ওয়েব ডেস্ক : রাজ্যের বাকি মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভাগুলির ভোট কবে হবে, সে বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আজ, বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে কমিশনের তরফ থেকে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়েছে, দু দফায় তারা বাকি পুরসভাগুলির নির্বাচন করাতে চায়। ২২ জানুয়ারি ও ২৭ ফেব্রুয়ারি মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরসভাগুলির নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
কমিশনের আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র এ দিন আদালতে জানিয়েছেন, বাকি ভোট হবে ২২ জানুয়ারি ও ২৭ ফেব্রুয়ারি। প্রথম দফায় ভোট হবে, হাওড়া, চন্দননগর, বিধাননগর, শিলিগুড়ি ও আসানসোলে। ২৭ ফেব্রুয়ারি বাকি পুরসভাগুলির ভোট হবে। তবে হাওড়ার পুরভোট নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। হাওড়া- বালি বিচ্ছেদ বিলে এখনও সই করেননি রাজ্যপাল।
বামেদের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘একটি বিল এসেছে যেটা হাওড়া ও বালি আলাদা করেছে। তাহলে কি ভাবে কমিশন হাওড়ার ভোটের কথা বলছে। এটা তাদের পরিষ্কার করতে হবে। আলাদা করে ভোট হবে বালিতে নাকি একসঙ্গে হাওড়াতেও হবে ভোট?’ এজি জানান, আশা করা হচ্ছে ২২ জানুয়ারি ও ২৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই হাওড়ার পুরভোট সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। বিলে সই হলে পুরো প্রক্রিয়া নিয়ম মেনে এগোবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্য আগেই বলেছিল মে মাসের মধ্যে শেষ হবে ভোট। ২২ ডিসেম্বর কমিশনকে জানানো হয়েছে। আমরা দফা কমিয়ে দিয়েছি। হাওড়ার প্রশ্নে আমরা আশা করছি, রাজ্যপাল তার মধ্যে সই করে দেবেন। যদি তা না হয় তখন ২৭ ফেব্রুয়ারি হবে। এটাই অনুমান করা হয়েছে।’
ফের বসতে চলেছে দুয়ারে সরকার, কোন কোন প্রকল্প থাকছে জানিয়ে দিল নবান্ন
এ দিন আদালতে সিপিএম ও বিজেপি দুই পক্ষের আইনজীবীই জানান, কলকাতার পুরভোট শান্তিপূর্ণ হয়নি। বিজেপির আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ বলেন, ‘পুরভোটে লার্জ স্কেল রিগিং হয়েছে। আগেও কমিশন বলেছে ভালো নিরাপত্তা থাকবে। কিন্তু সেটা হয়নি। তাই বাকি নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই। এমন সিসিটিভি চাই, যেগুলি কাজ করে।’ রাজশ্রী লাহিড়ী সহ একাধিক নেতার উপর হামলা হয়েছে বলে জানানো হল আদালতে।
সিপিএমের তরফ থেকেও আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, বুথে বুথে এজেন্টদের বসতে দেওয়া হয়নি। প্রার্থীদের মারধর করা হয়েছে। আইনজীবী বলেন, ‘কিছু বুথে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। একটা বুথে রুলিং পার্টি সব ভোট পেয়েছে। এটা কি ভাবে সম্ভব?’ তিনি প্রশ্ন তোলেন ইলেকট্রনিক গেজেটে এটা কি ভাবে হয়? অভিযোগ, মৃত ভোটার, এনআরআই-রাও ভোট দিয়েছেন। এই কমিশনার সরকারের এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন। বলেও দাবি করেন আইনজীবী।
বিজেপির আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, ১৭ ডিসেম্বর এই আদালতের নির্দেশে ছিল কমিশন সব ব্যবস্থা নেবে, যাতে নির্ভয়ে ভোটাররা ভোট দিতে পারেন। রিপোর্ট দিতে হবে কমিশনকে। সেই রিপোর্ট কোথায়? এজি জানিয়ে দেন, রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। পুলিশ কমিশনার ও ডিজি রিপোর্ট দিচ্ছেন।
মেয়র হলেন ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি অতীনই, চেয়ারম্যান মালা রায়
রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ভোটের দিন যেখানেই অশান্তি হয়েছে, সেখানেই ছুটে গিয়েছে পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নজর রাখতে যে ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল, সেই ড্রোনের ফুটেজ জমা দেওয়া হয়েছে আদালতে।
আগামীকাল, শুক্রবার সব সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ আদালতের হেফাজতে আনার দাবি জানিয়েছে বিজেপি। আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, বাকি ভোটের জন্য গাইডলাইন করতে হবে। বুথ দখল, বোমা মারার ঘটনা, সিসিটিভি বিতর্ক ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে পরবর্তী গাইডলাইন করতে হবে। ফের ৬ জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।