ওয়েব ডেস্ক: দেবাঞ্জন কাণ্ডের পর তারই ছায়া নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। নিজেকে CID অফিসার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকরি দেবে বলে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ। কখনও নিজেকে ‘সমাজসেবী’ ও ‘পদস্থ সরকারি আধিকারিক’ বলে নিজেকে পরিচয় দিয়েছে এই অভিযুক্ত। কৃষ্ণনগরে ভবানী-পুরের সিআইডির DSP পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার অভিযোগ উঠল মহিলার বিরুদ্ধে।
ইতিমধ্যেই ওই মহিলার নামে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। চাকরি দেওয়ার নাম করে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে তিনি টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, এর পিছনে রাজনৈতিক ইন্ধন আছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে নদিয়ার জেলা সদর কৃষ্ণনগরে বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ওই মহিলার নাম রাধারানী বিশ্বাস। তাঁর বাড়ি কৃষ্ণনগর পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাঁঠাল পোতার জে কে সাহা লেন এলাকায়। অভিযোগ, সমাজকর্মী হিসেবে নিজেকে জাহির করতেন এই মহিলা। তাছাড়া ভবানী-পুরের CID অফিসার পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছে ক্ষমতাও দেখাতেন পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাধারানী বিশ্বাস। ওই এলাকার বাসিন্দা মুনমুন খাতুন নামে এক মহিলা এই বিষয়ে পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ অনুযায়ী, রাধারানী বিশ্বাস নিজেকে সমাজসেবী হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা আছে বলেও দাবি করেন। এমনকি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে রাধারানী তাঁর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মুনমুন খাতুন।
রেড ভলান্টিয়ার্সদের ভূমিকা নিয়ে বিধানসভাই একাই সরব সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র বিধায়ক Naushad Siddiqui
তবে গৌরব চট্টোপাধ্যায় নামে অন্য একজনের অভিযোগ, করোনা কালে বহু মানুষকে খাবারের সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেছিলেন রাধারানী বিশ্বাস। নিজেকে সিআইডির ডিএসপি বলেও পরিচয় দিয়েছিলেন। গৌরবের কথায়, “আমাকেও স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি দেওয়ার নাম করে তিনি ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারিত করেছেন। বগুলা হাসপাতালে মেডিক্যাল করিয়ে আমাকে নিয়োগপত্র পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। যদিও পরে জানতে পারি ওনার ই-মেল আইডি এবং নিয়োগপত্র সবটাই ভুয়ো। আমি জানতে পেরেছি, উনি বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে এইভাবে টাকা-পয়সা নিয়ে প্রতারণা করেছেন। আমিও পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।”
তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন স্থানীয় কাউন্সিলর অর্পিতা চক্রবর্তীর স্বামী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর অভিযোগ, “আমাদের দলের বড় বড় নেতার সঙ্গে রাধারানী বিশ্বাসের পরিচয় রয়েছে। প্রচুর মানুষকে উনি সাহায্য করেছেন। উনি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। তবে উনি একটি বিশাল নতুন বাড়ি করছেন। আমার কাছে খবর রয়েছে, ইতিমধ্যে উনি ১৭ জনকে প্রতারণা করেছেন। শুধু তাই নয়, উনি আরও অনেককেই প্রতারণা করেছেন, যাঁদের কথা এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। ওনার ব্যবহৃত ই-মেল আইডি এবং নিয়োগপত্র সবটাই ভুয়ো।” যদিও এই ঘটনার পেছনে তৃণমূলেরই একটা অংশের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
‘পশ্চিমবঙ্গের মত গোটা দেশেই বিজেপি-কে রুখবেন মমতা’, বললেন প্রণব পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের
কৃষ্ণনগর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের এক্স কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী উদ্যোগে এই বিষয়টির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সংগঠিত হয়েছে, এনিয়ে কৃষ্ণনগর কোতয়ালি থানায় অভিযোগ ও জমা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। বিভিন্ন সময়ে রাধারানী বিশ্বাসকে কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে বলে আওয়াজ তুলেছেন বিরোধীরা।