ওয়েব ডেস্ক: এ যেন এক সিনেমার গল্প। ফোনে হুমকি দিয়েই মুহূর্তের মধ্যে খোদ পুলিশ কর্মীর অ্যাকাউন্ট থেকেই ৫০ হাজার টাকা গায়েবের অভিযোগ উঠল। কলকাতা পুলিশের ওই কনস্টেবল সন্তোষপুরের বাসিন্দা।
ঘটনার সূত্রপাত একটি ফোনে। দক্ষিণ কলকাতার এক থানায় কর্তব্যরত কনস্টেবল কবীর মণ্ডল। শুক্রবার তিনি থানায় কাজ করছিলেন। এমন সময়ে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে তাঁর কাছে। ফোনে বলা হয় – ”তোমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিচ্ছি। ক্ষমতা থাকলে আটকাও।” সঙ্গে উচ্চস্বরে হাসি। এর উত্তরে কবীর জানতে চান, কে ফোন করেছেন। তার কোনও উত্তর না দিয়ে ফের হাসি। এরপর কবীরও পালটা হুমকির সুরে জানান,তিনি একজন পুলিশ-কর্মী। তাঁর সঙ্গে এ ধরনের মজা করলে ফল ভোগ করতে হবে। এরপর ফোন কেটে যায়।
এই হুমকি ফোনকে গুরুত্বই দেন কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল কবীর মণ্ডল। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ফোনটি কার নামে, তা খতিয়ে দেখতে জান যান। ঠিক সেই মুহূর্তে ব্যাংক থেকে পরপর মেসেজ আসে তাঁর কাছে। তিনি দেখেন, ধাপে ধাপে মোট ৫০ হাজার টাকা তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। ঢাকুরিয়ার এটিএম থেকে টাকা তোলা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। পুলিশ কর্মীর দাবি, অ্যাকাউন্ট বা এটিএম কার্ড সংক্রান্ত তথ্য কাউকে দেননি। তারপরও টাকা তোলা হয়েছে। নেপথ্যে নতুন কোনও গ্যাং? সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে একেবারে ফিল্মি কায়দায় ওৎ পেতে দুই ছিনতাইকারীকে ধরল পুলিশ
লেক থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন কবীর মণ্ডল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগে একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তুলেছিলেন কবীর। সেসময়ই জালিয়াতরা তাঁর কার্ড ক্লোন করেন বলে অনুমান তদন্তকারীদের। সেখান থেকেই স্কিমারের সাহায্যে তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়েছে জালিয়াতরা। তাহলে ফের কি ক্লোন, স্কিমারের সাহায্য নিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সাফ করতে শুরু করেছে হাইটেক চোরের দল? সেই সম্ভাবনাও থাকছে। ওই এটিএমের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে দুষ্কৃতীদের নাগালে পেতে চাইছে পুলিশ।
কিছুদিন আগেও, অভিনব কায়দায় ১৯ লক্ষ টাকা গায়েব করার অভিযোগ ওঠে। বড়তলা থানা এলাকার বাসিন্দা এক বৃদ্ধের অভিযোগ, গত ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে এক অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে তাঁর কেওয়াইসি আপডেট করার কথা বলা হয়। তারপর বলা হয় একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে। অভিযোগ, অ্যাপ ডাউনলোড করার পরই মোবাইল ফোনটি হ্যাক করে নেয় প্রতারকরা। তারপর দফায় দফায় বৃদ্ধের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব করা হয় প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা। সোমবার ব্যাঙ্কে পাশবই আপডেট করতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন ওই বৃদ্ধ। তিনি বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
একরত্তি মেয়েকে তুলে আছড়ে ফেলল পরিচারিকা! সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ল কীর্তি’
আর আগেও, গতমাসের গোরায় বিশেষ কোড পাঠিয়ে যোগফল জানতে চেয়ে এক ব্যক্তির পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের দত্তপুকুর শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকরা। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয়ে তাঁকে ফোন করে ওটিপি না চেয়ে একটি কোড নম্বর দেওয়া হয়। বলা হয়, ওই কোড নম্বরটি গ্রাহকের পিন নম্বরের সঙ্গে যোগ করে যোগফল জানাতে। ফোনে থাকা ব্যক্তিকে যোগফল জানাতেই গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৯৮ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায় বলে অভিযোগ। দত্তপুকুর থানার পাশাপাশি, বারাসাত পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম শাখাতেও অভিযোগ দায়ের হয়। সচেতন করা সত্ত্বেও বারবার একই ভুল ঘটছে, এই ঘটনায় গ্রাহকদের অসাবধানতাকেই দায়ী করেছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
