ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যে যখন ভুয়ো আইপিএস, ভুয়ো সিবিআই, ভুয়ো আইএএসের হদিশ মিলছে, তখন ভুয়ো ভিক্ষুককে ঘিরে শোরগোল পড়ে গেল। নাম মানিক শর্মা। আসল পেশা তিনি একজন সরকারি চাকুরে। টাকা জমানো তার একটা বড় নেশা! এর সেই নেশা পরিতৃপ্তি করতেই তিনি এই ভিক্ষা বৃত্তি কে বেছে নিয়েছেন। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে।
বাঙ্কে প্রায় কোটি টাকা সেভিংস রয়েছে। তবু মন ভরে না। আরও টাকা জমানোর নেশাতে বুঁদ হয়েই সরকারি কর্মী হয়েও প্রতিদিনই বাঁকুড়া স্টেশনের সামনে বসে ভিক্ষাবৃত্তি করতেন তিনি। সম্প্রতি বাঁকুড়া পুরসভার ভবঘুরেদের পুনর্বাসন বলে একটা অভিযান করে। সেখানে থেকেই তার পর্দা ফাঁস হয়। জানা গিয়েছে, কোভিড সংক্রমণ এড়াতেই গত ২১ তারিখ বাঁকুড়া পুর কর্তৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়ে ভবঘুরে, ভিখারিদের রাস্তা থেকে তুলে এনে একটি আবাসনে পুনর্বাসন দেয়। সেই ভবঘুরেদের মধ্যেই ছিলেন মানিক। তিনি নিজেকে ভবঘুরের পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অস্বাভাবিক আচরণে পুর-কর্মীদের সন্দেহ হয়। তারপর পুর কর্তৃপক্ষ খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পারেন, তিনি ভবঘুরে বা ভিখারি নন, স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী। মানিক রাকেশ নামে পরিচয় দিতেন। তবে তাঁর আসল নাম মানিক শর্মা বলে দাবি করেছেন স্ত্রী।
এরপর পুলিশি জেরায় মানিক তাঁর আসল পরিচয় জানান। বাঁকুড়া পুরসভার পুর মণ্ডলীর সদস্য দিলীপ আগরওয়াল জানান, বাঁকুড়ার সদর থানা এলাকার বাসিন্দা বছর ৪১-এর মানিক বাঁকুড়ার গৌরীপুর হাসপাতালে ফার্মাসিস্ট। যদিও তাঁর সরকারি চাকরির কথা পরিবার ছাড়া বিশেষ কেউ জানত না। ফলে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় বাঁকুড়া স্টেশনে ভবঘুরেদের সঙ্গে বসেই ভিক্ষাবৃত্তি করতেন তিনি। বাঁকুড়া পুরসভার তরফে মানিকের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাঁদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু মানিক তাঁদের দেখভাল করেন না। কেবলই ব্যাঙ্কের সেভিংস বাড়িয়ে যান।
শহরে ফের উচ্চপদস্থ Police আধিকারিক পরিচয়ে ‘প্রতারণা’, গ্রেফতার প্রাক্তন সিভিক ভলান্টিয়ার
তাঁর স্ত্রীর কথায়, ‘টাকা জমানোর নেশাতেই চাকরির বাইরে ভিক্ষা করেন স্বামী। শুনেছি, দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। চার বছর আগে একটিতে ৮০ লক্ষ টাকা ছিল মনে পড়ে। তবে আমাকে ও মেয়েকে কানাকড়ি দেন না।’ মানিকের স্ত্রীর এহেন কথা শুনে তাজ্জব বনে গিয়েছে বাঁকুড়ার পুর কর্তৃপক্ষও। রাকেশের মানসিক সমস্যা রয়েছে বলেই মনে করেন তাঁরা।