Table of Contents
খুশকি আজকাল একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীতকালে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়। এই ঋতুতে মাথার ত্বকে সাদা স্তর তৈরি হতে শুরু করে, যার ফলে চুলের চুলকানি এবং শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়। বাজারে অনেক খুশকি-প্রতিরোধী শ্যাম্পু পাওয়া গেলেও, অনেকেই বড় বড় দাবি করেন। তবে, অনেকেই অভিযোগ করেন যে খুশকি-বিরোধী শ্যাম্পু কোনও ফল দিচ্ছে না, বরং চুল আরও শুষ্ক করে তুলছে। যদি আপনারও একই অভিযোগ থাকে, তাহলে আমাদের কাছে আপনার সমস্যার সমাধান আছে।
দীর্ঘদিন ধরে খুশকি-বিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করলে আপনার চুলের ক্ষতি হচ্ছে, তাহলে আপনি বাড়িতে একটি ভেষজ শ্যাম্পু তৈরি করতে পারেন। এটি আপনার মাথার ত্বক পরিষ্কার করবে, ছত্রাক দূর করবে এবং আপনার চুলে নতুন উজ্জ্বলতা এবং কোমলতা আনবে। আসুন আমরা আপনাকে এটি তৈরির সহজ উপায় এবং আপনার চুলের জন্য এর আশ্চর্যজনক উপকারিতা সম্পর্কে বলি।
খুশকি দূর করার জন্য ঘরে তৈরি শ্যাম্পু
ঘরে খুশকি দূর করার শ্যাম্পু তৈরি করতে, আপনার ৫ থেকে ৬ টুকরো সাবান, ২ থেকে ৩ টুকরো শিকাকাই এবং ২ থেকে ৩ টুকরো আমলকী (যার সবই সহজেই ১০ থেকে ১৫ টাকায় পাওয়া যায়) প্রয়োজন। বাজারে বা অনলাইনে আপনি এই সমস্ত উপাদান সহজেই খুঁজে পেতে পারেন।
শ্যাম্পু তৈরির সহজ উপায়
শ্যাম্পু তৈরি করতে, সাবান বাদাম, শিকাকাই এবং আমলকী সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে, এই জল ১০-১৫ মিনিটের জন্য কম আঁচে ফুটিয়ে নিন। এটি কিছুটা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, মিশ্রণটি ম্যাশ করে ফেনা বের করে নিন। এবার এটি ছেঁকে একটি বোতলে সংরক্ষণ করুন। আপনার প্রাকৃতিক খুশকি দূর করার শ্যাম্পু প্রস্তুত। আপনি এটি সপ্তাহে ৩-৪ দিন ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পু লাগানোর পর, আলতো করে ম্যাসাজ করুন এবং ৩-৪ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
চুলের জন্য উপকারিতা
প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি এই ঘরে তৈরি অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু চুলের জন্য এক আশীর্বাদ। খুশকি দূর করার পাশাপাশি এটি আরও অনেক উপকারিতা প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, এটি ছত্রাকের সংক্রমণ এবং মাথার ত্বকের সংক্রমণ থেকে মুক্তি দেয়। এটি চুলকে গোড়া থেকে শক্তিশালী করে, চুল পড়া রোধ করে। রাসায়নিক মুক্ত হওয়ায় এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এটি চুলকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এবং কোমলতা দেয়।
আরও পড়ুন : শীতকালে স্নান না করলে কি পেটে গরম হয়? সত্য কথা জানুন
রিঠা, শিকাকাই এবং আমলার পুষ্টি
রিঠা – এতে স্যাপোনিন নামক একটি প্রাকৃতিক ফোমিং এজেন্ট রয়েছে, যা মাথার ত্বককে ক্ষতি না করে পরিষ্কার করে। এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা খুশকি এবং মাথার ত্বকের সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। এতে ভিটামিন A, D, E এবং K এর মতো পুষ্টিও রয়েছে, যা চুলের শিকড়কে শক্তিশালী করে এবং ভাঙা রোধ করে।
শিকাকাই – এটি একটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসাবে বিবেচিত হয় কারণ এতে ভিটামিন C, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিশেষ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে। এটি মাথার ত্বকের pH স্তরকে ভারসাম্যপূর্ণ করে, চুলকানি এবং শুষ্কতা কমায়। এর ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ম্যাগনেসিয়াম চুলের বৃদ্ধি উন্নত করে এবং চুল পড়া কমায়।
আমলকী – এটি ভিটামিন C-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস, যা চুলে কোলাজেন গঠন বৃদ্ধি করে, শিকড়কে শক্তিশালী করে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিফেনল, আয়রন এবং ফাইবারও রয়েছে, যা চুল পাকা রোধ করে, চুল চকচকে করে এবং রক্তসঞ্চালন বাড়ায়।
