ওয়েব ডেস্ক: লখিমপুর খেরিতে চার কৃষক-সহ আটজনের মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বৃহস্পতিবার এইভাবেই মর্মান্তিক ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সাথে এই ঘটনাই এফআইআর-এর স্টেটাস কি এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা প্রসঙ্গে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এই তথ্য জানতে চেয়ে যোগী প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করল সুপ্রিম কোর্ট।
প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এদিন লখিমপুর কাণ্ডের স্বতঃপ্রণোদিত মামলার প্রথম শুনানি হয়। উত্তরপ্রদেশ সরকারের সিনিয়র আইনজীবী গরিমা প্রসাদ এদিন আদালতে জানান, রাজ্য সরকার একটি স্টেটাস রিপোর্ট কোর্টে জমা দেবে। একদিন সময় চেয়েছে রাজ্য সরকার। বিচারপতিদের বেঞ্চ শুক্রবার সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে শুনানি করবে।
এই রিপোর্টে রবিবারের ঘটনায় কোন আটজনের মৃত্যু হয়েছিল এবং সরকারের তরফে কি কি পদক্ষেপ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনাকে দুঃখজনক বলে আখ্যা দিতে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চের তরফে জানতে চাওয়া হয়, ওই ঘটনায় এখনও অবধি কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্যান্ডোরার ঝাঁপি খুলতেই ফাঁস ভারতীয় প্রভাবশালীদের নাম
জবাবে উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়, মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং একটি তদন্তকারী কমিটিও গঠন করা হয়েছে এক প্রাক্তন বিচারপতির অধীনে। ওই কমিটি লখিমপুরে ঘটনা সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ শুনবে এবং আগামী দুই মাসের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেবে। রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করে প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ বলেন, “সাধারণ মানুষের ক্ষোভ যে আপনারা সঠিকভাবে এফআইআর দায়ের করছেন না এবং তদন্তও সঠিকভাবে শুরু করা হয়নি।”
উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্যের আসার কথা ছিল লখিমপুর খেরিতে। কেন্দ্রের ৩টি বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে মৌর্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করেন স্থানীয়রা। সেই সময় ৪ জন কৃষকের উপর দিয়ে এসইউভি চালিয়ে পিষে মারা হয়। এর ফলস্বরূপ ২ জন বিজেপি কর্মী এবং একজন গাড়িচালক সহ ৪ জনকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে।
আর ভ্যাঁ-ভোঁ-প্যাঁ-পোঁ নয়, গাড়ির হর্নে এবার বাজবে সেতার, তবলা : নীতিন গডকড়ি
প্রসঙ্গত, বুধবারই শীর্ষ আদালত লখিমপুর কাণ্ডে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে। উত্তরপ্রদেশের আইনজীবী শিবকুমার ত্রিপাঠী এবং সি এস পাণ্ডার চিঠির ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়। আইনজীবী ত্রিপাঠী চিঠিতে জানান, আমার আশা আপনারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন। বেশ কয়েকজন কৃষক মারা গিয়েছেন প্রশাসনের গাফিলতিতে। এই ইস্যুতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
কাউন্সিল সওয়াল করে, মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে উত্তরপ্রদেশ এবং গোটা দেশে। রাজ্য সরকার কৃষকদের অসহায়তার জন্য কোনও পদক্ষেপ করেনি। তবে আইনজীবী প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছেন এই ঘটনায় তিকোনিয়া থানায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিস মিশ্র ও অন্যদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ নম্বর ধারায় (খুন) এফআইআর দায়ের করা হয়। একটি সিট গঠন করা হয়েছে তদন্তের জন্য। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।