ওয়েব ডেস্ক: তিনদিনের মধ্যে শোকজ নোটিসের জবাব দিতে হবে এমনি কথা ছিল। কেন্দ্রের করা শো কজের জবাব দিলেন রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্য সচিব তথা বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা Alapan Bandyopadhyaya । সেই সঙ্গে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যের সদ্য নিযুক্ত মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তিনি কেন্দ্রকে শোকজ চিঠির জবাব পাঠালেন ইমেল মারফত। ‘যশ’ পরিস্থিতি পরিদর্শনে বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী কলাইকুন্ডায় যে বৈঠক করেন, তাতে কেন উপস্থিত ছিলেন না রাজ্যের মুখ্য সচিব? সূত্রের খবর, এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে Alapan Bandyopadhyaya স্পষ্ট লিখলেন, ”বৈঠকে ছিলাম, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বেরিয়ে আসি।” এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি লেখেন, যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীই রাজ্যের সর্বময় কর্তা এবং এ রাজ্যের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তাঁর কথা মেনে চলতে পেশাগত বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তাই তাঁর কথা অমান্য করেননি তৎকালীন মুখ্য সচিব। এদিন রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে চিঠি পাঠিয়েছেন বর্তমান মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও।
এক শোকজ চিঠির জবাবে জোড়া পত্রবোমা! এমনটাই হল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনে। একটি চিঠি লিখলেন আলাপন নিজে। ইমেলে পাঠানো সেই চিঠিতে তিনি নিজের যুক্তি সাজিয়ে, বিশ্লেষণ করে জবাব দিলেন। আরেকটি চিঠি পাঠালেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্য সচিব। যদিও এই চিঠিতে কি লেখা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আসলে সকলেরই নজর ছিল আলাপন শোকজের জবাবে কি লেখেন, তা নিয়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় তা প্রকাশ্যে এল।
ঘটনার সূত্রপাত হই, গত ২৭ মে প্রধানমন্ত্রী মোদি এ রাজ্যে ঘুর্ণিঝড় ‘যশ’-এ বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন। ফেরার পথে কলাইকুন্ডা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে তিনি বৈঠক করেন বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে। একই দিনে মুখ্যমন্ত্রীরও দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখার কথা। উভয়ের সাক্ষাতের সময় মেলেনি। তাই ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষতির খতিয়ান নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েই বেরিয়ে যান বৈঠক থেকে। এরপরই বিষয়টি নিয়ে সংঘাত বাধে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে। কেন সেই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব হাজির ছিলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকেন কেন্দ্রের নেতা, মন্ত্রীরা।
করোনার প্রাণদায়ী টোসিলিজুম্যাব ইনজেকশন নিখোঁজ? তদন্তে স্বাস্থ্য ভবনের ৩ সদস্য কমিটি
গত সোমবার আলাপনকে শো-কজ করে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০০৫ সালের বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের আওতায় তাঁকে শো কজ করা হয়। সোমবার তাঁর কাছে ওই চিঠি পৌঁছয়। তিন দিনের মধ্যে, অর্থাৎ বৃহস্পতিবারের মধ্যে আলাপনকে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জবাব দিলেন আলাপন।
এবার বেআইনিভাবে করোনার ওষুধ মজুত ও বণ্টনের অভিযোগ গম্ভীর ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে
এসব সমালোচনার যথাযথ জবাব দিতে গিয়ে সেদিনের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতেও দ্বন্দ্বে ইতি পড়েনি। এরপর মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে বদলি করার নোটিস, তা প্রত্যাখ্যান করে আমলা জীবনে অবসর নিয়ে নেওয়া, রাজ্যের নতুন দায়িত্বভার গ্রহণ করা – এমনই সব ঘটনা পরম্পরায় কেটে গিয়েছে সময়। তারপর কলাইকুন্ডার বৈঠকে কেন মুখ্যসচিব গরহাজির ছিলেন, তা জানতে চেয়ে শোকজ চিঠি পাঠায় কেন্দ্র। তারই জবাব গুছিয়ে লেখেন রাজ্যের অন্যতম সফল, দক্ষ আইএএস। স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন, মুখ্যসচিব হিসেবে তাঁর কী কী দায়িত্ব ছিল এবং তা তিনি কীসের ভিত্তিতে পালন করে গিয়েছেন। এখন দেখার আলাপনের জবাবে কেন্দ্র সন্তুষ্ট হয় কি না।