ওয়েব ডেস্ক: কোলেস্টেরল হল আমাদের শরীরের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোলেস্টেরল একবার শরীরে ঢুকে গেলে খাবার দাবারে অনেক বদল আনতে হয় সঙ্গেই নানা ধরনের ওষুধ পথ্য তো রয়েছেই। তবে আয়ুর্বেদের বেশ কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে সহজেই কিন্তু এর থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
কোলেস্টেরল আসলে কী?
এটি এমন এক চর্বি তথা মাখন জাতীয় পদার্থ যেটি দৈহিক কোষগুলি তে পাওয়া যায়। সবথেকে বড় কথা, লিভার থেকে এটি তৈরি হয়। সামান্য পরিমাণে শরীরে থাকা গুরুত্বপূর্ণ তবে অতিরিক্ত মাত্রায় থাকলে এর থেকে প্রাণঘাতী ঝুঁকিও থাকতে পারে। সঙ্গেই হার্টের সমস্যা তো রয়েছেই। এছাড়াও বেশ কিছু খাবারেও কোলেস্টেরল থাকে, সেগুলি কম খাওয়াই ভাল।
সাধারণত দুই ধরনের কোলেস্টেরল হয়- এলডিএল ও এইচডিএল। এইচডিএল হল ভালো কোলেস্টেরল। এই কোলেস্টেরল শরীরে বেশি থাকা ভালো। অপরদিকে রয়েছে খারাপ কোলেস্টেরল বা এলডিএল। এই এলডিএল শরীরে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
এলডিএল রক্তে বেশি থাকলে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। এক্ষেত্রে এই এলডিএল জমে রক্তনালীর মধ্যে। ফলে রক্তপ্রবাহ ঠিকমতো হয় না। এই কারণে দেখা দিতে পারে হার্ট অ্যাটাক থেকে শুরু করে স্ট্রোকের মতো ঘাতক রোগ। তাই প্রতিটি মানুষকে কোলেস্টেরল নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। আর রক্তে কোলেস্টেরলের সমস্যা মিটিয়ে দিতে পারে প্রাচীন ভারতীয় কিছু ভেষজ। আসুন জানা যাক।
আমলকী: যে কোনও ফলের মধ্যে আমলকীকে বিশেষ গুরুত্ব দেয় আয়ুর্বেদ। এই ফলে ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এদিকে এই ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই ফল আপনি নানাভাবে খেতে পারেন। এই ফল কাঁচা খাওয়া যেতে পারে। আবার শুকিয়ে নিয়েও খাওয়া যাতে পারে এই ফল। এক্ষেত্রে রোজ এই ফল খাওয়া যায়। ছবি সৌজন্যে: পিক্সাবে
জিরে: আমাদের প্রতিটি রান্নায় ব্যবহার হয়ে আসছে জিরে। এই মশলা স্বাদের জন্যই মূলত এই ব্যবহার হয়। তবে এই মশলা কিন্তু শরীরের নানা উন্নতিতেও কাজ করতে পারে। সেক্ষেত্রে খাওয়ার পর জিরে খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা জিরে খাওয়াই ভালো। এছাড়া জিরে আপনি বেটে পাওডার করেও খেতে পারেন। চায়ের সঙ্গেও জিরে মিশিয়ে খাওয়া যায়।
রসুন
বাঙালি রান্না ঘরে রসুনের উপস্থিতি সবসময় রয়েছে। এই বিশেষ মশলা মাছ, মাংস সহ বহু রান্নায় ব্যবহার হয়। মূলত রান্নায় গন্ধ যোগ করতেই এই মশলা ব্যবহার হয়। পাশাপাশি রসুনের স্বাদও অনন্য। তবে এসব বাদ দিলেও এই ভেষজের রয়েছে অনন্য গুণ। রসুনের মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নানা সমস্যার সমাধান করতে পারে। এমনকী রসুন কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতেও পারে।
আয়ুর্বেদে ত্রিফলার গুণ অসীম, জানুন এর বিশেষত্ব
লেবু: লেবুর মধ্যে রয়েছে ভালো পরিমাণে ভিটামিন সি। এছাড়া লেবুর মধ্যে থাকা নানা উপকারী উপাদান কোলেস্টেরলের মুক্তিতে সাহায্য করে। লেবুর মধ্যে পাতিলেবু, কমলালেবু বা যেই লেবু পাবেন তাই খান। এভাবেই সমস্যা হবে দূর। তাই আর চিন্তা নেই।
আদা: হাতের কাছে থাকা আরও এক ভেষজ হল আদা। নানা রান্নায় এই মশলা ব্যবহার করা হয়। আদার মধ্যে থাকা নানা উপকারী উপাদান পারে কোলেস্টেরল দূর করতে। এরমধ্যে রয়েছে অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ। ফলে রক্ত জমাটে বাধা দেয় আদা। এক্ষেত্রে আদা সাধারণভাবে খাওয়ার পাশাপাশি চায়ে এবং রান্নাতেও খেতে পারেন।
অর্জুন: এটা হৃৎপিণ্ডের জন্য দারুণ। এই গাছের ছাল আপনি দুধে মিশিয়ে পান করতে পারেন। এছাড়া অর্জুনের চা শোয়ার আগে পান করা যায়। অন্যদিকে সকালেও আপনি খেতে পারেন এই ছাল। আবার আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো অর্জুনের ওষুধ খেতে পারেন। তাই আর চিন্তা নেই।
আপনি কি মুরগির মেটে পছন্দ করেন না ? জেনে নিন এর পুষ্টি গুন
ত্রিফলা: আমলকী, হরিতকী ও বহেরা মিশিয়ে তৈরি হয় ত্রিফলা। আয়ুর্বেদে ত্রিফলার অনেক গুণ বর্ণিত করা রয়েছে। বহু রোগের চিকিৎসায় এই ত্রিফলা ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও খেতে পারেন ত্রিফলা (Triphala)। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই ত্রিফলা খেতে হবে। কিন্তু ত্রিফলা নিজের বুদ্ধিতে খেতে যাবেন না। এক্ষেত্রে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ত্রিফলা খান। তবেই ভালো থাকতে পারবেন।
তাই শুধু ওষুধ নয়, বরং আয়ুর্বেদের সঙ্গেও আপনি জুড়তে পারেন।