক্যাল প্রোডাক্ট (CoPP) পেয়েছে করোনিল।”
পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের শীর্ষ আধিকারিকদের একজন রাকেশ মিত্তাল এই করেছেন যে করোনিলকে “WHO দ্বারা স্বীকৃত” করা হয়েছে। মিঃ মিত্তাল টুইট করেছিলেন, “পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের ক্ষেত্রে ইতিহাস তৈরি করেছেন কারণ করোনিল করোনার প্রথম প্রমাণ ভিত্তিক মেডিসিন হিসাবে WHO দ্বারা স্বীকৃতি পেয়েছেন।” পরে তিনি টুইট মুছে ফেলেছেন।
আরও পড়ুন : আজ থেকে WEST BENGAL Govt পেট্রোল ও ডিজেলে ট্যাক্স হ্রাস করল ১ টাকা
যদিও সরাসরি RAMDEV বা পতঞ্জলির নাম উল্লেখ করেনি WHO। কিন্তু তার পরই সাত তাড়াতাড়ি পতঞ্জলি কর্ণধার আচার্য বালকৃষ্ণ নিজের টুইটার হ্যান্ডলে লেখেন, ‘বিভ্রান্তি এড়াতে একটা কথা স্পষ্ট করে জানাতে চাই যে করোনিলকে সিওপিপি এবং জিএমপি শংসাপত্র ভারত সরকারের ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল(ডিসিজিআই)দিয়েছে। বিশ্বের সমস্ত নাগরিকের সুস্থ ভবিষ্যতের জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছে WHO’।
তবে এই গোটা ঘটনায় কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। ২০২০ সালের জুলাইয়ে, ভ্যাকসিনগুলি চূড়ান্ত পরীক্ষাগুলিতে পৌঁছতে না পেরে এবং দেশ জুড়ে লকডাউন ব্যবস্থায়, পাতঞ্জলি আয়ুর্বেদ দাবি করেছিলেন যে করোনিল করোন ভাইরাস থেকে শক্তিশালী সুরক্ষা দিতে পারে। পরে, আয়ুষ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছিল যে করোনিলকে কেবল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা-বৃদ্ধির হিসাবে বিক্রি করা যেতে পারে, নিরাময় হিসাবে নয়।