Table of Contents
শীতকাল অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে আসে। ঠাণ্ডা ঋতুতে কানের রোগও বেশ সাধারণ হয়ে ওঠে। কানে ব্যথা সবচেয়ে সাধারণ। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে, এই ব্যথা এত তীব্র হতে পারে যে এটি অসহনীয় হয়ে ওঠে। এই ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে এবং এটিকে হালকা ভাবে নেওয়া উচিত নয়। যদি ব্যথা দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে, তবে এটি শ্রবণশক্তিকেও প্রভাবিত করতে পারে। আসুন কানে ব্যথা কেন হয়, এর চিকিৎসা এবং এটি প্রতিরোধের জন্য কি করা উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
শীতকালে অনেক ধরণের ভাইরাস সক্রিয় থাকে। তারা নাকে প্রবেশ করে এবং তারপর ইউস্টাচিয়ান টিউব (কানকে নাকের সাথে সংযুক্ত একটি পাতলা নল) দিয়ে কানে ভ্রমণ করে। যখন এই ভাইরাসগুলি কানে প্রবেশ করে, তখন তারা সংক্রমণ ঘটায়। যা কানে ব্যথার কারণ হয়।
কানে ব্যথা কেন হয়?
- যদি কোনও ব্যক্তির দীর্ঘস্থায়ী সাইনাস সংক্রমণ থাকে, তাহলে এটি কানের ব্যথার কারণও হতে পারে।
- দীর্ঘস্থায়ী গলা ব্যথার কারণে এই ব্যথা কানে পৌঁছাতে পারে।
- যদি কোনও ব্যক্তি বিমানে ভ্রমণ করেন, তাহলে উচ্চ উচ্চতায় ইউস্টাচিয়ান টিউবগুলি ব্লক হয়ে যায়, যা কানের ব্যথার কারণ হতে পারে।
- অতিরিক্ত কানের মোম জমাও কানের মোমের একটি প্রধান কারণ।
অতিরিক্ত কানের মোম কেন জমা হয়?
গাজিয়াবাদের একজন ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডাঃ বিপি ত্যাগী ব্যাখ্যা করেন যে নিয়মিত কান পরিষ্কার না করা এবং কান ভেজা না রাখার ফলে অতিরিক্ত কানের মোম জমা হতে পারে। কিছু লোক দীর্ঘস্থায়ী সর্দি বা ফ্লুতে ভোগেন, যা সাইনোসাইটিসের কারণ হতে পারে। সাইনোসাইটিস নাক এবং চোখেও ব্যথার কারণ হতে পারে, যা কান পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে, যার ফলে কানে ব্যথা হতে পারে। কানে জল প্রবেশ করলেও কানের মোম তৈরি হয়।
ডাঃ ত্যাগী বলেন যে যদি কোনও ব্যক্তির কানে জল প্রবেশ করে, তাহলে কানটি একপাশে কাত করুন এবং আলতো করে ঝাঁকান। জল নিষ্কাশনে সাহায্য করার জন্য কানের চারপাশে একটি উষ্ণ কম্প্রেস লাগান। কিছু মানুষ কানের জল পরিষ্কার করার জন্য হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে, কিন্তু এটি এড়িয়ে চলা উচিত। এটি কানের ক্ষতি করতে পারে।
আরও পড়ুন : মিথ নাকি সত্য! সিগারেট খেলে কি ঠোঁট কালো হয়? সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা
কানের ব্যথার ফলে কি কি সমস্যা হয়?
কানের ব্যথার ফলে আরও বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে সাধারণত অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে:
- কানে বাঁশির শব্দ
- শ্রবণশক্তি হ্রাস
- কান থেকে স্রাব
- মাথাব্যথা
- ব্যথার সাথে চুলকানির অনুভূতি।
কানের সংক্রমণে কোন কোন লোকের বেশি ভোগার সম্ভাবনা বেশি?
শিশু, বয়স্ক, সাইনাসের সমস্যায় আক্রান্ত, সাঁতারু এবং অ্যালার্জি আছে তাদের কানের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রতি শীতে কানের ব্যথা নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসা লোকের সংখ্যা বেশি থাকে। এই ধরনের ব্যক্তিদের নিয়মিত কানের ড্রপ ব্যবহার করার এবং তাদের কানের বিশেষ যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কানের ব্যথার সময়মতো চিকিৎসা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
কানের ব্যথা সাধারণত বাইরের কান থেকে শুরু হয়, কিন্তু চিকিৎসা অবহেলা করলে সংক্রমণ মধ্যকর্ণে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা শ্রবণশক্তি এবং এমনকি কানের পর্দার উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। এই অবস্থা বিপজ্জনক। অতএব, কানের ব্যথাকে কখনও হালকা ভাবে নেবেন না।
আরও পড়ুন : খালি পেটে রসুন খেলে শরীরের জন্য অলৌকিক উপকার হবে, অলস শরীর শক্তি পাবে।
কানের ব্যথা প্রতিরোধের জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা কি কি?
- নিয়মিত কান পরিষ্কার করুন।
- কানে জল ঢুকলে পরিষ্কার করুন।
- কানে তুলার কুঁড়ি রাখবেন না; এতে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং ক্ষতি হতে পারে।
- বোতল বা কাপড়ে গরম জল লাগান।
- সরিষা বা জলপাই তেল সামান্য গরম করে ২-৩ ফোঁটা লাগান।
- যদি চুলকানি, স্রাব, দুর্গন্ধ বা ব্যথা হয়, তাহলে অবিলম্বে একজন ইএনটি ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
- আপনার ডাক্তারের নির্দেশ অনুসারে ব্যথানাশক গ্রহণ করুন।
কানের ব্যথার জন্য কখন ডাক্তারের সাথে দেখা করবেন?
- যদি কানের ব্যথা তীব্র এবং স্থায়ী হয়,
- যদি কান থেকে পুঁজ বা রক্ত বের হয়,
- যদি জ্বরের সাথে তীব্র কানের ব্যথা হয়,
- যদি শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়।
কানে ব্যথা হলে কি করবেন না?
- কানে তুলা বা ধারালো জিনিস দিয়ে খোঁচাবেন না।
- রাস্তার ধারের কান পরিষ্কারক দিয়ে কান পরিষ্কার করবেন না।
