ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বামেদের পর এ বার সরব কংগ্রেস। বিধানসভা ভোটের পর শনিবার প্রথমবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেখানেই রাজ্যপালের ভূমিকা প্রসঙ্গে সমালোচনার সুর শোনা গেল তার গলাই।
তিনি বলেন প্রথম থেকেই জোটে আইএসএফ-এর অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে মতবিরোধ ছিল৷ আইএসএফ-কে আসন ছাড়া নিয়েও আপত্তি ছিল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের৷ ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, বাম-কংগ্রেসের প্রাপ্তির ঝুলি শূন্য৷ একটি মাত্র আসনে জয়ী হয়েছে আইএসএফ৷ এবার ভোটে বিপর্যয়ের জন্য সরাসরি আইএসএফ-কেই দায়ী করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী৷ এক ধাপ এগিয়ে অধীরের দাবি, আইএসএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের কোনও জোটই হয়নি৷ কংগ্রেস জোট করেছিল সিপিএমের সঙ্গে৷ শুধু তাই নয়, আইএসএফ-এর অন্তর্ভুক্তিতে বাম- কংগ্রেস জোট বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছিল বলেও দাবি করেছেন অধীর৷
রাজ্যে পরবর্তী নির্বাচন বলতে পুরসভা ভোট। দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকা এই ভোট হলেও কি জোট বেঁধে লড়বে বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ? এই প্রশ্নের জবাবে অধীর বাবু বলেন, “আমরা বামেদের সঙ্গে জোট করেছিলাম। সেই জোট এখনও ভাঙেনি। আগামী দিনে পুরসভায় জোট থাকবে কি না সেই প্রশ্ন এখনই আসছে না।” তবে জোটে আইএসএফ চলে আসায় যে সমস্যা হয়েছিল, তা এ দিন স্বীকার করে নেন তিনি। সংযুক্ত মোর্চার ভবিষ্যৎ কি হবে, সেই বিসয়েও ধোঁয়াশা জিইয়ে রেখেই তিনি বলেন, “আমরা এখনও জোটে আছি বা নেই, সেটা বলার মতো অবস্থায় আমি নেই।”
আরও পড়ুন: তৃণমূলকে কি ‘আন্ডার এস্টিমেট’ করলেন নেতারা? সীতারামের প্রশ্ন রাজ্য নেতৃত্ব কে
নির্বাচনী ফলাফলের পর্যালোচনার পর কংগ্রেসের ব্যর্থতা এবং তৃণমূলের জয়ের নেপথ্যে থাকা কারণগুলিও তুলে ধরেন তিনি। অধীর বাবুর কথায়, “বিজেপি এসে তৃণমূলের আবর্জনাগুলো নিলো, তাতে দিদি মুক্ত হলেন।” তিনি আরও বলেন, “কংগ্রেস মুসলিম অধ্যুষিত জেলায় ভাল করেছে। কিন্তু, বিজেপি যেভাবে এনআরসি নিয়ে প্রচার করেছে, শীতলকুচির ঘটনা ঘটেছে, মুসলিমরা বিজেপিকে ঠেকাতে দিদিকে ভোট দিয়েছিল। মেরুকরণের ভোটের জন্যই আমরা গর্তে ঢুকে গেলাম।”
প্রসঙ্গত, দিল্লিতে থাকাকালীন কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর বাড়িতেও গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সেই বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “রাজ্যপাল আমার বাড়িতে আসার জন্য ফোন করেছিলেন। এরপরেও রাজ্যপাল যদি আমায় বলেন আবার দেখা করবেন, আমি স্বাগত বলব।” যদিও তিনি যে রাজ্যপালের একরোখা অবস্থানের সমর্থনে নেই, সেটাও সাফ দেন অধীর। বলেন, “রাজ্যপালের মতকে আমরা সমর্থন করি না। আমরা অনেক আগেই সমালোচনা করেছি। তৃণমূলের আগে। তৃণমূল রাজ্যপালকে সরানোর কথা বলছেন। কিন্তু সাংবিধানিক কায়দায় প্রতিবাদ করা হচ্ছে না।”
