ওয়েব ডেস্ক: জাতীয় স্তরে BJP কে ঠেকাতে বিরোধী জোটে তৃণমূলক থাকলে CPIM এর কোন আপত্তি নাই। এইদিন বৈঠক স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিলেন CPIM-এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সাথে তিনি আটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্যের ক্ষেত্রে বিজেপি-র মতোই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয় করবে CPIM। কিন্তু ত্রিপুরার ক্ষেত্রে রণকৌশল কি হবে, তা সেই রাজ্যের CPIM নেতৃত্বই ঠিক করবেন বলে জানান ইয়েচুরি।
CPIM কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়ে এদিন সাংবাদিক বৈঠক ছিল সীতারামের। সেখানে তিনি বলেন, ‘সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ১৪টি বিরোধী দলের লড়াই অব্যাহত থাকবে। সেখানে কেউ অস্পৃশ্য নয়, তৃণমূলও অস্পৃশ্য নয়। BJP-বিরোধী বিভিন্ন ইস্যুতে যে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে সনিয়া গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমকে স্টালিন, অখিলেশ যাদবের সঙ্গে আমিও একাধিকবার সই করেছি। BJPর বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে এই ভাবেই লড়াই হবে।’ পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য এই রাজনৈতিক লাইনে হাঁটতে নারাজ CPIM । সীতারামের কথায়, ‘BJP সব সময় আমাদের প্রধান শত্রু। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে BJPকে সম্পূর্ণ উৎখাত করতে হলে তৃণমূলকেও পরাস্ত করতে হবে। তবে এই নির্বাচনে মানুষ মনে করেছে সংযুক্ত মোর্চার থেকে তৃণমূলই BJPকে পরাস্ত করতে পারবে, তাই তৃণমূলকে সমর্থন করেছে।’ বাংলায় সাতটি বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে BJPর কোনও ছক থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা ইয়েচুরির। তিনি বলেন, ‘উত্তরাখণ্ডে কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী বদল করা হয়েছে। তাই বাংলায় উপনির্বাচন নিয়ে BJP অন্য কিছু ভাবছে, এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’
কম বয়সীদের দলে আরও জায়গা দিয়ে সামনের সারিতে আনতে হবে, বললেন Gautam Deb
তিন আরও বলেন, ‘বাংলায় মূল প্রাপ্তি বিজেপি-র পরাজয়৷ বাংলা দখলে এবার বিজেপি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল, হাই প্রোফাইল প্রচারও করেছে। তবে হিন্দুত্ববাদের আদর্শ এবং সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছেন। যা বাংলার সংস্কৃতির উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি-কে পরাজিত করতে মানুষ বিকল্প হিসেবে তৃণমূলকেই বেছে নিয়েছে। বাম, কংগ্রেস এবং আইএসএফ-এর জোটকে বেছে নেয়নি। বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে মেরুকরণের লড়াইয়ে আমরা ছিটকে গিয়েছি। দল হিসেবে সিপিএমের কাছে এটা বিপর্যয়। ১৯৪৬ সালের পর পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় কোনও কমিউনিস্ট জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হননি। এটা নজিরবিহীন।’ তবে বিপর্যয়ের দায় এবং তা থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে মূলত দলের রাজ্য কমিটিকেই দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটি। ইয়েচুরি বলেন, ‘আমরা গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি এরকম কেন হল। সমস্যাগুলি খুঁজে বের করতে হবে। সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটিকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
‘টিকার শংসাপত্রে কেন ছাপা হবে মোদির ছবি?’ বিরোধীদের জবাব দিল কেন্দ্র
বিজেপি-কে হারাতে তৃণমূলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ের পাশাপাশি আরও দু’টি ইস্যুতে রাজ্যের শাসক দলের পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি। তৃণমূলের দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, অবিলম্বে রাজ্যে উপনির্বাচন করা উচিত। এমন কি, যেভাবে উপনির্বাচন না হওয়ার কারণে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করানো হয়েছে, তার নেপথ্যে অন্য খেলা থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইয়েচুরি। এর পাশাপাশি ত্রিপুরায় আতঙ্কের পরিবেশ রয়েছে বলেও বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক। যদিও ভবিষ্যতে ত্রিপুরায় বিজেপি-কে হারাতে সিপিএম তৃণমূলের হাত ধরবে কি না, সে বিষয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
এর পাশাপাশি, সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ার জন্য দলের নেতাদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৮০ থেকে কমিয়ে ৭৫ করা হবে।
