Table of Contents
ওয়েব ডেস্ক: করলার গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত, তারা ইচ্ছে না থাকলেও ডায়েটে শামিল করে ফেলেন এই তেতো সবজিটি। দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় যদি উচ্ছে বা করলা থাকে, তাহলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। চিকিৎসকদের মতে, উচ্ছে ও করলা ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে খুব উপকারী, এটি হার্ট ভাল থাকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
তবে কেবল স্বাস্থ্যেরই যে উপকার করে তা কিন্তু নয়, পাশাপাশি ত্বক উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করে তুলতে করলার জুড়ি মেলা ভার। করলা ভিটামিন সি, আয়রন, বিটা-ক্যারোটিন, পটাসিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের মতো বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ, যা ত্বকের ব্যাকটেরিয়া এবং জীবাণু দূর করে এবং ত্বক উজ্জ্বল করে তোলে। এছাড়াও, এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করতে সহায়তা করে। করলা কোনও সুপারফুডের চেয়ে কম নয়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ত্বকের ক্ষেত্রে করলার উপকারিতা ও ব্যবহারের পদ্ধতি সম্পর্কে।
১) নিম, হলুদ এবং করলা
নিমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ত্বকের বিভিন্ন ক্ষতি প্রতিরোধ করে। ব্রণ-পিম্পলের সমস্যা দূর করতে পারে। আর, হলুদে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ব্রণ ও প্রদাহের সমস্যা দূর করে।
একটা করলার সাথে একমুঠো নিমপাতা এবং ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর ওই পেস্টটি মুখে ভালো করে লাগিয়ে, ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন এবং পরে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে এই প্রতিকারটি সপ্তাহে ২-৩ বার করুন। প্যাক তৈরির আগে করলার বীজগুলো অবশ্যই বার করে নেবেন।
২) করলা ও শসা
শসাতে প্রচুর পরিমাণে জল থাকে, ফলে ত্বককে আর্দ্র রাখে। এছাড়া, এটি ত্বক পরিষ্কার করে এবং ত্বকের জ্বালা প্রশমিত করে। করলা এবং শসার এই মিশ্রণটিও ত্বক পরিষ্কার করবে এবং উজ্জ্বল করে তুলবে। অর্ধেক করলা এবং অর্ধেক শসা পিষে নিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এই পেস্টটি গলায় এবং মুখে ভালো করে লাগিয়ে, ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ঠাণ্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে এই প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহার করুন। প্যাক তৈরির আগে করলার বীজগুলো অবশ্যই বার করে নেবেন।
৩) ডিমের কুসুম, দই এবং করলা
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ডিমের কুসুম ত্বককে নরম ও হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া, এটি ইউভি ড্যামেজ থেকেও ত্বককে রক্ষা করে। অপরদিকে, দইয়ে উপস্থিত ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের ছিদ্রগুলিকে শক্ত করতে সাহায্য করে এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করে। এই তিনটি উপাদানের মিশ্রণ রিঙ্কেলস এবং ফাইন লাইনস কমায়।
একটি ডিমের কুসুমের সাথে, ১ টেবিল চামচ করলার রস এবং ১ টেবিল চামচ দই ভাল করে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। তারপর ওই পেস্টটি গলায় এবং মুখে সমানভাবে লাগিয়ে, ২০-২৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর মুখে সামান্য একটু জল ছিটিয়ে, কয়েক সেকেন্ড বৃত্তাকার গতিতে ম্যাসাজ করুন। তারপর ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি একদিন ছাড়া একদিন ব্যবহার করতে পারেন।
৪) দুধ, নিম, তুলসী এবং করলার প্যাক
তুলসী ত্বকের ছিদ্রগুলি খুলে ময়লা এবং অমেধ্য অপসারণ করে এবং ত্বক পরিষ্কার করে। দুধ ত্বকের জন্য এক্সফোলিয়েটর হিসেবে কাজ করে।
একটি করলার সাথে একমুঠো তুলসী পাতা এবং একমুঠো নিমপাতা নিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। এরপর ওই পেস্টটিতে ১ চা চামচ দুধ ভালো করে মিশিয়ে, মুখে সমানভাবে লাগিয়ে নিন। তারপর ১৫ মিনিট রেখে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে, সপ্তাহে দু’দিন এই প্যাকটি ব্যবহার করুন। প্যাক তৈরির আগে করলার বীজগুলো অবশ্যই বার করে নেবেন।
এই ৫ টি ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে তকের সব সমস্যার সমাধান, জেনেনিন
৫) টমেটো, লেবুর রস এবং করলা
লেবুতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা ফাইন লাইনস এবং রিঙ্কেলস হ্রাস করে এবং ত্বকের অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। টমেটোতে অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে, এটি ব্রণ এবং দাগের মতো ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
এই প্যাকটি তৈরি করতে, ১ টেবিল চামচ করলার রস, ১ টেবিল চামচ টমেটোর রস এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই মিশ্রণটি মুখে ভালো করে লাগিয়ে শুয়ে পড়ুন। তারপর পরের দিন সকালে ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। ভালো ফল পেতে এই প্রতিকারটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।
ত্বক উজ্জ্বল করে ও হজম শক্তি বাড়ানো ছাড়াও কুলের আছে নানান উপকারিতা, যেনে নিন
৬) করলা এবং কমলালেবুর স্ক্রাব
কমলার খোসায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য, যা ত্বককে পরিষ্কার করে এবং ত্বকের ময়লা ও টক্সিন দূর করে।
এই স্ক্রাবটি তৈরি করতে, একটি করলা এবং দু-তিনটি শুকনো কমলালেবুর খোসা একসঙ্গে পিষে নিন। এই পেস্টটি দিয়ে ৫-১০ মিনিট বৃত্তাকার গতিতে মুখে ম্যাসাজ করুন। এবার ঈষদুষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে অন্তত একবার এই স্ক্রাবটি ব্যবহার করুন। প্যাক তৈরির আগে করলার বীজগুলো অবশ্যই বার করে নেবেন।
