ওয়েব ডেস্ক: করোনা নিয়ে এবার মোদী সরকারকে তুলোধনা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেনের গলাই। মুম্বইয়ের একটি অনুষ্ঠানে দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেই কাঠগড়ায় তোলেন নোবেলজয়ী এই বাঙালি। তিনি দাবি করলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে কাজ না করে খালি কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। তাঁর তীর্যক মন্তব্য, ‘কাজ না করে কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা কম বুদ্ধির লক্ষণ, ভারত সেটাই করেছে। কেউ ভাল কাজ করলে, আপনা আপনিই সে কৃতিত্ব অর্জন করে।’ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথকে উদ্ধৃত করে এই মন্তব্য করেছেন অমর্ত্য।
করোনার প্রথম ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পরপরই সুনামির মতো দেশে আছড়ে পড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। মারাও যাচ্ছেন অনেকেই। করোনার সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে বিভিন্ন রাজ্যেই জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। প্রথম ঢেউয়ে লকডাউনের জের কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। ফলে অসংখ্য মানুষ রুটি-রুজি হারিয়েছেন। একদিকে, সংক্রমণের আতঙ্ক, অন্যদিকে জীবিকার অভাবে অনেক মানুষই চরম সমস্যায় পড়েছেন। এরইমধ্যে করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনেছেন অমর্ত্য। তিনি বলেছেন, সরকার এতটাই সংশয়াচ্ছন্ন যে, করোনা মোকাবিলায় কাজ না করে গৃহীত ব্যবস্থার কৃতিত্ব নেওয়ার জন্যই ব্যস্ত। এই সিজোফ্রেনিয়ার কারণে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেছেন, ভারত নিজের শক্তি অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি। সরকার দ্বিধাগ্রস্ত মনোভাবের কারণেই এই সংকট মোকাবিলায় যথাযথ কাজ হয়নি।
করোনার সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবিলায় কার্যত নাজেহাল দশা রাজ্যে-রাজ্যে। সংক্রমণের বিদ্যুৎ গতিতে লাগাম পরাতে দেশজুড়ে লকডাউন সহ বেশ কিছু কড়াকড়ি জারি করা হয়। একটানা এই কড়াকড়ির সুফল মিলছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশের করোনা গ্রাফ নিম্নমুখী। অনেকেই মনে করছেন সেকেন্ড ওয়েভ বিদায়ের পথে। তবে সতর্ক না থাকলে অল্প দিনের মধ্যেই দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
উপনির্বাচনে ভবানীপুরে প্রার্থী নয়, সিদ্ধান্ত ঘোষণা অধীর চৌধুরীর
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ বলেছেন, অতিমারীর মোকাবিলার ক্ষেত্রে ওষুধ উৎপাদন ক্ষমতা ও উচ্চ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য ভারত বেশ ভালো জায়গায় ছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সরকার রোগ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া রোধের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের পরিবর্তে তার কাজের কৃতিত্ব নিতেই বেশি আগ্রহী ছিল।এটা কিছু সিজোফ্রেনিয়ার ফল।
আজ তৃনমূলের সাংগঠনিক বৈঠক, থাকতে পারে প্রশান্ত কিশোর
উল্লেখ্য সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট দাবি করে বলেছেন, দেশের অক্সিজেনের চাহিদা ১০,০০০ টম থেকে কমে এখন ৩৫০০ টনে নেমে এসেছে তাই হলফ করে বলা যায়, করোনাভাইরাস দ্বিতীয় ঢেউ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভালোভাবেই সামলাচ্ছে ভারত। তিনি আরো দাবি করছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবিলায় হিমশিম খেলেও ভারত দক্ষ এবং পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি স্পষ্ট দাবি করছেন যে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি দারুণভাবে সামাল দিয়েছেন এবং তা অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সুদক্ষ নির্দেশনার মাধ্যমে।
রাজ্যে আসতে চলেছে Sputnik V, টিকা মিলবে আগামী সোমবার থেকে
তবে বর্তমানে দেশের করোনা গ্রাফ নিম্নমুখী। শুক্রবারের তুলনায় শনিবার প্রায় ১২ হাজার কমল আক্রান্তের সংখ্যা। তবে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লক্ষ ২০ হাজার ৫২৯ জন। শুক্রবারের তুলনায় এদিন আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। শুক্রবার আক্রান্ত হয়েছিলেন লক্ষ ৩২ হাজার ৩৬৪ জন। তবে এদিন দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। যেখানে শুক্রবার ২ হাজার ৭১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেখানে শনিবারের হিসেব বলছে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে।