কলকাতা: কয়েকমাস আগেই ভারাত সরকার সোশ্যাল মিডিয়ায় দের ওপর আইটি বিধিনিষেধ আরপ করার জন্য একটি নতুন Privacy Policy নিয়ায়ে আসে। কি সেই Privacy Policy? নতুন নিয়মে হোয়াটসঅ্যাপ এবং অনুরূপ সংস্থাগুলিকে তাদের মেসেজিং অ্যাপের দ্বারা পাঠানো মেসেজগুলির ‘অরিজিন’ অর্থাৎ সর্বপ্রথম কে এই মেসেজটি পাঠিয়েছে, তার উৎস সম্পর্কে খোঁজ রাখতে হবে ৷
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নতুন Privacy Policy নিয়ে সংঘাত এখন চরমে ৷ ফেসবুকের মালিকানাধীন মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) ভারত সরকারের নতুন আইটি বিধিনিষেধগুলির (IT Rules) বিরুদ্ধে এবার আদালতের দ্বারস্থ হল। এই নিয়মের বিরুদ্ধে হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে ২৫ মে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করা হয় ৷
সংস্থার দাবি, মেসেজিং অ্যাপে চ্যাট ট্রেস করার অর্থ হল প্রত্যেকের হোয়াটস্যাপে সেন্ড করা প্রতিটি মেসেজের ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট রাখতে বলার সমান। এটি করলে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বলে আর কিছু থাকবে না। ফলে জনসাধারণের গোপনীয়তার অধিকার বিঘ্নিত হবে। এই সমস্যার সমাধানে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা সংস্থা চালিয়ে যাবে বলেই হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ৷
WhatsApp-এর এই নতুন গোপনীয়তা নীতি প্রত্যাহার করার জন্য কয়েকদিন আগেই ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নোটিস পাঠানো হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব চাওয়া হয় কেন্দ্রের তরফে। যদি এই কোম্পানির তরফে কোনও জবাব না মেলে তবে, আইনি পথে হাঁটবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছিল কেন্দ্র। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের অভিযোগ, “এটি দায়িত্বজ্ঞানহীন, WhatsApp-এর তরফে ভারতীয় ব্যবহারকারীদের উপর থেকে এই অন্যায় শর্ত আরোপের অবস্থানটি বদল করা উচিত।’ হোয়াটসঅ্যাপের তরফে জানানো হয়, প্রাইভেসি পলিসি প্রত্যাহার করা যাবে না। তবে যাঁরা এই নতুন পলিসি মানবেন না, তাঁদেরও কোনও ফিচার্স থেকে বঞ্চিত করা হবে না, ভারত সরকারকে চিঠির উত্তরে জানায় WhatsApp।
হোয়াটসঅ্যাপ তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ কেন্দ্রের এই নয়া নিয়মে গ্রাহকদের গোপনীয়তার সুরক্ষা ভঙ্গ হবে’। ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রাহক ৪০ কোটি। কী ভাবে তাঁদের গোপনীয়তা রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে লাগাতার আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। একই সঙ্গে ভারত সরকারের সঙ্গেও টানা আলোচনা চালানো হচ্ছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে সংস্থার পক্ষ থেকে।
তাহলে কি বুধবার থেকে ভারতে Facebook, Twitter, Instagram বন্ধ হয়ে যাবে?
১৫ মে WhatsApp-এর নতুন গোপনীয়তা নীতিকে কর্যকর করার পর সে বিষয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভারতের করা আবেদন প্রসঙ্গে জবাব চেয়ে দিল্লি হাইকোর্ট ভারত সরকারের কাছে জবাব চেয়েছে। ভারতের তরফে অভিযোগ করা হয়, এই নতুন গোপনীয়তা নীতি ভারতের সংবিধানের আওতায় ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করেছে। প্রধান বিচারপতি ডিএন প্যাটেল এবং বিচারপতি জ্যোতি সিংয়ের একটি বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকার, WhatsApp এবং মূল সংস্থা Facebook-কে প্রতিক্রিয়া জানাতে নোটিস জারি করে।
সম্প্রতি গোপনীয়তা নীতি আপডেট গ্রহণ করার জন্য ব্যবহারকারীদের ১৫ মে-র তারিখের সময়সীমা বাতিল করে WhatsApp। সংবাদপত্র গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই সংস্থার তরফে বলা হয়, যদি কেউ এই গোপনীয়তা নীতি গ্রহণ না করে তবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাদের অ্যাপের অনেক কার্যকারিতা বন্ধ করে দেওয়া হবে। তাদের সেক্ষেত্রে তখন সীমিত কার্যকারিতার মধ্যে রাখা হবে। WhatsApp-এর এই সীমাবদ্ধতার তালিকায় রয়েছে চ্যাট (chat), নোটিফিকেশন (notifications) এবং কলের (calls) মতো সুবিধাগুলিকে। সুতরাং কোম্পানির নতুন আপডেট গ্রহণ না করলে এই সুবিধাগুলি থেকে বঞ্চিত করা হবে ব্যবহারকারীদের। ব্যবহারকারীরা ‘Agree’ অপশনে ক্লিক করে এই নতুন নীতি গ্রহণ করতে পারবেন।
এবার Red Volunteers দের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বিজেপি বিধায়ক
প্রথমে ৮ ফেব্রুয়ারি WhatsApp-এর গোপনীয়তা নীতি বাস্তবায়নের প্রথম তারিখ থাকলেও পরে নানা বিতর্কের সম্মুখীন হওয়ায় তা পরিবর্তন করে ১৫ মে করা হয়। এখন সেই তারিখও পিছিয়ে দিয়েছে WhatsApp। তবে ভারত যে কোনও ভাবেই এই নীতি মানতে নারাজ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না!