ওয়েব ডেস্ক: একুশের নির্বাচনে সবচেয়ে জ্বলন্ত ইস্যু হয়ে উঠেছিল শীতলকুচির গুলিচালনার ঘটনা। যাতে রাজ্য–রাজনীতি থেকে জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল। তার পর থেকেই শুরু থেকেই চাপান্তর। মমতা ব্যানার্জি জানিয়ে ছিলেন, ক্ষমতায় আসা মাত্রই শীতলকুচি নিয়ে তদন্ত করাবেন তিনি। সেই তদন্ত ইতিমধ্যেই সিটের তত্ত্বাবধানে জোর কদমে চলছে। তারপর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের থেকে শুরু করে পুলিশ–প্রশাসনের কর্তাদেরও পড়তে হয়েছে তদন্তের মুখে। এই পরিস্থিতিতে শীতলকুচি কাণ্ডের তদন্তে উঠে এল নয়া মোড়। সিআইডি অফিসাররা তদন্ত সূত্রে দেখতে পেয়েছেন, শীতলকুচির ওই বুথের ভিতরেও রয়েছে গুলির চিহ্ন। সেই গুলি কে চালাল, কোথা থেকে চালানো হয়েছিল, কোন আগ্নেয়াস্ত্র থেকে চালানো হয়েছিল, সেই বিষয়গুলিই এবার তদন্ত করে দেখতে চাইছে সিআইডি।
সেই সূত্রেই উঠে আসছে বেশ কয়েকটি বিষয়। ঘটনার পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে দাবি করা হয়, বুথের বাইরে জটলা সরাতে গেলেই গ্রামবাসীদের একাংশ ঘিরে ধরে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। নিজেদের আত্ম-রক্ষার্থেই গুলি চালাতে হয় বাহিনীকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, তিনজনের বুলেট ইনজুরি এবং সামিউল মিঞাঁ নামে আর একজনের স্প্লিন্টার ইনজুরিতে মৃত্যু হয়েছে। সিআইএসএফ যদি গুলি চালায়, সেখানে স্প্লিন্টার কীভাবে আসবে? সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখবেন ব্যালেস্টিক এক্সপার্টরা। আর এই বিষয়টি নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। যদি বুথের বাইরেই সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে বুথের ভিতরে ব্ল্যাকবোর্ডে কীভাবে মিলল গুলির চিহ্ন? সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতেই সোমবার শীতলকুচির ওই বুথে ব্যালেস্টিক দল যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১২৬ নম্বর বুথে গুলি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ সেই ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছিল, আহতও হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী৷ সেই ঘটনার তদন্তেই ডিআইজি সিআইডি-র নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ তদন্তে নেমে ঘটনার দিন এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মাথাভাঙা থানার একের পর এক আধিকারিককে তলব করছে সিআইডি৷
ডেল্টা প্রজাতি রুখতে কমাতে হবে টিকাকরণের ব্যবধান, ল্যানসেটের সমীক্ষায় অস্বস্তিতে কেন্দ্র
এই ঘটনার পর জেরা করা হয়েছে মাথাভাঙা থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকারকেও৷ আর মোবাইল অফিসার হিসেবে দায়িত্বে থাকা এসআই গোবিন্দ মণ্ডলের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জওয়ানকে তলব করে সিআইডি। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণের পরই শীতলকুচি কাণ্ডের তদন্তের জন্য বিশেষ দল গঠনের নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিট তদন্তে নেমে ২ অফিসার–সহ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬ জনকে তলব করে। বিভিন্ন অফিসারের কাছে সিআইডি-র প্রশ্ন ছিল, ঘটনার দিন সত্যিই গ্রামবাসীদের তরফে অশান্তিতে কোনও প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল কি না৷ কি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, বিকল্প কোনও পথে না হেঁটে সরাসরি গুলি চালাতে হল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে? আগামী দিনে এই সব প্রশ্নের উত্তর উঠে আসবে।