ওয়েব ডেস্ক: ২০১৯-এ ৪২-এ ৪২ ডাক দেওয়া তৃণমূল পেয়েছিল ২২ টি আসন। আর বিপক্ষে বিজেপি ১৮ টি। সেই পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাককে নিয়োগ করে তৃণমূল কংগ্রেস। তারপর থেকে দল ও সরকারের একাধিক কর্মসূচি সফলভাবে পরিকল্পনা করে আইপ্যাক। যার সর্বশেষটি হল ডিসেম্বরে দুয়ারে সরকার।
ইতিমধ্যেই তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে হ্যাট্রিক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরও ভাঙছে না তৃণমূল কংগ্রেস–আইপ্যাক গাঁটছড়া। তাহলে কি নতুন কোনও পরিকল্পনা? সূত্রের খবর, আগামী পাঁচ বছর তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই কাজ করবে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক। সুতরাং হিসেব দাঁড়াচ্ছে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন এবং পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনেও আইপ্যাককে দেখা যাবে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কাজ করতে। কারণ চুক্তি এমনই।
একুশের নির্বাচনে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ২০০ আসন পার করবে। আর বিজেপি ১০০ আসন টপকাতে পারবে না। তিনিই বলেছিলেন, তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী যদি ভুল হয় তাহলে এই পেশাই ছেড়ে দেবেন। তবে অঙ্ক মিলিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এবার TMC এর খেলা শুরু ত্রিপুরায়, ভাঙতে পারে বিপ্লবে দেবের সরকার
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের নির্বাচনী জয়ের পরে প্রশান্ত কিশোর ঘোষণা করেছিলেন তিনি আর ভোটকুশলী হিসেবে কাজ করবেন না। পাশাপাশি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারেও কাউকে পরামর্শ দেবেন না। বদলে অন্য কোনও পেশায় যাওয়ার ইঙ্গিত করেছিলেন তিনি। ইতিমধ্যে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠানোর জল্পনাও শোনা গিয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যে তিনি মুম্বাইতে গিয়ে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। তারপরেই অবশ্য তাঁকে নিয়ে অন্য জল্পনা তৈরি হতে শুরু করেছে।
অভিষেকের হাতে ৩৫ BJP নেতার ‘লিস্ট’ মুকুলের? চিন্তাই গেরুয়া শিবির
বলা যেতে পারে প্রশান্ত কিশোরের ভোটকুশলীর কাজটা শুরু করেছিলেন গেরুয়া শিবিরের হাত ধরে। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে কাজ করেছিল তার সংস্থা আইপ্যাক। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বিহারের নীতীশ কুমারকে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন। অন্ধপ্রদেশে জগনমোহন রেড্ডিকে কুর্সিতে বসিয়েছেন, এমকে স্ট্যালিনের হাতে তামিলনাড়ুর মসনদ তুলে দিয়েছেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে দিল্লির বুকে আসীন করেছেন। তারপর ২০১৯ সালে কঠিন পরিস্থিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পশ্চিমবঙ্গে হ্যাট্রিক করিয়েছেন ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। এবার কি জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে কবজির জোর দেখাবেন তিনি? উঠছে প্রশ্ন।
মাত্র ৫১ BJP বিধায়ক নিয়ে ধনখড়ের কাছে শুভেন্দু, বাকিরা কোথায়? জল্পনা তুঙ্গে
এখন পাঞ্জাব কংগ্রেসের সঙ্গেও তাঁর সংস্থার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের চুক্তি হয়েছে। সেক্ষেত্রে আইপ্যাক ব্যস্ত থাকবে এই কাজে। ২০২২ সালে বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। তবে সেখানে মুকুল রায়কে দায়িত্ব দিতে চায় দল। আর এখান থেকে একসঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা। আবার এই টিমের একটা বড় অংশ অন্যান্য রাজ্যে কাজ করবে বলেও সূত্রের খবর।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে আইপ্যাকের চুক্তি হয়েছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ এর মধ্যে রয়েছে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২৬-এর পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন। এই চুক্তি অনুযায়ী আগামী ৫ বছর আইপ্যাক তৃণমূলের হয়ে কাজ করবে।