ওয়েব ডেস্ক: গ্যাস-অম্বল(Acidity) বর্তমান দিনে খুব সাধারণ সমস্যা এবং দিনের যে কোনও সময় (বা রাতে) ঘটতে পারে। আপনি মশলা বা তেল বোঝাই কিছু খেলেন পরক্ষনেই আপনার পেটে বুকে জ্বলুনি ভাব শুরু হল। আপনি যদি এই ধরনের সমস্যাই ভোগেন তাহলে আপনার খাদ্য তালিকার পরিবর্তন করুন। যেমন অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যাফিন গ্রহণ, চিনি গ্রহণ এবং কম জল পান করার ফলেও কিন্তু আপনাকে অ্যাসিডিটির শিকার হতে পারেন। আপনার প্রতিদিনের অভ্যাস এই সমস্তগুলির মধ্যে শরীরের প্রাকৃতিক পিএইচ স্তরগুলিকে বিঘ্নিত করার এবং পেটের অ্যাসিডগুলিকে অতিরিক্ত পরিমাণে প্রবাহিত করারে।
Acidity-র জন্য একটানা ওষুধ খেয়ে গেলে যে শরীরে অন্য কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, সেইসব কথা না ভেবে দিনের পরদিন ওষুধ খেয়ে যান। তবে কথায় কথায় গ্যাস অম্বলের সমস্যা আর মুঠো মুঠো নিজের মতে ওষুধ খেয়ে তার সমাধান মোটেই ভালো অভ্যাস নয়। রোজকার জীবনধারায় সামান্য পরিবর্তন এবং খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার সংযোজন করলেই নিত্যদিনের এই সমস্যা থেকে স্বস্তি পেতে পারেন। শুধু তাই নয়, সামান্য কিছু নিয়মবিধি মেনে চললে কয়েকদিনের মধ্যেই Acidity-থেকে পাবেন চিরবিদায়।
Acidity কেন হই ?
পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক গ্লান্ডে অতিরিক্ত অ্যাসিড নিঃসরণের ফলে Acidity বা গ্যাসের সমস্যা হয়। সাধারণত অনেকক্ষণ খালি পেটে থাকলে, অতিরিক্ত চা,কফি খেলে বা অতিরিক্ত মদ্যপান, ধূমপান, দুশ্চিন্তা, অনিদ্রা ইত্যাদি কারণে পেটে গ্যাস হতে পারে। Acidity-র কারণেই পেট ফুলে ওঠে, ঢেকুর ওঠে, বুক জ্বালা করে ও পেটের অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয়।
অতিরিক্ত জলপান স্বাস্থ্যের পক্ষে খারাপ, যেনে নিন আপনার শরীরে সঠিক জলের পরিমাণ
আমরা কিছু কিছু বিষয়ের ওপর নজর দিলেই Acidity থেকে অনেক অংশে মুক্তি পেতে পারি, সে গুলি কি কি যেনে নিন :
- খুব বেশি খাওয়াবেন না সাইট্রাস ফল থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।
- অ্যাসিডিটি থাকলে দীর্ঘ সময় ক্ষুধার্ত থাকবেন না।
- খাবার কখনই এড়িয়ে যাবেন না, বিশেষত মধ্যাহ্নভোজন।
- অসময়ে এবং অনিয়মিত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন।
- রাতের খাবার খেয়ে ফেলুন সময়মতো।
- অতিরিক্ত পরিমাণে রসুন, নুন, তেল, মরিচ ইত্যাদি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
- সবচেয়ে ভালো সমাধান হ’ল নন-ভেজিও এড়ানো।
- খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়বেন না।
- ধূমপান, অ্যালকোহল, চা, কফি এবং অ্যাসপিরিনের মতো ওষুধ এড়িয়ে চলুন।
- নিজেকে স্ট্রেস থেকে রক্ষা করুন, বেশি টেনশন নেওয়া স্বাস্থ্যের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।
মুখে ও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ সকলের সামনে কথা বলতে লজ্জা ? যেনে নিন কিছু ঘরোয়া সমাধান
এছাড়াও যদি কারো অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে তাহলে কিছু আয়ুর্বেদিক ঔষধির মাধ্যমে এর নিরাময় করা সম্ভব,
- আপনার ডায়েটে এই ফলগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। এর মধ্যে রয়েছে মিষ্টি ডালিম, কলা, স্টিউড আপেল, বরই, কিসমিস, এপ্রিকট, নারকেল বা স্থানীয়ভাবে যে কোনও ফল পাওয়া যায়।
- দারুচিনিতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। আধ চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো এক কাপ জলে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। এরপর ঠাণ্ডা করে পান করুন। প্রতিদিন এভাবে তিনবার দারুচিনি মিশ্রিত জল পান করলেই আরাম পাবেন।
- পুদিনা পাতা অ্যাসিড নিঃসরণের গতি কমায় এবং হজম ক্ষমতা বাড়ায়। এই পাতার একটি শীতলীকরণ প্রভাবও আছে যা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সঙ্গে গলা, বুক জ্বালা কমায়। কয়েকটি পুদিনা পাতা একটি পাত্রের জলে নিয়ে ফুটিয়ে সেই জল ছেঁকে ঠাণ্ডা করে পান করলে উপকার।
- তাৎক্ষণিক ভাবে অ্যাসিড কমিয়ে স্বস্তি দিতে পারে মৌরি। খাওয়ার পর মৌরি চিবিয়ে খেলে এই উপকার পাওয়া যায়। বদহজম এবং পেট ফাঁপার চিকিৎসায়ও এটি বেশ কার্যকর। এক গ্লাস জলে কয়েকটি মৌরি সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে তা পান করলে শরীর ঠাণ্ডা থাকবে এবং গ্যাস অম্বলের সম্ভাবনাও কমবে।
- টক দইয়ে থাকা ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে অ্যাসিড জমা হওয়া প্রতিরোধ করে। এর সঙ্গে গোলমরিচ যোগ করলে আরও ভালো ফল পাওয়া যাবে। টক দইয়ের ল্যাকটিক অ্যাসিড হজম প্রক্রিয়াকেও শক্তিশালী করে।