ওয়েব ডেস্ক: বিধানসভা নির্বাচনে দলের একটাও আসন না পাওয়ার পিছনে সম্ভাব্য কারণগুলি অনুসন্ধান করতে সিপিএম আজ জরুরি অবস্থাই রাজ্য কমিটির বৈঠক ডাকে। প্রকাশ কারাত এবং সীতারাম ইয়েচুরির মতো পার্টির প্রবীণ নেতারা নয়াদিল্লি থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে এই বৈঠকের অংশ অংশ নেন।
রাজনীতির ময়দানে ঘুরে দাঁড়াতে পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকিকে হাতিয়ার করতে চেয়েছিল সিপিএম। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানো তো দূর, বিধানসভায় শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে বামেদের। একদিকে যখন হারের কারণ বিশ্লেষণ করতে মরিয়া বাম নেতৃত্ব, তখন দলের মধ্যেই মাথাচাড়া দিচ্ছে অসন্তোষ। এ বার রাজ্য নেতৃত্বকে নিশানা করলেন খোদ সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। রাজনৈতিক ছবিটা বুঝতে ভুল হল কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। অন্যদিকে, আইএসএফের সঙ্গে জোট করাটাই ভুল ছিল বলে মনে করছে দলীয় নেতৃত্বেরই একাংশ। জেলা নেতৃত্ব এই বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ধর্মনিরেপক্ষতা ও সাম্যবাদ নিয়ে সওয়াল করতে আব্বাসকে সিপিএম চিত্রনাট্য লিখে দিয়েছিল, এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে।
এ দিনের বৈঠকে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, সিপিএম বিজেপিকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে গিয়ে তৃণমূলকে ‘আন্ডার এস্টিমেট’ করেছে। ‘কেন বোঝা গেল না এ রাজ্যের রাজনীতি প্রকৃত চিত্র? তা বুঝতে কোথাও কি সমস্যা হয়েছে নেতাদের?’ সে প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
বিজেপির কটাক্ষের বিরুদ্ধে সমুচিত জবাব দিলেন কেরলের কনিষ্ঠতম CPIM মেয়র!
নির্বাচনের পরে রাষ্ট্রীয় স্তরের প্রথম বৈঠক ২৯ শে মে ডাকা হয়েছিল। সেই বৈঠকে দলটির একাধিক সদস্য আলিমুদ্দিনের নেতৃত্বকে হতাশার জন্য দায়ী করেছিলেন। ফুরফুরা শরীফ পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির নেতৃত্বে অল্প পরিচিত দল আইএসএফ (ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট) এর সাথে জোট গঠনের সিপিএমের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। সিদ্দিকের দল নিয়ে জোট বেঁধে সংগঠনের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, বেশিরভাগ নেতারা তা উল্লেখ করেছিলেন।
শনি ও রবিবার রাজ্য কমিটির বৈঠক চলছে আলিমুদ্দিনে। ভার্চুয়ালি হচ্ছে এই বৈঠক হচ্ছে। আর সেই বৈঠকে আইএসএফের সঙ্গে জোট ভুল ছিল বলে অভিযোগ তুলেছে হাওড়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ বেশ কয়েকটি জেলা কমিটি একাংশ। মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলাগুলো এই তালিকায় রয়েছে। ওই সব জেলার নেতাদের দাবি, নিচু তলার কর্মীদের পাশে নেই রাজ্য নেতৃত্ব। যা নিয়ে ক্ষোভ জেলা কমিটিগুলোতে। তাঁদের অভিযোগ, নির্বাচনের পর শাসক দলের হাতে প্রহৃত হয়েছেন বহু দলীয় কর্মী। রাজ্য নেতৃত্ব এই সব ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হলেও পাশে দাঁড়াচ্ছেন না।
তৃতীয় তরঙ্গ “অনিবার্য, ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে ভারতকে আঘাত করতে পারে”: AIIMS চিফ
অন্যান্য ইস্যুগুলির মধ্যে সিপিএম দীর্ঘকাল ধরে তার বামফ্রন্টের পূর্ব মিত্রদের বিরোধিতার মুখোমুখি ছিল। কিছু দিন আগে ফরোয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন চ্যাটার্জি কংগ্রেস এবং আইএসএফকে সিপিএমের ‘ক্রাচ’ বলে অভিহিত করে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন।
এই মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত বামফ্রন্টের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে ফ্রন্টের সমস্ত দলই কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামবে। দলগুলি তৃণমূলের অপ্রয়োজনীয় সমালোচনা থেকে বিরত থাকবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।