এই রান্নাঘরের উপাদান ব্যবহার করে প্রাকৃতিক খুশকির প্রতিকারগুলি সহজ এবং অত্যন্ত কার্যকর।
১. লেবুর রস দিয়ে ধুয়ে ফেলুন: লেবুর রস একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে এবং মাথার ত্বকের pH ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি অত্যন্ত অ্যাসিটিক যা অতিরিক্ত তেল কমাতে সাহায্য করে এবং খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাক নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাজা লেবুর রস জল দিয়ে পাতলা করে শ্যাম্পু করার পরে আপনার মাথার ত্বকে লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুবার এটি করলে কেবল খুশকি দূর হয় না বরং আপনার মাথার ত্বক সতেজ হয়। নিয়মিত ব্যবহার মাথার ত্বক পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে এবং চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। এটি আপনার চুলকে প্রাকৃতিক ভাবে চকচকে করে তোলে।
২. নারকেল তেল ম্যাসাজ: নারকেল তেল অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যে পরিপূর্ণ এবং মাথার ত্বককে আর্দ্রতা দেয়। আপনার মাথার ত্বকে উষ্ণ নারকেল তেল ম্যাসাজ করলে চুলের গোড়া পুষ্ট হয়, শুষ্কতা কমায় এবং খুশকি গঠন রোধ করে। এই সহজ প্রতিকার মাথার ত্বকের বাধাকে শক্তিশালী করে এবং জ্বালাও কমায়। এই প্রাকৃতিক তেল চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যা এটিকে স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য একটি সম্পূর্ণ সমাধান করে তোলে।
৩. অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ: অ্যালোভেরা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যে ভরপুর যা প্রাকৃতিক ভাবে মাথার ত্বককে প্রশান্ত করে। তাজা অ্যালোভেরা জেল সরাসরি আপনার মাথার ত্বকে লাগালে জ্বালা প্রশমিত হয় এবং খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাকের কার্যকলাপ হ্রাস পায়। ধুয়ে ফেলার আগে এটি ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এর একটি শীতল প্রভাব রয়েছে যা প্রদাহ কমায়। নিয়মিত ব্যবহার কেবল খুশকির বিরুদ্ধে লড়াই করে না বরং আপনার চুলকে নরম এবং চকচকে করে তোলে।
৪. বেকিং সোডা স্ক্রাব: বেকিং সোডা একটি প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েন্ট হিসাবে কাজ করে এবং মৃত ত্বকের কোষগুলি সরিয়ে দেয়। এটি প্রাকৃতিক ভাবে ছত্রাকের বৃদ্ধি কমাতেও সাহায্য করে। আপনার চুল ভিজিয়ে নিন এবং আপনার মাথার ত্বকে অল্প পরিমাণে বেকিং সোডা আলতো করে ঘষুন। এটি কয়েক মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং ভালভাবে ধুয়ে ফেলুন। এটি ছিদ্রগুলি খুলে ফেলতে, ফ্লেক্স অপসারণ করতে এবং মাথার ত্বকের ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করবে। সপ্তাহে একবার এটি ব্যবহার করলে খুশকি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
আরও পড়ুন : প্রতিদিন সকালে নারকেলের জলের সাথে খান ভিজিয়ে রাখা চিয়া বীজ, পান ৫ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
৫. আপেল সিডার ভিনেগার: আপেল সিডার ভিনেগার মাথার ত্বকের প্রাকৃতিক pH পুনরুদ্ধার করে, খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাকের বিকাশকে কঠিন করে তোলে। আপেল সিডার ভিনেগার এবং জলের সমান অংশ মিশিয়ে আপনার চুলের উজ্জ্বলতা পুনরুদ্ধার করতে ব্যবহার করুন। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৬. মেথি বীজের পেস্ট: মেথি বীজ প্রোটিন এবং নিকোটিন অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা মাথার ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে। দুই টেবিল চামচ বীজ রাতারাতি ভিজিয়ে রাখুন, পিষে পেস্ট তৈরি করুন এবং আপনার মাথার ত্বকে লাগান। হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়ার আগে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। এই প্রতিকার খুশকি কমায়, শিকড়কে শক্তিশালী করে এবং চুল পড়া রোধ করে।
আরও পড়ুন : ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে, কিভাবে আপনার ডায়েটে আরও ফাইবার যোগ করবেন জানুন
৭. দই এর মাস্ক: দইতে প্রাকৃতিক প্রোবায়োটিক থাকে যা সুস্থ মাথার ত্বকের ব্যাকটেরিয়া পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে। ছত্রাকের কার্যকলাপ কমাতে আপনার মাথার ত্বকে সাধারণ দই লাগান। হালকা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলার আগে ৩০-৪০ মিনিট রেখে দিন। দই চুলকে প্রাকৃতিক ভাবে কন্ডিশন করতেও সাহায্য করে এবং শুষ্কতা এবং কুঁচকে যাওয়া কমায়।
৮. নিম পাতার চিকিৎসা: নিম পাতার শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কার্যকর ভাবে খুশকির বিরুদ্ধে লড়াই করে। এক মুঠো নিম পাতা জলে ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করুন এবং শেষবার ধুয়ে ফেলুন। আপনি নিম পাতা পিষে পেস্ট তৈরি করতে পারেন এবং সরাসরি মাথার ত্বকে লাগাতে পারেন। নিম কেবল খুশকি কমায় না বরং মাথার ত্বকের জ্বালাপোড়াও প্রশমিত করে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।