ওয়েব ডেস্ক: নির্দিষ্ট সূচি মেনে ওই আসনে ভোট হবে বলে জানালেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনকে কিছু জরিমানা করা হয়েছে বলে আদালত সূত্রে খবর। তবে মুখ্যসচিব ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পর্যবেক্ষণ কড়া মন্তব্য করেছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ। আগামী ১৭ নভেম্বর কমিশনকে করা জরিমানা নিয়ে শুনানি হবে।
তবে মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে কড়া পর্যবেক্ষণ আদালত বলেছে, ‘সরকারি কর্মচারী থেকে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের দলদাস হিসাবে নিজেকে দেখাতে চেয়েছেন। ভবানীপুরে উপ নির্বাচন না হলে সাংবিধানিক সঙ্কট হবে, বলেছেন মুখ্যসচিব। একজন প্রার্থী ভোটে জিতলে বা হারলে কি ধরনের সাংবিধানিক সঙ্কট হয়? সেটা মুখ্যসচিব স্পষ্ট করে বলেননি। মুখ্যসচিব কি করে জানলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভবানীপুর থেকে লড়বেন?’ তিনি তো কোনও দলের মুখপাত্র বা রিটার্নিং অফিসার নন, যিনি না জিতলে সাংবিধানিক সঙ্কট হবে, তাঁর জেতা নিশ্চিত করা মুখ্যসচিবের কাজ নয়।’
হঠাত কেন এই মামলা ?
ভবানীপুর উপনির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন যে বিবৃতি জারি করেছিল, তার ৬ ও ৭ নম্বর অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছিল, ‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি বর্তমানে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে। পশ্চিমবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতিও ভোটের ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব ফেলবে না। ভারতীয় সংবিধানের ১৬৪ (৪) ধারায় একজন মন্ত্রী যদি বিধানসভার সদস্য না হন, সেক্ষেত্রে ভোটের ফল প্রকাশের ৬ মাস পর তাঁর মন্ত্রী পদ চলে যায়। আর সেই পদে সর্বোচ্চ পদাধিকারী নিয়োগ না হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে রাজ্যে।’ যা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিল বিরোধী দলগুলি। এরপরই হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেন আইনজীবী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়।
মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এর আগে আদালতে দাবি করেছিলেন, মুখ্যসচিবের ওই বক্তব্য নির্বাচন কমিশন তার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে। ফলে এর দায় কমিশনকেই নিতে হবে। তাঁর বক্তব্য ছিল, বেছে বেছে একটি বিধানসভার জন্য মুখ্যসচিব এমন সুপারিশ করতে পারেন না। মামলাকারীর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের যুক্তি ছিল, নির্বাচন না হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে, এমন কোনও কথা নেই। একজনকে মুখ্যমন্ত্রীকে করার দায় মুখ্যসচিবের নয়। সংবিধান সকলের জন্য সমান। প্রথম দফায় দ্রুত শুনানির আর্জি স্থগিত রাখে আদালত।
মঙ্গলবার ভবানীপুর উপনির্বাচন মামলার রায়দান হাইকোর্টে, জটিলতা কি কাটবে!
আদালতের পর্যবেক্ষণ
একটি আসনের জন্যই সংবিধান আর আইনের বাধ্যবাধকতা? মুখ্যসচিব কীভাবে লেখেন সাংবিধানিক সংকটের কথা? মুখ্যসচিবের চিঠির ভিত্তিতে কীভাবে পদক্ষেপ নিতে পারে নির্বাচন কমিশন?’ আর হাইকোর্টের সেই পর্যবেক্ষণের পরই আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। নির্বাচন কমিশনের কাছে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছিল, ‘একটি উপনির্বাচন করতে কত টাকা খরচ হয় কমিশনের?’ সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছিলেন কমিশনের আইনজীবী।
দু’ লাখের ‘ব্লুটুথ জুতো’ কানে রিসিভার নিয়ে নিয়োগ-পরীক্ষায় বসলেন হবু শিক্ষক!
মামলাকারীর আইনজীবীরাই জানিয়েছিলেন, উপনির্বাচন করতেও কোটি কোটি টাকা খরচ হয়। সেই প্রসঙ্গ তুলেও হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘একটা উপনির্বাচনের জন্য জনগণের করের টাকা কেন খরচ করা হবে? আদালতকে কেন কোনও উত্তর দিতে পারছে না নির্বাচন কমিশন?’ এই প্রসঙ্গেই আদালত জানিয়েছিল, এই উপনির্বাচনের খরচ কোনভাবেই অন্য পন্থায় ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তবে, এদিনের রায়ে সেই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি হাইকোর্ট।