ওয়েব ডেস্ক: বাংলার বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর কেন্দ্রীও কমিটির বৈঠকে কারাট শিবিরের প্রশ্নের মুখে পরতে হল বঙ্গ CPIM কে। নির্বাচনী কৌশলে ভুল পথে হেঁটেই বাংলায় বামেদের ভরাডুবি হয়েছে, এই অভিযোগে সরব হলেন কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা-সহ একাধিক রাজ্যের নেতারা। তাদের প্রশ্ন, কেন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা হল? জোট-সিদ্ধান্তে কার্যত কোণঠাসা হল বঙ্গ CPIM নেতৃত্ব। ভোটে সাফল্য না পাওয়ার জন্য কৌশলগত ভুলকেই আলাদা করে দায়ী করা যায় না। বিপর্যয়ের কারণ সবিস্তার ব্যাখ্যা করেছে রাজ্য কমিটি।
রামচন্দ্র ডোম, রবীন দেব, আভাস রায়চৌধুরীরা পাল্টা সওয়াল করেন,’২০১৮ পার্টি কংগ্রেসে বলা হয়েছিল, বিজেপির বিরুদ্ধে সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে এক করে লড়াই করতে হবে। তাই কংগ্রেসকে নেওয়া হয়।’ তা খারিজ করে দেন অন্য রাজ্যের প্রতিনিধিরা। তাঁদের পাল্টা বক্তব্য, আপনারা অতিরিক্ত উদ্যোগ নিয়েছেন, তা ফলাফলে স্পষ্ট হয়েছে। কারাটপন্থীদের মতে, বৃহত্তর বাম ঐক্য ও বাম শক্তিকে একত্র রাখার ভাবনাতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত ছিল। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, সব দোষ কি বাংলার নেতাদের? ব্রিগেডে তো এক মঞ্চে ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি ও অধীর চৌধুরী। ওই মঞ্চ থেকে ‘সংযুক্ত মোর্চা’র ঘোষণা করেছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক।
কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী কোনও মঞ্চ সম্ভব নয়, বললেন শরদ পওয়ার
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের প্রশ্নে আগেই সর্বভারতীয় সিপিএমের একাংশের আপত্তি ছিল। যে কারণে ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েই রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্রেরা। কিন্তু কংগ্রেস-সহ ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তির বৃহত্তর ঐক্যের লাইনে সিলমোহর পড়েছিল ২০১৮ সালে হায়দ্রাবাদ পার্টি কংগ্রেসে।
রাজ্যে তৃনমূলের বিরুদ্ধে একচুল জাইগা ছাড়বে না বঙ্গ CPIM, স্পষ্ট বার্তা দিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের যে বৈঠক শুরু হয়েছে শুক্রবার, তার প্রথম পর্বে রয়েছে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী পর্যালোচনা। আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দফতরে বসেই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশগ্রহণ করছেন এ রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যেরা। প্রথম দিনে কম-বেশি ৩৭ জন বক্তা ছিলেন। দলীয় সূত্রের খবর, নজিরবিহীন সাফল্যের জন্য কেরলের সিপিএম যেমন তারিফ কুড়িয়েছে, তেমনই বেনজির ভরাডুবির জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন বঙ্গ সিপিএমের নেতৃত্ব। বামফ্রন্ট তার পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখে বাম ঐক্যের উপরে নির্ভর করে ভোটে লড়লেই ভাল করত বলে মত দিয়েছেন অনেকে।
অটুট থাকছে মোর্চা, ‘অভিমানী’ নওশাদ কে আশ্বাস দিলেন বিমান
৬ থেকে ৮ অগাস্ট পর্যন্ত চলবে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। ফলে আলিমুদ্দিনের নেতাদের উপর দিয়ে আরও ঝড়-ঝাপটা বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।