ডিজিটাল ডেস্ক: জল্পনা চলছিল বেশ কিছুদিন ধরে, আজ তা স্পষ্ট করল CPIM। বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সমন্বয় কমিটিতে সিপিএমের (CIPM) কোনও প্রতিনিধি থাকবে না। রবিবার দু’দিনের পলিটব্যুরোর বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নিলো দল। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই-আন্দোলনে থাকলেও কোনও কমিটির সঙ্গে থাকবে না সিপিএম। দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে আর বাংলাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই আরও জোরদার হবে।
‘ইন্ডিয়া’র মুম্বাই বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে শিবসেনা (উদ্ভব) নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছিলেন, ‘‘সমন্বয় কমিটি ১৪ জনের হবে। ১৩ জনের নাম স্থির হয়ে গিয়েছে। ১৪ নম্বর জায়গাটি সিপিএমের জন্য ফাঁকা রাখা হয়েছে। সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছেন, পরে তাঁরা নাম দেবেন।’’ মুম্বাইয়ের বৈঠক হয়েছিল ১ সেপ্টেম্বর। সমন্বয় কমিটিও গঠিত হয়েছিল সেই দিনই। নাম জানায়নি সিপিএম। তবে সমন্বয় কমিটিতে না-থাকলেও প্রচার, গবেষণা, সমাজমাধ্যম সংক্রান্ত ‘ইন্ডিয়া’র যে ‘সাব কমিটি’গুলি তৈরি হয়েছে, সেখানে সিপিএমের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, পলিটব্যুরোর বৈঠকের আগে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে এই জোটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি। কারণ এই জোট যে প্রয়োজন, সেটা সব সদস্যই মেনেছেন। কিন্তু একই ভাবে এই জোটে থেকেও কি ভাবে তৃণমূলের থেকে একটা দূরত্ব রাখা যায়, সেই ভাবনা থেকেই সমন্বয় কমিটিতে না থাকার সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে সার্বিক প্রেক্ষাপটের কথা ভেবে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারি CPIM এর ব্রিগেড সমাবেশ, প্রচারে রাস্তায় নামল ডিওয়াইএফআই
রাজ্য কমিটির বৈঠকে বিজেপি-বিরোধী জোটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়নি। কারণ সিপিএম নেতারা মনে করেন, এই জোটের ফলে বিজেপি-বিরোধী শক্তিগুলি এক ছাতার তলায় আসছে। এবং এক্ষেত্রে কোনও ‘ছুঁৎমার্গ’ রাখতে চান না তাঁরা। তবে যে জোটে তৃণমূল রয়েছে সেই জোটে সিপিএমের থাকার ভুল ব্যাখ্যাও হতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইয়েচুরির ছবি নিয়ে বিজেপির তরফে INDIA জোটের উদাহরণ কে সামনে রেখে প্রচার চালানো হতে পারে যে তৃণমূল ও সিপিএম একই বন্ধনী ভুক্ত, এই ধারণা রয়েছে রাজ্য কমিটির নেতাদের।
আরও পড়ুন: INDIA জোটের পক্ষে আসন ভাগাভাগিতে একমত হওয়া সহজ নয়, এই রাজ্যগুলিতে ছোট দলগুলি একটি বড় চ্যালেঞ্জ
তবে মানুষ যাতে এই ভুল বোঝানোয় বিভ্রান্ত না হয়, সেই জন্যই কোনও সমন্বয় কমিটিতে না থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দুটি উদ্দেশ্য পূরণের চেষ্টা করলেন সিপিএম নেতারা। এক, জোটে থেকেও তৃণমূলের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা। দুই, দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে এবং রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরাল করা।