ওয়েব ডেস্ক: নজরে দিল্লী। আর এই ২০২১-এর ২১ শে জুলাইয়ের তৃণমূল কংগ্রেসের ‘শহিদ দিবস’-এর মঞ্চ থেকে দিল্লি বিজয়ের ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে বাকি আর মাত্র আড়াই বছর। তার আগেই ফ্রন্টকে মজবুত করতে হবে, একুশের মঞ্চ থেকে এমনই বার্তা দিয়েছেন মমতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২০২৪ সালে ফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে দেশজুড়ে বিনামূল্যে দেওয়া হবে রেশন। নিখরচায় দেশবাসী পাবে চিকিৎসা পরিষেবা। তৃণমূল নেত্রীর এই ঘোষণা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
বিজেপিকে আক্রমণ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, আমাদের স্বাধীনতা আজ বিপদে। বিজেপি বিপদে ঠেলে দিয়েছে। বিজেপির সিন্ডিকেট দেশকে বিপদের মুখে ফেলে দিয়েছে। নিজেদের মন্ত্রীকেও বিশ্বাস করে না। বিরোধী নেতাদের বিরক্ত করে। ঘরে এজেন্সি পাঠিয়ে দেয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখাকে পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে যোগী, এত বড় নেতা। এটাই ওর কাজ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, বিজেপি একটা লোডেড ভাইরাস পার্টি। করোনার চেয়েও বড় ভাইরাস বিজেপি-তে আছে। বেকারি বেড়েছে। শুধু গুলি চালাও, সবাইকে মেরে দাও। এই তো রাজনীতি ওদের। তিনি বলেন, বিজেপির মগজে মরুভূমি। মানবাধিকার জানে না। শুধু ফোন ট্যাপ আর স্পাই গিরি করলে সব হয় না। এজেন্সিদের ঠিকাদার হয়েছে বিজেপি।
Pegasus কাণ্ডে এবার দিল্লি-কলকাতায় তৃণমূলের ধরনা
তিনি যোগ করেন, ভারত সবচেয়ে বড় গণতন্ত্র। বিজেপি তা ধ্বংস করছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ধ্বংস করছে। গণতন্ত্রের ৩টি মূল স্তম্ভ – ভোট, জুডিশিয়ারি, মিডিয়া – পেগাসাস এসে ইলেকশন প্রসেস ক্যাপচার করেছে, জুডিশিয়ারি ক্যাপচার করেছে, মিডিয়া হাউসগুলো ক্যাপচার করেছে। ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছে। গোয়েন্দা-শাসিত স্টেট বানাতে চাইছেন।
এদিন নরেন্দ্র মোদীকেও নিশানা করেন মমতা। বলেন, মোদিজি পার্সোনালি আপনাকে আক্রমণ করছি না। রাজনীতিতে এটুকু সৌজন্য থাকা উচিত। যেটা আপনাদের নেই। আপনি ও শাহ (অমিত) এজেন্সিকে কাজে লাগান। বিপক্ষকে বিরক্ত করেন। কালা আইন তৈরি করেন। কিন্তু মানুষের কি চাইছে, সেব্যাপারে কারও সঙ্গে আলোচনা করেন না। বাংলার মানুষ আপনাদের ওই জন্য সুযোগ দেয়নি। গোটা ভারত, বিশ্বের মানুষ বাংলার দিকে তাকিয়ে ছিল। তাঁদের সেলাম জানাই।
সিঙ্গুর পর্বের একযুগ পর TATA দের বাংলায় স্বাগত জানাল TMC সরকার
তৃণমূল নেত্রী যোগ করেন, আমি সবসময় মনে করি, বাংলার মানুষ উন্নয়ন চান। তাই তৃণমূলকে ক্ষমতায় এনেছেন। গুড গভর্নন্সের কোনও বিকল্প নেই। তোমরা শুধু ধ্বংস চাও। বিভেদ চাও। কনফিউশন চান। আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মাটির লোক। তিনি বলেছিলেন, উচ্চ যেথা শির। ভারত নেতাজি, গাঁধী, জহরলাল নেহরু, রাজেন্দ্র-প্রসাদ, আব্দুল কালাম, ভগৎ সিংহের মাটি। আমরা চাই সমাজের প্রতিটি সম্প্রদায়ের উন্নয়ন হোক। কিন্তু আপনারা তো স্রেফ নিজেদের উন্নয়ন চান। আমি বিশ্বাস করি, ভারতের প্রো-পিপল গভর্নমেন্ট মডেল। ভারতে শিল্প, অর্থনীতি, কৃষির সুস্থিতি দরকার। বেকারত্ব কমা দরকার। এগুলোই ভারতের প্রধান চাহিদা। কিন্তু তোমরা কিছুই করনি। তোমরা শুধু যারা মানুষের জন্য কাজ করতে চায়, তাদের উত্যক্ত করো। প্রধানমন্ত্রী আমাদের উত্যক্ত করবেন না। সবাইকে বিনামূল্যে রেশন দিন।
এবার নদীয়া থেকে গ্রেপ্তার আর এক ভুয়ো IAS অফিসার
সব রাজ্যকে মমতার আহ্বান, ‘গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসছে আর প্রধানমন্ত্রী বলছেন উত্তরপ্রদেশ দেশের মধ্যে সেরা রাজ্য। একটুই লজ্জা নেই। টিকা নেই, ওষুধ নেই, অক্সিজেন নেই, মৃতদেহ সৎকার পর্যন্ত করতে দিতে হচ্ছে না। আমরা গঙ্গা থেকে তুলে সৎকার করেছি। খালি বড় বড় কথা। আপনার ব্যর্থতা চূড়ান্ত। আপনাদের জন্য ৪ লক্ষ লোক মারা গিয়েছে। দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণ কার যেত সঠিক সময় ব্যবস্থা নিলে। কিন্তু বাংলায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারের মতে এসে গণতন্ত্র ধ্বংস করতেই ব্যস্ত ছিলেন আপনারা। বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন, স্বাধীনতা আন্দোলন হোক বা যে কোনও লড়াই, লড়তে প্রস্তুত বাংলা। সব রাজ্যকে বলব, একজোট হয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হন। জোট গড়ে তুলুন। এটাই ঠিক সময়। যত দেরি করবেন, ততই সময় নষ্ট হবে। আমি দিল্লি যাচ্ছি। শরদজি, চিদম্বরমে বলব বৈঠক ডাকলে আমরা যাব’।