ওয়েব ডেস্ক: ২০২১ বিধানসভা ভোট, একজন বিধায়কও নেই বামেদের। কংগ্রেস, আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট করে উল্টে নিজেদের ভোটই তলানিতে নেমেছে বামফ্রন্টের। আর বিজেপিকে রুখে দিয়ে তৃতীয় বারের জন্য বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সূত্রেই গোটা দেশে এখন বিজেপি বিরোধী প্রধান মুখ হয়ে উঠেছেন তিনি। এমনি এক পরিস্থিতি তে কেন্দ্র সরকারের এক সিদ্ধান্তের বিরোধিতাতে এবার এক মঞ্চে থাকতে পারেন সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল নেতৃত্ব।
ঘটনা টি হল, বরাহনগরের কাছে বনহুগলিতে রয়েছে প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা ও গবেষণার জন্য কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর লোকাল লোকোমোটর ডিসএবিলিটিস (NILDD (পূর্বতন NIOH))। সম্প্রতি ওই প্রতিষ্ঠানটিকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা প্রকাশ্যে এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক মঞ্চে থাকতে পারেন বিজেপি-বিরোধী তিন রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা। বনহুগলিতে ওই প্রতিষ্ঠানের সামনে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী ও অন্যান্য সংগঠনের ডাকে এক প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। সেই কর্মসূচিতেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার-বিরোধী তিন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বকে।
রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সর্বময় কর্তা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বাম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। আর কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় এবারও রায়দিঘি থেকে ভোটে হেরে গিয়েছেন। তারপরই বামেদের সমালোচনা করেন তিনি। প্রশংসা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কান্তিরই কর্মসূচিতে এবার তৃণমূল-বাম এক মঞ্চে।
কলকাতা পুলিশের জালে এবার ভুয়ো পুলিশ, গ্রেফতার গার্ডেন-রিচ থেকে
প্রসঙ্গত, এর আগেই বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছিলেন, ‘জাতিও রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী যে যে থাকবে, তাঁদের সকলের সঙ্গেই বামেরা কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।’ রাজনৈতিক মহলের মতে, এতদিন সন্দিহান থাকলেও ২০২৪-এ তৃণমূল, সিপিএম হাত ধরাধরি করে চললেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। সেই প্রক্রিয়ার সলতে পাকানোর কাজ ৩ সেপ্টেম্বর থেকেই শুরু হয় কিনা, সেটাই এখন দেখার।
ওই প্রতিবাদ সভায় শামিল হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রাক্তন সাংসদ তথা সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীকে। আমন্ত্রণ-পত্র গিয়েছে প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের কাছে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়কে। রাজ্য রাজনীতিতে তৃণমূলের বিরোধী হলেও এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে তৃণমূলের সঙ্গে এক মঞ্চে থাকতে আপত্তি নেই সুজন-মান্নানদের। বুধবার সুজন বাবু বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধীদের ওই প্রতিষ্ঠানটি রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা সরব হব। ওই প্রতিবাদ মঞ্চে কে এল বা না এল দেখলে চলবে না। সবার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতেই আমরা কথা বলব।’’
ভোটকুশলি নয়, এবার কি কংগ্রেসে যোগ দেবেন পিকে? সনিয়ার সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে সবাই
ওই সভায় আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস। তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে ওই প্রতিবাদ সভায় থাকার আমন্ত্রণ এসেছে। কিন্তু এখনও যাব কিনা ঠিক করিনি। তবে ওই সংগঠন যে দাবি প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে, তাতে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’’
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ওই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হবে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনকেও।
