ওয়েব ডেস্ক: কসবা ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে গ্রেফতার আরও এক জন। গ্রেফতার করা হয়েছে দেবাঞ্জন দেবের (Debanjan Deb) দেহরক্ষী অরবিন্দ বৈদ্য কে। তাঁকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের STF । অরবিন্দ বৈদ্য কে নিয়ে দেবাঞ্জন কাণ্ডে গ্রেফতার হলেন মোট ৫ জন।
জানা যাই বৃহস্পতিবার অরবিন্দ বৈদ্যকে তলব করে লালবাজার। নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল বেশ কিছু নথি। দীর্ঘক্ষণ তাকে জেরা করা হয়। তার উত্তরে একাধিক অসঙ্গতি মেলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীরা মনে করছেন, দেবাঞ্জনের কারবার সম্পর্কে ভালোভাবেই জানত এই অরবিন্দ।
প্রথম থেকেই অরবিন্দ নিজেকে নিরপরাধ বলে দাবি করে আসছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, দেবাঞ্জনের কারবার সম্পর্কে তিনি কিছুই আগে থেকে জানতেন না। গ্রেফতারির পরই পুলিশ যখন তদন্ত করেছে, গোটা বিষয়টি তাঁর সামনে স্পষ্ট হয়। কিন্তু অরবিন্দর বক্তব্য মানতে নারাজ ছিলেন তদন্তকারীরা। পুলিশের যুক্তি এক জন দেহরক্ষী, যিনি সর্বক্ষণ দেবাঞ্জনের সঙ্গে রয়েছে, কীভাবে কিছুই জানতেন না তিনি?
অরবিন্দের ব্যাঙ্কের নথি খতিয়ে দেখার পর তদন্তকারীরা সেখানে গড়মিল খুজেপান। দেখাযায় অরবিন্দের মাসিক বেতন প্রচুর। আজ তাঁকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে। এদিকে, বৃহস্পতিবারই দেবাঞ্জনের কসবার অফিস ঘরের মালিক অশোককুমার রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কোভিডের কারণে এবার সরকারি খরচে রাশ টানল নবান্ন
জানা গিয়েছে, অশোক কুমার রায়ের থেকে অফিস ভাড়া নেওয়ার সময় কলকাতা পুরসভার থেকে নেওয়া ট্রেড লাইসেন্সের কপি দেখানো হয়েছিল। ‘ইন্সটিটিউট অফ আরবান প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কেএমসি’ এই নামে ট্রেড লাইসেন্স জমা দিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে তাঁর অফিস ভাড়া নিলেও অফিসের বাইরে থাকা ব্যানারে কোথাও ইন্সটিটিউট কথাটির উল্লেখ করেননি। শুধুমাত্র ‘আরবান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্লানিং ডেভেলপমেন্ট’ কথাটি লেখা ছিল। যাতে কারও সন্দেহ না হয় যে এটি পুরসভার অফিস নয়।
এদিকে সংঘাতের সুর চড়িয়ে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় একটি ছবি সামনে এনেছেন। ছবি প্রকাশ্যে এনে তৃণমূল সাংসদের দাবি, রাজভবনে রাজ্যপালের ঠিক পিছনেই, যিনি দাঁড়িয়ে রয়েছেন, তিনি ভুয়ো আইএএস অফিসারের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী অরবিন্দ বৈদ্য। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “শোনা যাচ্ছে এই সিকিওরটির মাধ্যমে কোও বিশেষ ব্যক্তির কাছে মাঝেমধ্যে খামটাম যেত, উপহার যেত, যারা তদন্ত করছে, তাদের গোচরে আনব বিষয়টি, যদি কোনও যোগসাজশ পাওয়া যায় তাহলে দেশের পক্ষে ভয়ঙ্কর, আমরা সিটকে বলব।“
Student Credit Card প্রকল্প চালু করল রাজ্য, কি কি সুযোগ-সুবিধা, কিভাবে আবেদন করবেন? জেনে নিন
ভুয়ো ভ্যাকসিন। জাল সরকারি স্ট্যাম্প। কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করা। ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ। এই প্রেক্ষাপটেই এবার দেবাঞ্জনের টাকার উৎস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। এখনও অবধি দেবাঞ্জনের ৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কেই ৩টি অ্যাকাউন্ট ছিল দেবাঞ্জনের। ওই ব্যাঙ্কেই কলকাতা পুরসভার নামে খোলা কারেন্ট অ্যাকাউন্টও খোলা হয়। ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের কাছে ইতিমধ্যেই নথি চেয়ে পাঠিয়েছে লালবাজার। বেশ কিছু নথি ব্যাঙ্কের তরফেও জমাও দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর।