ওয়েব ডেস্ক: বিধানসভা নির্বাচনের ৬ মাসের মধ্যে কোনও এক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই রাজ্যের পাঁচ বিধানসভা কেন্দ্রে দ্রুত উপনির্বাচন ও দুই বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট চাইছে তৃণমূল। এনিয়ে দরবার করতে আজ দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। যাওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে উপনির্বাচনের গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে একদিন আগে, অর্থাৎ, আজই কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
৫ জনের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন সৌগত রায়, সুখেন্দুশেখর রায়, মহুয়া মৈত্র, জহর সরকার ও সাজদা বেগম। দুপুর সোয়া ৩টে নাগাদ নির্বাচন কমিশনে যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। সূত্রের খবর, রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া পুরোপুরি কোভিড বিধি মেনে হবে, কমিশনের কাছে এমনই দাবি করবে তৃণমূল।
রাজ্যের যে পাঁচ বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে সেগুলি হল — নদিয়ার শান্তিপুর, কোচবিহারের দিনহাটা, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা। এছাড়াও নির্বাচনের আগে প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায়, ভোট বাকি রয়েছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে।
অপরদিকে, উপনির্বাচন না করার ছক কষেছে বিজেপি। এই অভিযোগ বারবার শোনা গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের মুখে। সেটাতেই সিলমোহর পড়েছিল তথাগত রায়ের ফেসবুক পোস্ট করার পর। কারণ তিনি সেখানে লিখেছিলেন, একটা থমথমে পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উপনির্বাচন কি করা যায়? এই ফেসবুক পোস্টের পর থেকেই বিজেপির শীর্ষ নেতারা নয়া পরিকল্পনা ছকে ফেলেন। তাই নানা কারণ তুলে চিঠি লিখেছেন বঙ্গ–বিজেপির নেতারা।
বামেদের তরফে সংযুক্ত মোর্চার তত্ত্ব প্রত্যাখ্যান করলেও মর্চা ভাঙতে নারাজ ISF
অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিজেপি আর হারের মুখ দেখতে চাইছে না। তাই এভাবে উপনির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাইছে। নির্বাচন কমিশনের রীতি অনুযায়ী, নির্বাচনের ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করে ফেলতে হয়। সুতরাং উপনির্বাচন হওয়া উচিত নভেম্বর মাসের মধ্যে। তাই নানা ছক করে গড়িমসি করা হচ্ছে।
যে ৮টি কারণ বিজেপি তুলে ধরেছে সেগুলি হল—
১. রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি এখনও চলছে
২. রাজ্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ, বাস চলছে কম যাত্রী নিয়ে
৩. সেপ্টেম্বর–অক্টোবর মাসের মধ্যেই তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কা রয়েছে
৪. অক্টোবর মাস হল উৎসবের মাস
৫. পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কার্যকর করে রেখেছে।
৬. দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, দেবশ্রী চৌধুরী–সহ শীর্ষ বিজেপি নেতাদের পুলিশ গ্রেফতার করেছিল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে
৭. রাজ্য সরকার ১২২টি পুরসভার নির্বাচন আটকে রেখেছে
৮. রাজ্য সরকারের পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সুতরাং উপনির্বাচন এখন অপরিহার্য নয়।
এই আটটি কারণ তুলে ধরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। উপনির্বাচনের বিষয়ে বিভিন্ন দলের মতামত জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচন কমিশনে যাবেন এই মতামত জানাতে।
পেগাসাস তদন্তে আপাতত পদক্ষেপ করবে না লকুর কমিশন, হলফনামা জমা দিল রাজ্য সরকার
উপনির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনে যাবে তৃণমূল কংগ্রেসও। সেখানে ৭ বিধানসভা কেন্দ্রের কোভিড সংক্রমণের রিপোর্ট সঙ্গে নিয়ে যাবেন। যেখানে কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হবে, যেহেতু এই কেন্দ্রগুলি–সহ বাকি রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক, তাই দ্রুত উপনির্বাচনের আয়োজন করা হোক। আর বিজেপি যেভাবে হোক উপনির্বাচন আটকে দিতে চাইছে। যাতে সরকার না ফেলতে পারলেও কমপক্ষে মুখ্যমন্ত্রীকে গদিচ্যুত করা যায় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।