ওয়েব ডেস্ক: অতিমারির শুরু থেকে রেড ভলান্টিয়ার্স মানুষের কাছে একটি পরিচিত নাম। অতিমারির সময়ে কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন সিপিএমের ছাত্র-যুবদের নিয়ে গড়া এই সংগঠনের সদস্যেরা। কখনো তারা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঢুকে গিয়েছেন করোনা সংক্রমিতের ঘরে আবার কখনো করোনা রোগি কে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে হাসপাতাল নিয়ে গিয়েছেন। কখনো করোনা মৃত দেহ সৎকার করতে এগিয়ে এসেছে কখনো তো কখনো সংক্রমিতের বাড়ি খাবার এবং ওষুধ পৌঁছে দিয়েছেন। আক্রান্ত বিজেপি বা তৃণমূল যে দলেরই হক না কেন, কখনো রাজনৈতিক রং দেখেননি তাঁরা। তাদের এই কাজের জন্য রাজ্য বাসির কাছে অনেক প্রশংসা আদাই করেছে তারা।
এইবার সেই ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’ দেরই সাংগঠনিক রূপ দেওয়া হচ্ছে। একেবারে বুথ স্তর পর্যন্ত তৈরি হবে এই বাহিনী। শুধু অতিমারির সময়েই নয়, তার পরেও স্থায়ী ভাবে সারা বছর ধরে সমাজসেবামূলক কাজ চালিয়ে যাবে রেড ভলান্টিয়ার্স সংগঠন। তাদের জনপ্রিয়তাকে এবার জনসংযোগের কাজে লাগাতে চলেছে সিপিএম। তাদের মতে, ছাত্র-যুবদের এই কাজে মানুষের মনে দাগ কাটতে পেরেছে। সেটাকেই তারা স্থায়ী রূপ দিতে চাইছে। সিপিএমের দাবি, তারা রেড ভলান্টিয়ার্সের উপরে সরাসরি কোনও নিয়ন্ত্রণ রাখবে না। সহযোগী ও পরামর্শদাতার ভূমিকা পালন করবে।
ত্রিপুরায় বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করছে একমাত্র বামেরা, বললেন CPIM নেতা অশোকে ভট্টাচার্য
দলের এক জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুমিত বিশ্বাসকে কো-অর্ডিনেটর করে একটি দল গঠন করা হয়েছে। তাতে প্রাক্তন ছাত্রনেতা কৌশিক দত্তকেও রাখা হয়েছে। এছাড়াও এই দলে আছেন ডিওয়াইএফ ও এসএফআই-এর জেলা সভাপতি ও সম্পাদকেরা। এঁরাই রেড ভলান্টিয়ার্সের কার্যকলাপ তদারকি করার পাশাপাশি সাংগঠনিক বিষয়টি দেখেছেন। বর্তমানে নদীয়ার ৩০টি এরিয়া কমিটিতেই সংগঠনের ‘টিম’ রয়েছে। সেগুলিতে বর্তমানে ৯ থেকে ১১ জন করে সদস্য রয়েছেন। কোথাও কোথাও ১৩ জনও আছেন। মূলত সিপিএমের ছাত্র-যুব কর্মীরাই এই দায়িত্বে থাকছেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে ওই দুই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন এমন সাধারণ যুবক-যুবতীরাও রেড ভলান্টিয়ার্সের সাথে যুক্ত আছেন বলে দাবি করছে তারা।
‘বিজেমূল’ ভুল, BJP-TMC এক নয়, কাকাবাবুর জন্মদিনে নোট-নির্দেশ CPIM এর
রেড ভলান্টিয়ার্স সূত্রের খবর, এরিয়া কমিটি-ভিত্তিক ‘টিম’ তৈরির পরে এ বার পুরসভা ও পঞ্চায়েত স্তরে সংগঠনকে নামিয়ে আনার কাজ শুরু হয়েছে। যেমন এরই মধ্যে কৃষ্ণনগর ছাড়াও হাঁসখালি, বগুলা, নবদ্বীপ শহর, নবদ্বীপ পূর্ব, তাহেরপুর ও কালীগঞ্জ এরিয়ায় রেড ভলান্টিয়ার্সরা অত্যন্ত সক্রিয় ভাবে কাজ করছেন। সেখানে তাদের ‘টিম’ও অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী। এই সব এলাকায় পুরসভা ও পঞ্চায়েত ধরে ‘টিম’ তৈরি হচ্ছে।সিপিএম সূত্রের দাবি, বর্তমানে নদীয়া জেলায় রেড ভলান্টিয়ার্সের সংখ্যা প্রায় চার হাজার। বুথ স্তরে তাদের নেতৃত্বে সাধারণ যুবক-যুবতীদের নিয়ে তৈরি হবে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। এর পরে করোনার তৃতীয় ঢেউ এলে তারা কাজ চালাবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার পরেও এই সব ‘টিম’ থাকবে। কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুল্যান্স আনা, রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া, চিকিৎসার তদারকি করা, প্রয়োজনে বাড়িতে ওষুধ ও খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ চালাবে তারা।