Table of Contents
আমেরিকা ভারতের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যা আজ থেকে প্রযোজ্য। এই শুল্কের পরে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে। আজ আমরা আপনাকে ইতিহাসের এমন কিছু ঘটনার কথা বলছি যখন ভারতকে আমেরিকার চাপের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। আপনাকে বলি যে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, ইন্দিরা গান্ধী এবং অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে আমেরিকা ভারতের উপর কূটনৈতিক এবং কৌশলগত চাপ প্রয়োগ করে ছিল। কিন্তু ভারত সেই হুমকির কাছে মাথা নত করেনি।
আমেরিকা গম বন্ধ করার হুমকি দিয়েছিল
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ভারতে একটি বড় খাদ্য সংকট দেখা দেয়। সেই সময় আমেরিকান রাষ্ট্রপতি লিন্ডন জনসন হুমকি দিয়েছিলেন যে যুদ্ধ বন্ধ না হলে গম বন্ধ করা হবে। কিন্তু লাল বাহাদুর শাস্ত্রী ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’ স্লোগান দিয়ে স্বনির্ভরতার উপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি দেশবাসীকে একবেলা খাবার বাদ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন, যা আমেরিকান চাপ কমিয়েছিল। শাস্ত্রীজির এই কৌশল কেবল জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ করেনি, বরং আমেরিকাকে একটি বার্তাও দিয়েছে যে ভারত তার নিজস্ব শর্তে কথা বলবে। লাল বাহাদুর শাস্ত্রী বলেছিলেন যে আমেরিকা যদি গম বন্ধ করতে চায়, তাহলে বন্ধ করতে পারে, আমরা তাতে পরোয়া করি না।
ইন্দিরা গান্ধী উত্তর দিয়েছিলেন
১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী আমেরিকার উপর কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। আমেরিকা যখন বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে ভারতকে হুমকি দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তখন ইন্দিরা গান্ধী সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে একটি বন্ধুত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন। সেই সময় ইন্দিরা গান্ধী আমেরিকাকে স্পষ্ট জবাব দিয়েছিলেন। তার দৃঢ়তা আমেরিকাকে পিছু হটতে বাধ্য করেছিল এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারত একটি নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছিল। এ ছাড়া, ১৯৭৪ সালে পোখরান-১ পারমাণবিক পরীক্ষা ভারতকে একটি পারমাণবিক শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, যা আমেরিকাকে ভারতের সাথে তার কৌশলগত সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছিল।
অটল বিহারী বাজপেয়ীর আমলে
১৯৯৮ সালে পোখরান-২ পারমাণবিক পরীক্ষা ছিল অটলজির নেতৃত্বে ভারতের সবচেয়ে বড় কূটনৈতিক পদক্ষেপ। কিন্তু এতে আমেরিকা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছিল অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করা, অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করা এবং ভারতকে অর্থনৈতিক সাহায্য প্রদানে বাধা সৃষ্টি করা। কিন্তু ভারত দৃঢ়তা দেখিয়েছিল। ভারত বলেছিল যে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এই পরীক্ষাগুলি প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশীদের বিবেচনায়। ভারত আমেরিকার সাথে কথা বলেছিল এবং অবশেষে আমেরিকা বুঝতে পেরেছিল যে ভারতকে চাপ দেওয়ার নীতি ব্যর্থ হয়েছে।