ওয়েব ডেস্ক: কলকাতার তিন ওয়ার্ডে জয়ী নির্দল প্রার্থী। কোনভাবেই এখন তৃণমূলে জায়গা দেওয়া হবে না। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্র ভবনে জয়ী ১৩৪ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূল নেত্রী। সেখান থেকেই স্পষ্ট বার্তা দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই বৈঠকে ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম-সহ অন্য নেতৃত্ব। এই বৈঠকেই কলকাতা পুরসভার আগামী পুরবোর্ড গঠন করেন দলনেত্রী। দলনেতা হিসেবে ফিরহাদ হাকিমেই আস্থা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পুর-পারিষদে স্থান পেয়েছেন ১৩ জন। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্দলেরা যোগাযোগ করলেও আমি চাই না যারা জিতেছেন তাঁরা এখুনি দলে আসুন। কারণ, আমার কর্মীরা যদি হেরেও যায় তবু তাঁর সঙ্গেই আমি থাকব। কেউ যদি মনে করে দলকে সাবোতেজ করে কাউকে জিতিয়ে দিয়ে পরে আবার ঢুকে যাব, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। দ্য গেম ইজ নট দ্যাট ইজি। আর যে ১০ জন জিততে পারেননি, যার কাছেই হেরে থাকুন তাঁদের কর্পোরেশনের কাজে লাগাতে হবে।”
গত ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ হয়। মঙ্গলবার ফল প্রকাশ হতেই দেখা যায় শহরের রং শুধুই সবুজ। ১৩৪টি ওয়ার্ডই তৃণমূল পেয়েছে। বিধানসভা ভোটে যে বিজেপি নিজেদের বাংলার প্রধান বিরোধী শক্তি হিসাবে প্রমাণ করেছে, কলকাতায় তাঁদের বরাতে মাত্র তিনটি আসন। তাদের সমান সমান আসন জিতেছে নির্দল প্রার্থীরাও।
২২ জানুয়ারি ও ২৭ ফেব্রুয়ারি বাকি পুরসভাগুলির নির্বাচন, আদালতে হলফনামা দিয়ে জানাল কমিশন
১৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হন নির্দল প্রার্থী রুবিনা নাজ। ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হন আয়েশা তানিজ। ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হন পূর্বাশা নস্কর। ফল প্রকাশের পরই শোনা গিয়েছিল এই তিন নির্দল জয়ী তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন। এমনও শোনা গিয়েছিল, প্রথম থেকেই এই তিন প্রার্থীর শাসকদলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। তৃণমূলের একটা অংশ তাঁদের ভোটে লড়ার ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা নেয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। এমনও শোনা যাচ্ছিল, তৃণমূলের একাংশের সাহায্যই তাঁদের জয় এনে দিয়েছে। কেউ কেউ দাবি করছিলেন, তৃণমূলই বিরোধীদের ভোট কাটতে এই নির্দলদের প্রার্থী করেছে। জিতলেই তৃণমূলেই জায়গা পাকা।
এদিন মেয়র-ইন-কাউন্সিল বা মেয়র পারিষদ হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়– ডেপুটি মেয়র: অতীন ঘোষ, দেবাশীষ কুমার, দেবব্রত মজুমদার, তারক সিং, স্বপন সমাদ্দার, আমিরুদ্দিন ববি, মিতালী বন্দোপাধ্যায়, রাম পেয়ারে রাম, জীবন সাহা, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়ের। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এতো শান্তিপূর্ণ ভোট আগে কখনও হয়নি। অনেক কুৎসার পর মানুষ আমাদের ভরসা রেখেছে। তৃণমূলের সঙ্গে মাটির যোগ। যত জিতবো, তত মাটির সঙ্গে যোগ বাড়বে। তৃণমূল কংগ্রেসে অহংকারের কোনও জায়গা নেই। একুশের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনেও আমাদের ১৬ জন মারা গিয়েছিল। উল্টে দোষ পড়ে আমাদের ঘাড়ে।’
মেয়র হলেন ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি অতীনই, চেয়ারম্যান মালা রায়
এদিকে, রাজ্যের ঝুলে থাকা বাকি পুরসভায় দু’দফায় ভোট করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টকে পুরভোট মামলায় এই তথ্য দিয়েছে কমিশন। রাজ্যের ঝুলে থাকা ১১১টি পুরসভায় ভোট কবে? তার ইঙ্গিত এদিন পাওয়া গেল হাইকোর্টের শুনানিতে। বৃহস্পতিবারের মধ্যেই ভোট নির্ঘণ্ট জানাতে কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। এই ১১১টি পুরসভার মধ্যে ৫টি পুরনিগম আর ১০৬টি পুরসভা।
