ওয়েব ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টে Pegasus মামলা গৃহীত হল। Pegasus মামলায় একগুচ্ছ আবেদনের শুনানি করার সময়, সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) পর্যবেক্ষণ করেছে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ইসরাইল সফটওয়্যার ব্যবহার করে মানুষের গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগ “যদি খবর রিপোর্ট সঠিক হয় তবে তা গুরুতর”। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা ও বিচারপতি সূর্য কান্তের সমন্বয়ে গঠিত দুই সদস্যের বেঞ্চ এই মামলার শুনানি করেন। বেঞ্চ অবশ্য আবেদনকারীদের জিজ্ঞাসা করেছিল যে, কেন আক্রান্ত ব্যক্তিরা ফৌজদারি অভিযোগ নথিভুক্ত করেনি?
আজ প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবল সাংবাদিক এন রামের পক্ষে সওয়াল শুরু করেছেন। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমন মামলাকারী এমএল শর্মাকে বলেন, “আপনি প্রথম মামলা করেছেন। কিন্তু, প্রবীণ আইনজীবী হিসেবে সিবলকে প্রথম সুযোগ দেওয়া হোক।” সুপ্রিম কোর্টে পেগাসাস মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমনের পর্যবেক্ষণ, “অভিযোগ অত্যন্ত মারাত্মক। কিন্তু, শুধুমাত্র সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে মামলা হয়না। কোথাও কোন অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছে কি? যাঁদের নাম উঠে আসছে তাঁরা অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাবান মানুষ। বিচারপতি এনভি রমনের কথায়, এই মামলার নথিতে কোনও তথ্য নেই তা বলা যাবে না। কিন্তু আরও অনেক তথ্যের প্রয়োজন।
এদিন আইনজীবী কপিল সিবল আদালতকে বলেন, “শুধুমাত্র একটি ফোনের মাধ্যমে যে কোনও মানুষের ব্যক্তিগত পরিসরে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।” তাঁর কথায়, “এটি ব্যক্তি সুরক্ষার পাশাপাশি জাতীয় সুরক্ষার বিষয়। তাই গোটা বিষয়ে আদালতের নজরদারিতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক।”
রাজ্যে পেগাসাস নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিশনের কাজ শুরু হয়ে গেল, অভিযোগ যানাতে পাড়বেন আপনিও
কপিল সিবল আদালতে আরও জানান, সংসদে আসাদউদ্দিন ওয়াইসির প্রশ্নের উত্তরে সরকার জানিয়েছে, ভারতে ১২১ জনের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছিল। কিন্তু আরও তথ্য জানতে হলে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত।
প্রধান বিচারপতি পাল্টা জানতে চান, দু’বছর পরে হঠাৎ এই মামলা কেন? সিবল বলেন, “দু’বছর আগে ঘটনার সূত্রপাত হলেও সম্প্রতি সিটিজেন ল্যাব নামক একটি সংস্থা এখন এই তথ্য সামনে এনেছে যে, সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি, রেজিস্টার, রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী, সংবাদকর্মী-সহ বহু মানুষের ফোনে আড়িপাতা হয়েছে।”
প্রথম সমুদ্রে ভাসল সম্পূর্ণ ভারতে তৈরি প্রথম বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ INS Vikrant
সিবল বিষয়টির গভীরে ঢোকেন। তিনি বলতে থাকেন, “পেগাসাস স্পাইওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে মোবাইলের ক্যামেরা ও মাইক অন করে যে কোনও মানুষের গতিবিধির ওপর নজরদারি চালানো যায়।”
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা মানছি যে বিষয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, একমাত্র এডিটর’স গিল্ড ছাড়া অন্য কারও আবেদনপত্রে তেমন তথ্য প্রমাণ নেই। তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার মতো কোনও তথ্য আদালতের কাছে এখনও নেই।”
সংসদের অচল অবস্থা নিয়ে এক যোগে বিবৃতি জারি করল কংগ্রেস-বাম-তৃনমূল সহ ১৪ বিরোধী দল
আইনজীবী কপিল সিবল পাল্টা বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে হোয়াটসঅ্যাপ এবং এনএসও-র মধ্যে মামলা চলছে। সেই মামলা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে পেগাসাস এর মাধ্যমে টেলিফোনে আড়ি পাতে। এখন প্রশ্ন ভারতীয়দের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে কিনা? তা তদন্তের বিষয়।
বিষয়টি শুনে সিবলকে প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমার মনে হয় না ক্যালিফোর্নিয়ার আদালতেও এমন কোনও তথ্য উঠে এসেছে, যাতে বলা যায় যে ভারতীয়দের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে।” প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “আপনারা যদি এতটাই নিশ্চিত যে, আপনাদের টেলিফোনে আড়িপাতা হয়েছে তাহলে অপরাধীক অভিযোগ দায়ের করেননি কেন?”
এর পরেই কোর্ট আজকের জন্য মুলতুবি হয়ে যাই, পরবর্তী শুনানির তারিখ মঙ্গলবার।