ওয়েব ডেস্ক: পেগাসাস নজরদারির অভিযোগ নিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন প্রবীণ সাংবাদিক হিন্দু গ্রুপের প্রধান এন রাম ও এশিয়ান কলেজ অফ জার্নালিজম শশীকুমার বালকৃষ্ণ। তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের কোনও একজন বর্তমান বা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে এ বিষয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন। কেন্দ্র বা কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থা কি পেগাসাস স্পাইওয়্যারের লাইসেন্স নিয়েছে কিনা এবং তা নজরদারিতে চালাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যবহার করা হয়েছে কিনা ? এই প্রশ্নের জবাব জানতে এবার সুপ্রিমকোর্টে দায়ের করা হল মামলা।
প্রবীণ সাংসদদের পিটিশনে বলা হয়েছে, সামরিক পর্যায়ের স্পাইওয়ার ব্যবহার করে গণ নজরদারি বিবিধ মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের সামিল এবং তা দেশের গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে পরিচিত স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলির ওপর আক্রমণ, অস্থির করে তোলার প্রচেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে। পিটিশনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সরকার কিন্তু নজরদারি চালাতে পেগাসাসের লাইসেন্স নেওয়ার কথা সুস্পষ্টভাবে খারিজ করেনি। একইসঙ্গে নজরদারি সম্পর্কে যে সমস্ত গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, সেগুলি নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সরকার কোনও পদক্ষেপও নেয়নি। এছাড়া ফাঁস হওয়া তথ্যে যাঁদের ফোনে নজরদারি চালানোর অভিযোগ সামনে এসেছে, তাঁদের ফোনের ডেটাবেস বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, এক্ষেত্রে পেগাসাস ব্যবহার করা হয়েছে।
পেগাসাস স্পাইওয়্যারের ব্যবহারে শুধু ফোন হ্যাক করা হচ্ছে তা নয়, যার ফোন হ্যাক করা হচ্ছে তাঁর সঙ্গে যুক্ত বাকিদের নিরাপত্তাও প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে যায়। ক্লায়েন্ট কোম্পানি এনএসও গ্রুপ প্রায় পঞ্চাশ হাজার ফোন নম্বর ২০১৬ সাল নাগাদ থেকে টার্গেট তালিকায় রেখেছে। পেগাসাস শুধু নজরদারিই চালায় না, এটি এক প্রকারের সাইবার-অস্ত্র যেটা ভারতীয় রাজনীতির উপর ক্ষেপণ করা হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত এনিয়ে কোনও তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে যদি ধরেও নেওয়া হয় যে পেগাসাসের ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারি স্বীকৃত দেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রেও তা জাতীয় সুরক্ষার ক্ষেত্রে তা ঝুঁকিপূর্ণ।
‘বিদ্বেষের বীজ বপন করেছেন শাহ’, অসম-মিজোরাম সীমানা দ্বন্দ্বে কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন Rahul-Abhishek
পিটিশনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে যে, সাংবাদিক, চিকিৎসক, আইনজীবী, বিরোধী নেতা, মন্ত্রী, সাংবিধানিক পদে আসীন ও সমাজকর্মীদের ওপর কি বেছে বেছে পেগাসাস ব্যবহার করে অবৈধভাবে ফোন হ্যাক করে নজরদারি চালানো হয়েছিল। উল্লেখ্য, অভিযোগ উঠেছে যে, ৩০০ জনের বেশি ভারতীয়র মোবাইল নম্বর ইজরায়েলি কোম্পানির এনএসও-র পেগাসাস স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে হ্যাকিংয়ের নিশানা করা হয়েছে। যদিও সরকার এই ঘটনায় বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সারা দেশে জনপ্রিয়তা বাড়ছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের! আবেদন আসছে ভিন রাজ্য থেকেও
এদিকে পেগাসাস নজরদারি কেলেঙ্কারিতে তদন্ত কমিশন গঠন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। দেশের সমস্ত বিরোধী দল এই পেগাসাসের মাধ্যমে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, বিচারক এবং উচ্চপদস্থ সরকারি অফিসারদের ব্যক্তিগত জীবনে নজরদারির প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। দাবি উঠেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগের। এই আবহে ভারত সরকারের হাতে পেগাসাস রয়েছে কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট জবাব পেতে মামলা দায়ের শীর্ষ আদালতে।