Table of Contents
চা থেকে শুরু করে কফি এবং মিষ্টান্ন পর্যন্ত দৈনন্দিন জীবনে দুধ ব্যবহার করা হয়। দুধের উচ্চ পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা শিশু থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সকলের জন্যই উপকারী। দুধ খাওয়া কেবল আপনার হাড়কেই শক্তিশালী করে না বরং আপনার পেশীকেও শক্তিশালী করে এবং অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। অতীতে, বেশিরভাগ মানুষ বাড়িতে গরু বা মহিষ পালন করত অথবা দুগ্ধ কারখানা থেকে দুধ কিনে আনত। তবে, এখন প্যাকেটজাত দুধের ব্যবহার অনেক বেশি এবং অনেক মানুষ, বিশেষ করে শহরে, প্যাকেটজাত দুধের উপর নির্ভরশীল। আপনি হয়তো অনেকবার শুনেছেন যে প্যাকেটজাত দুধ পান করার আগে ফুটানোর প্রয়োজন হয় না কারণ এটি পাস্তুরিত। তাহলে, আসুন জেনে নেওয়া যাক পাস্তুরিতকরণ কি এবং কেন এটি করা হয়।
দুধ ছাড়াও আরও অনেক পণ্য পাস্তুরিত করে প্যাকেজ করা হয়। কিন্তু আপনি কি এর পেছনের কারণ এবং পণ্যের উপর এর প্রভাব জানেন? এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার পাশাপাশি, আমরা জানব দুধ থেকে আমরা কত পুষ্টি উপাদান পাই।
১০০ গ্রাম দুধে কত পুষ্টি উপাদান থাকে?
মার্কিন কৃষি বিভাগের মতে, ১০০ গ্রাম দুধে ৩.২৭ গ্রাম প্রোটিন, ১২৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১১.৯ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ১০১ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১৫০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম, ৩৭.৯ মাইক্রোগ্রাম আয়োডিন এবং ১.০ মাইক্রোগ্রাম সেলেনিয়াম থাকে। ভিটামিনের কথা বলতে গেলে, দুধে B12, ভিটামিন A, লুটিন, জেক্সানথিন, ভিটামিন D, ভিটামিন B6, B1, B2 এবং B3 ও থাকে।
পাস্তুরাইজেশন কি?
পাস্তুরাইজেশন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে দুধকে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয় এবং তারপর দ্রুত ঠাণ্ডা করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি ইস্ট, ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাককে মেরে ফেলে। এটি নিশ্চিত করে যে দুধ দীর্ঘ সময়ের জন্য নিরাপদ থাকে। এটি কেবল দুধের শেলফ লাইফ বাড়ায় না বরং অনেক রোগ থেকেও রক্ষা করে। এই কারণেই কাঁচা দুধ পান করার আগে ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : ২০ বছর বয়সের পর মহিলাদের নিয়মিত এই পরীক্ষাগুলি করা উচিত
পাস্তুরাইজেশন কে শুরু করেছিলেন?
বিয়ার, ওয়াইন এবং দুধের মতো পণ্যের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলার জন্য লুই পাস্তুর ১৯ শতকে পাস্তুরাইজেশন প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি জলাতঙ্ক এবং অ্যানথ্রাক্সের মতো গুরুতর রোগের জন্য টিকাও তৈরি করেছিলেন।
বিশেষজ্ঞরা কি বলেন?
গুরুগ্রামের নারায়ণ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডঃ মুকেশ নন্দল ব্যাখ্যা করেন যে পাস্তুরাইজেশন প্রক্রিয়ায় দুধকে ৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গরম করা এবং তারপর দ্রুত ঠাণ্ডা করা জড়িত। এই প্রক্রিয়াটি দুধের সমস্ত ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলার জন্য করা হয়, কারণ কাঁচা দুধ অনেক সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন : মেনোপজের সময় হরমোনের ভারসাম্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য ডায়েট টিপস জানুন
সম্ভাব্য জটিলতাগুলি কি কি?
ডঃ মুকেশ নন্দল বলেন যে যদি দুধ পাস্তুরাইজ করা না হয় বা সিদ্ধ না করা হয় এবং কাঁচা দুধ পান করা হয়, তাহলে যক্ষ্মা, ব্রোকলি এবং টাইফয়েডের মতো সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এই সংক্রমণগুলি মহিষ বা গরুর থলি থেকে বা পরিবেশ থেকে আমাদের পেটে পৌঁছাতে পারে, যা আমাদের অসুস্থ করে তোলে। আসলে, গরু এবং মহিষ প্রায়শই মলের মধ্যে বসে থাকে। মাছি এবং বিভিন্ন পোকামাকড় কাছাকাছি থাকে এবং তারা তাদের সংস্পর্শে আসে।
পুষ্টির উপর প্রভাব
প্রায়শই প্রশ্ন ওঠে: পাস্তুরাইজেশনের সময় দুধ গরম করলে কি এর পুষ্টিগুণ প্রভাবিত হয়? এই প্রক্রিয়ায় মাত্র ১৫ সেকেন্ডের জন্য দুধ গরম করা হয় এবং তাপমাত্রা স্থির থাকে। অতএব, এটি কেবল ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলে এবং দুধের পুষ্টিগুণকে প্রভাবিত করে না।
