মুখ্যমন্ত্রীর দুয়ারে রেশন প্রকল্প বাতিলের দাবিতে আরামবাগে বিক্ষোভ ডিলারদের

by Chhanda Basak

ওয়েব ডেস্ক: এবার দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালুর প্রতিবাদে আরামবাগ মহকুমায় বিক্ষোভ শুরু করলেন রেশন ডিলাররা। তাঁদের অভিযোগ, উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই এই প্রকল্প চালু করার কথা ঘোষণা করায় রীতিমতো সমস্যার মুখে পড়েছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে আরামবাগ খাদ্য নিয়ামকের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান জেলার শতাধিক রেশন ডিলার।

Ration dealers protested against duare ration project

রেশন ডিলারদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার আয়োজিত দুয়ারে রেশন প্রকল্পের জেরে আমজনতার ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, প্রত্যেক বাড়ির দুয়ারে রেশন পৌঁছনো কার্যত অসম্ভব বলেই অভিযোগ ডিলারদের। কারণ, বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছনোর মতো প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই তাদের কাছে।

এক রেশন ডিলারের কথায়, “আমাদের পক্ষে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন পৌঁছনো সম্ভব নয়। এক-একজন ডিলারের তত্ত্বাবধানে  কম করে হলেও হাজার তিনেক পরিবার থাকে। গড়ে সেই সংখ্যাটা যদি দেড়হাজার ধরা হয়, তাহলে দেড় হাজার বাড়িতে কুইন্টাল কুইন্টাল চাল-ডাল পৌঁছনো কি সম্ভব? সেক্ষেত্রে যাতায়াতের জন্য গাড়ি দরকার। সরকার সেই গাড়ি কেনার ভর্তুকি স্বরূপ ১লক্ষ টাকা দিতে প্রস্তুত। অথচ, বাজার থেকে ওই গাড়ি কিনতে গেলে ৫লক্ষ টাকাতেই হয়ে যাবে। সেখানে সরকারের ১লক্ষ টাকা ভর্তুকি পাওয়ার জন্য ৬ লক্ষ টাকা কেন ব্যয় করব? বিশেষ করে সেই  টাকা যখন কিস্তিতে পাব! তেলের খরচ, ড্রাইভার খরচ এসব তো ছেড়েই দিলাম।”

অন্য আরেক ডিলার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণ অবিবেচক। আমরা গত দশ-বারো বছর ধরে রেশন ডিলার হয়ে কাজ করছি। রাজ্য সরকার যে নিয়ম করেছেন তাতে আমরা অপমানিত বোধ করছি। আমাদের যা যা বলা হয়েছিল, মেশিন কেনা থেকে শুরু করে রেশন জমা রাখার জন্য গুদাম বানানো সবই করেছি। কিন্তু, এখন বলা হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন দিতে হবে। কই দুয়ারে সরকারের শিবিরে তো এমন হচ্ছে না! এটা কি আমাদের একা ডিলার ও দুই-তিনজন সহযোগী নিয়ে করা সম্ভব? পরিকাঠামো না তৈরি করেই আমাদের উপর এই দায়ভার চাপিয়ে দেওয়ার অর্থ কি! এইভাবে যদি বাড়ি বাড়ি রেশন দিতে হয়, তাহলে আমাদের জন্য আর কি বা বাঁচবে! আমরা চাই যোগ্য পরিকাঠামোর রূপায়ণ হলেই এই প্রকল্প চালু হোক। তার আগে নয়।”

মানুষের পাশে ভরসা নিয়ে একমাত্র দাঁড়াতে পারে বামপন্থীরা, বললেন সুজন চক্রবর্তী

উল্লেখ্য, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যে শুরু হতে চলেছে দুয়ারে রেশন প্রকল্প। রেশন সামগ্রী বাড়ি–বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে রেশন ডিলার সংগঠনের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বৈঠক সেরেছে রাজ্য সরকার। প্রকল্পের স্বার্থে ডিলারদের অতিরিক্ত কমিশন ও গাড়ি কেনার জন্য ভর্তুকি দেওয়ার প্রস্তাব বিবেচনা করেই ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু, বাড়িতে রেশন পৌঁছে দেওয়ার খরচের বোঝা উপভোক্তাদের উপরে চাপানো যাবে না বলেই নির্দেশ রাজ্য সরকারের।

২ কেন্দ্রের নির্বাচন ও ৫ কেন্দ্রের দ্রুত উপনির্বাচনের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে

খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, ১৫ শতাংশ রেশন দোকানকে কাজে লাগিয়ে পরীক্ষামূলক এই প্রকল্পের প্রয়োগ শুরু হবে। অক্টোবর মাসে দোকানের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। ভাইফোঁটার পর থেকেই পুরো-দমে শুরু হয়ে যাবে দুয়ারে রেশন প্রকল্প। প্রথম থেকেই খাদ্যসামগ্রীর ওজন ঠিক রাখার উপরে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত পরিমাণে খাদ্যশস্য উপভোক্তাকে দিতে হবে ই–পাস যন্ত্রের মাধ্যমে। সেখানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেশন দেওয়া-নেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনলাইন পরিষেবা ব্যবহার করতে হবে ডিলারদের এমনই নির্দেশ রাজ্য সরকারের।

Copyright © 2024 NEWS24-BENGALI.COM | All Rights Reserved.

google-news