ওয়েব ডেস্ক: একুশের নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি হয়েছে। একটি আসনও তারা পায়নি। এটা Adhir Ranjan Chowdhury এর অতিরিক্ত তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধিতার ফল বলে মন্তব্য করেছিলেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান কেন্দ্রীয় নেতা বীরাপ্পা মইলি। নির্বাচনে ভরাডুবির পর রাজ্যে আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট এবং দলকে পরিচালনা করা নিয়ে কংগ্রেসের প্রদেশ Adhir Ranjan Chowdhury বিরুদ্ধে অনেক প্রশ্ন উঠেছিল। নির্বাচন চলাকালীনও কেন্দ্রীয় কংগ্রেস নেতারা অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে একের পর এক মন্তব্য করেছিলেন। এমনকী এখন অধীররঞ্জন চৌধুরীকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি জমা পড়েছে দিল্লিতে। এই প্রবল চাপের মধ্যেই একেবারে অন্যরকম সুর শোনা গেল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গলায়। উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিয়ে সম্মান জানানোর কথা বললেন তিনি। যা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে নতুন কোনও সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেস জিতলেও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়ী হতে পারেননি। আর ওনাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বহাল থাকতে হলে আগামী ৫ মাসের মধ্যে কোনও একটি কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জয়ী হয়ে আসতে হবে। ইতিমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য একটি আসন বেছে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের চিরাচরিত আসন ভবানীপুর থেকেই লড়তে চলেছেন। আর এরজন্য ওই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফাও দিয়ে দিয়েছেন।
টিকার শংসাপত্র নিয়ে এবার টানাটানি, রাজ্যের টিকার শংসাপত্রে থাকছে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি
যদিও, উপনির্বাচন কবে হবে সেটা এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ঘোষণা করে দিয়েছেন যে, এবার ভবানীপুরের উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবেনা কংগ্রেস। অধীর চৌধুরীর এই মন্তব্যে রাজ্য রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও, অধীরবাবু জানিয়েছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যে আসতে চলেছে Sputnik V, টিকা মিলবে আগামী সোমবার থেকে
রাজ্য রাজনীতিতে প্রবল মমতা বিরোধী হিসেবে পরিচিত অধীর রাজ্যের আসন্ন উপনির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে কোনও প্রার্থী দিতে চান না। ওই কেন্দ্র থেকে শাসকদলের তরফে লড়াই করবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অধীরের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছে। আর মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রার্থী হচ্ছেন। ওই কেন্দ্রে কংগ্রেসের জয়ের তেমন সম্ভাবনাও নেই। তাই মমতার সম্মানেই কংগ্রেস ভবানীপুরে প্রার্থী দিতে চায় না। অধীরবাবু এআইসিসির নেতাদের জানিয়েছেন,”মুখ্যমন্ত্রী নিজে ভোটে দাঁড়িয়েছেন। এই অবস্থায় আমরা যা ভোট পাই না কেন, আমার মনে হয় আমাদের প্রার্থী দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।” যদিও, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এআইসিসি। আর এআইসিসির তরফে এখনও এ নিয়ে কিছু বলা হয়নি।
রেশন কার্ডের সঙ্গে Aadhaar সংযুক্ত থাকলেই আঙুলের ছাপ দিয়ে তোলা যাবে রেশন
কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে অধীরের হঠাৎ মমতার প্রতি এত ‘সম্মান’ কেন? ভোটের আগে তো তিনিই মুখ্যমন্ত্রীকে সবরকমভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছিলেন? অনেকে মনে করছেন, এর পিছনে রয়েছে এআইসিসি নেতাদের চাপ। আসলে বাংলায় বিজেপি কে প্রতিহত করে মমতা যেভাবে বিজেপিকে রুখে দিয়েছে, তাতে জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর গুরুত্ব এবং কদর দুটিই বেড়েছে। দিল্লির কংগ্রেস নেতারা চাইছেন, কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মমতাকে কাছে পেতে। তাছাড়া, বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের আগেই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে অধীরের প্রবল মমতা বিরোধী অবস্থান পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ২৪-এ অধীরবাবুর নিজের লোকসভা কেন্দ্রটি বাঁচানোই চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়াবে। সম্ভবত সেকারণেই বহরমপুরের সাংসদ মমতার উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়ে রাখতে চাইছেন। তাছাড়া, ইদানিং মমতার প্রতি একাধিক ইস্যুতেই একটু নরম হতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। রাজনৈতিক কারবারিদের প্রশ্ন, তাহলে কি আগামী লোকসভায় নতুন কোনও সমীকরণ অপেক্ষা করে আছে? অধীরবাবু অবশ্য বলছেন, “তেমন কোনও ব্যাপার নয়। এটা কোনও নির্বাচনী আঁতাত নয়। প্রতীকী একটা সিদ্ধান্ত হতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিলেও অন্য আসনগুলিতে আমরা লড়ব।’’
Google, Whatsapp, Facebook, Twitter এ কিভাবে কমপ্লেন জানাবেন আসুন দেখে নেওয়া যাক
তাহলে কি ২০২৪ সালে নয়া সমীকরণ তৈরি হচ্ছে? কংগ্রেসের একাংশ মনে করছে, দিল্লির কংগ্রেস নেতারা চাইছেন কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মমতার সঙ্গে হাত মেলাতে। আবার বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে প্রমাণ করেছে অধীরের প্রবল মমতা বিরোধী অবস্থান পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনেও ভরাডুবি হবে। তাই মমতার উদ্দেশে একটি বার্তা দিয়ে রাখতে চাইছেন কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব বলে মনে করা হচ্ছে।