ওয়েব ডেস্ক: শরীর সুস্থ রাখতে অত্যন্ত কার্যকরী যোগ ব্যায়াম। দিনের যে কোনও সময় যোগাসন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শরীর ও মন— দুয়ের উপরেই যোগের প্রভাব অপরিসীম। যোগাসন মানসিক জড়তা ও অবসন্ন ভাব কাটাতে সাহায্য করে। খাবার খাওয়ার ৩-৪ ঘণ্টা পরে, হালকা খাবারের পরে, চা বা এই জাতীয় পানীয়ের ৩০ মিনিট পরে এবং জল খাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পরে যোগাসন করলে উপকৃত হবেন।
যোগাসনের আদর্শ সময় কোনটি ?
বিশেষজ্ঞদের মতে, যে কোনও সময়ই যোগাসন করা যায়। সকাল-সন্ধ্যা যে কোনও সময় যোগাসন করা সম্ভব। খাবার খাওয়ার ৩-৪ ঘণ্টা পরে, হালকা খাবারের পরে, চা বা এই জাতীয় পানীয়ের ৩০ মিনিট পরে এবং জল খাওয়ার ১০-১৫ মিনিট পরে আসন করলে উপকৃত হবেন।
কোন কোন সমস্যাই কোন যোগাসন করবেন ?
১) শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকলে
শ্বাসকষ্টের সমস্যার মোকাবিলায় সিদ্ধাসন খুব উপকারী। এর জন্য, একদম সোজা হয়ে অর্থাৎ মেরুদণ্ড সোজা রেখে পা গুটিয়ে বসুন। অনেকটা পদ্মাসনের মতোই দেখতে লাগে এটা। তারপর ধীরে ধীরে শ্বাস গ্রহণ ও শ্বাসত্যাগ করতে হবে।
এই যোগাসন করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, পাশাপাশি ফুসফুসের কার্যক্ষমতাও বাড়ে।
অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়া শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর, জেনেনিন প্রোটিনের সঠিক মাত্রা
২) হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে
আপনি কি প্রায়ই হজমের সমস্যায় ভোগেন? তাহলে এর থেকে মুক্তি পেতে পবনমুক্তাসন করতে পারেন। এক্ষেত্রে, চিৎ হয়ে শুয়ে প্রথমে ডান পা ভাঁজ করে বুকের সঙ্গে লাগাতে হবে, তখন বাম পা সোজা থাকবে। তারপর একই ভাবে বাম পা ভাজ করতে হবে, তখন ডান পা সোজা থাকবে। সবশেষে দুটো পা একসঙ্গে ভাঁজ করে বুকের কাছে ধরতে হবে।
এই যোগাসন করলে গ্যাস, অম্বল, হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয় এবং খিদে বাড়ে।
৩) অনুলোম-বিলোম
শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা ও স্নায়ুর সমস্যায় ভুগছেন, এমন রোগীদের জন্য অনুলোম-বিলোম অত্যন্ত উপকারী। এর জন্য, প্রথমে মেরুদণ্ড সোজা রেখে পদ্মাসনের মতো করে বসুন। এবার এক হাতের বুড়ো আঙুল দিয়ে বাম নাক চেপে ধরে ডান নাক দিয়ে বড় করে শ্বাস নিন। শ্বাস ধরে রেখে মনে মনে দশ পর্যন্ত গুনুন। তারপর ওই একই হাতের তর্জনী দিয়ে ডান নাক চেপে বাম নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।
বর্ষাকালে সর্দি, কাশি, জরে আক্রান্ত হতে পারেন, দেখুন এর থেকে বাঁচার সহজ উপায়
৪) হাঁটুর ব্যথা কমাতে
হাঁটুর ব্যথায় ভুগছেন? এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে উত্থানপদাসন করতে পারেন। চেয়ারে বসে পা তোলা ও নামানো অর্থাৎ সিটেড লেগরাইজ বা পেলভিস ব্রিজ-ও করতে পারে। এতে থাইয়ের পেশি সঙ্কুচিত-প্রসারিত হয়। চিৎ হয়ে শুয়ে হাঁটু ভাঁজ করে উপরের দিকে তোলাকে পেলভিস ব্রিজ বলে। এছাড়া, কোমরের যন্ত্রণা কমাতে ভুজঙ্গাসন করতে পারেন।
৫) পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যা
বর্তমানে পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যা ঘরে ঘরে দেখা যাচ্ছে। বেশিরভাগ মহিলাই এই সমস্যায় ভোগেন। এর অন্যতম উপসর্গ হল – পিরিয়ডের সমস্যা বা সঠিক সময়ে পিরিয়ড না হওয়া। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ধনুরাসন করতে পারেন। ভুজঙ্গাসনও করা যেতে পারে। এটি এটি ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা সক্রিয় করতে সহায়তা করে।
খুশকি ও চুল পড়ার সমস্যা? জানে নিন নিরাময়ের কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি
৬) ডায়াবেটিস
গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এক্ষেত্রে, ইনসুলিনের অপর্যাপ্ত উৎপাদন বা দেহে ইনসুলিনের অপর্যাপ্ত প্রতিক্রিয়ার কারণে গ্লুকোজ স্তর বৃদ্ধি পায়। ডায়াবেটিস রোগীরা দেহের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করতে অর্ধ মৎস্যেন্দ্রাসন করতে পারেন। এছাড়া, ডায়াবেটিস রোগীরা চক্রাসনও করতে পারেন।
৭) মাইগ্রেনের সমস্যা
মাইগ্রেন একটি ক্রনিক নিউরোলজিক্যাল ডিজিজ, যার কারণে ঘন ঘন মাঝারি থেকে গুরুতর মাথা ব্যথা হতে পারে। এর জন্য পদ্মাসন ও শীর্ষাসন খুব উপকারী। পদ্মাসন করলে মাইন্ড রিল্যাক্স করে এবং মাথা ব্যথা উপশম করে। আর শীর্ষাসন মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে। একে সমস্ত যোগাসনের রাজা বলা হয়।
৮) থাইরয়েড
থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে হলাসন এবং মৎস্যাসন করুন। হলাসন, ঘাড় সংকোচনে সাহায্য করে এবং থাইরয়েড গ্রন্থি উদ্দীপিত করে।