ওয়েব ডেস্ক: পরীক্ষার হলে টুকটাক টুকলি তো এখন নিত্ত ব্যাপার হয়ে গেছে। এর জন্য পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। তা বলে ‘ব্লুটুথ জুতো’ পরে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসা? এমন ঘটনা কস্মিনকালেও কেউ শোনেনি। এই অভিনব কায়দায় টুকলি-বাজি করতে গিয়ে রাজস্থানে ধরা পড়েছে পাঁচজন। তাদের গ্রেফতার করেছে রাজস্থান পুলিশ।
পায়ের চপ্পলের মধ্যে নিখুঁতভাবে ঢোকানো ছিল ছোট মোবাইল এবং ব্লুটুথ ডিভাইস। আর পরীক্ষার্থীর কানে ছিল একেবারে ছোট রিসিভার। বাইরে থেকে সেখানে প্রশ্নের জবাব চলে আসবে। আর পরীক্ষার্থীরা সেটা খাতায় লিখে নেবে।
এভাবে উচ্চ তথ্যপ্রযুক্তিকে টোকাটুকির কাজে লাগানোর ঘটনা ভারতে প্রথম ধরা পড়ল। পুলিশ জানিয়েছে, যার উর্বর মাথায় এই ভাবে টুকলি করার ভাবনা এসেছিল তার নাম তুলসারাম। বাড়ি বিকানের। রাজ্যজুড়ে মোট ২৫ জন পরীক্ষার্থীকে এই চপ্পল ও রিসিভার বিক্রি করেছিল তুলসারাম। দুই লাখ টাকা দিয়ে এই অভিনব টুকলি-যন্ত্র কিনতে হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। ফলে তুলসারাম ও তার দলবল ৫০ লাখ টাকা রোজগার করে ফেলেছিল। পরীক্ষার দিন সকালে এই ডিভাইস চালু করার ব্যবস্থাও করে দিয়েছিল তারা।
কিন্তু শেষরক্ষা হলো না। বিকানের পুলিশ সকালে এক নারী সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে এই পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে আজমের, সিকর, প্রতাপগড় সহ বিভিন্ন জায়গায় জানিয়ে দেওয়া হয়। শুরু হয় পরীক্ষার্থীদের পুলিশি তল্লাশি। তারপরই ধরা পড়ে পাঁচজন। তাদের চটিতে লুকোনো ছিল টুকলি করার জন্য মোবাইল ও ব্লুটুথ। আজমের, সিকর, নিমকখানা থেকে একজন করে এবং প্রতাপগড়ে দুইজন ধরা পড়ে। তবে তুলসারম ফেরার।
COVAXIN কে এখনি অনুমোদন নয়, জানাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO
রিট নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ আসে প্রতিবার। সে কারণে এবার আগাম সতর্ক ছিল রাজ্য পুলিশও। প্রায় ১৬ লক্ষ পরীক্ষার্থী ছিল এই বছর। গত রবিবার পরীক্ষা হয়। রাজ্যে ৪ হাজারের বেশি কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। লেভেল ১ (প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি) ও লেভেল ২ (ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি)-এর পরীক্ষা হয় এদিন। এর আগে ২০১৮ সালে শেষ রিট হয়েছিল। ৩১ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের জন্য এ বার পরীক্ষা নেওয়া হয়।
সরকারি সহায়তা প্রাপ্ত সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানকেও শর্ত মানতে হবে, জানাল সুপ্রিম কোর্ট
এর আগে নাকি পাঁচবার এই পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছিল। আগাম প্রশ্ন বের হয়ে যাওয়া, পরীক্ষায় নকল করার আটকানো রাজস্থান পুলিশের কাছে একটা চ্যালেঞ্জ। সে কারণে এবার পরীক্ষাকেন্দ্রগুলির কাছে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখাও হয়েছিল। কিন্তু এমন কীর্তিমানও যে লুকিয়ে আছে, তা কে জানত! পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, এবার ২৫ টি মতো ব্লুটুথ জুতো বিক্রি করা হয়।
এর জন্য বাজার থেকে এমন জুতো কেনা হয়েছিল, যা সহজেই কাটা যায়, আবার জুড়েও দেওয়া যায়। স্পঞ্জ দেওয়া এই জুতো থেকে সোল আলাদা করে মোবাইলের ব্যাটারি, মাদার বোর্ড এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ ভরে সিম কার্ড ভরার জন্য আলাদা জায়গা করা হয়।