ওয়েব ডেস্ক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে টিকা হয়ে উঠবে অন্যতম হাতিয়ার, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু করোনাভাইরাসের ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করছে না কোভ্যাকসিন এবং কোভিশিল্ড, সম্প্রতি ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এবং AIIMS-এর (NCDC) গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। যদিও এই গবেষণা কতটা সঠিক সেই বিষয়ে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। AIIMS (দিল্লি) এর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, COVID-19 এর ‘ডেল্টা’ রূপটি গত বছরের অক্টোবরে ভারতে প্রথম দেখা যাই।
AIIMS স্টাডি কি বলে?
AIIMS এর সমীক্ষায় দেখা গেছে যে COVID-19-এর ‘ডেল্টা’ রূপটি প্রথম প্রকাশিত ‘আলফা’ সংস্করণের তুলনায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেশি সংক্রামক, ভারতে সংক্রমণের পিছনে এটিই রয়েছে।।
AIIMS এবং ইন্সটিটিউট অফ জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির (IGIB) এই গবেষণার জন্য ৬৩ জন করোনা রোগী, যাঁদের দেহে করোনার একাধিক উপসর্গ রয়েছে, তাঁদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এই ৬৩ জনের মধ্যে ৫৩ জনকে কোভ্যাকসিন টিকার কমপক্ষে একটি করে ডোজ দেওয়া হয়েছিল এবং বাকিরা নিয়েছিলেন কোভিশিল্ড। গবেষণায় দেখা গেছে, এই ৬৩ জনের মধ্যে ২৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের ডেলটা ভ্যারিয়েন্টে থাবা বসিয়েছে এবং জীবাণুর মাত্রা ৭০.৩ শতাংশ।
নারকেল জল খাওয়ার পর নারকেলের শাঁস ফেলে দেন, উপকার জানলে এই ভুলটি আর করবে না
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে ল্যানসেট জার্নালে (Lancet Journal) প্রকাশিত ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণা জানান দিচ্ছে, ডেল্টা প্রজাতি অর্থাৎ করোনার B.1.617.2 স্ট্রেন মোকাবিলায় প্রবীণ নাগরিকদের ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ (Corona Vaccine) দেওয়া প্রয়োজন।
একটি ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের দল জানাচ্ছে, ডেল্টা প্রজাতির ভাইরাস সাধারণত ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়। এমনকি, এই স্ট্রেনের ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাও অনেকটা বেশি। সে ক্ষেত্রে প্রবীণ নাগরিকদের মধ্যে অ্যান্টিবডি দ্রুত তৈরি করতে ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ নেওয়া জরুরি। যদিও এই বিজ্ঞানীদের টিম কেবলমাত্র ফাইজার ভ্যাকসিনের কার্যক্ষমতা নিয়ে গবেষণা করেছেন। সেখানে দেখা গিয়েছে, টিকা গ্রহণকারীদের শরীরে তৈরি অ্যান্টিবডি ডেল্টা ভাইরাস মোকাবিলায় ততটাও শক্তিশালী নয়।
ডেল্টা প্রজাতি রুখতে কমাতে হবে টিকাকরণের ব্যবধান, ল্যানসেটের সমীক্ষায় অস্বস্তিতে কেন্দ্র
গবেষণায় আরও জানানো হয়েছে, ভ্যাকসিন না নেওয়ার থেকে নিদেনপক্ষে একটি ডোজ নিলে তা ভাইরাস মোকাবিলায় কিছুটা হলেও সহায়ক হবে। কিন্তু, ডেল্টা প্রজাতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের একটি বা দু’টি ডোজ নিলে যতটা অ্যান্টিবডি তৈরি হবে, তারচেয়ে আরও একটি ডোজ বাড়ালে কার্যক্ষমতা বাড়বে। মূলত বয়স্ক নাগরিকদের জন্যই তিনটি করে ডোজ নেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন গবেষকরা। উভয় গবেষণার ডেটা ইঙ্গিত দেয় যে ‘আলফা’ রূপটি কোভিশিল্ড এবং কোভাক্সিনের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধী হিসাবে প্রমাণিত হচ্ছে। তবে ফাইজার ছাড়া আরও কোনও টিকার উপর গবেষকরা পরীক্ষা চালাইনি বলেই খবর।