Table of Contents
ওয়েব ডেস্ক: ইউরিক অ্যাসিড শরীরের একটা বর্জ্য পদার্থ যা খাবার হজম করতে শরীর থেকে নিঃসৃত হয়। এই ইউরিক অ্যাসিডকে কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বাইরে বের করে দেয়। কিন্তু রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে কিডনি এই অ্যাসিডটিকে পরিশোধিত করে শরীর থেকে নির্গত করতে অক্ষম থাকে। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়াকে হাইপারইউরিসেমিয়া বলা হয়। হাইপারইউরিসেমিয়া হলে কিডনিতে স্টোন দেখা দিতে পারে।
বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ এই কারণে কষ্ট পাচ্ছেন। প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ ইউরিক অ্যাসিডে গাঁটের ব্যথায় শয্যাশায়ী হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। আমেরিকান কলেজ অফ রিউম্যাটোলজির এক গবেষণাপত্র এই তথ্য জানিয়েছে। বেশ কয়েক বছর আগেও ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে নানা খাবারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু এখন নির্দিষ্ট কিছু খাবার ছাড়া, নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে সবই খাওয়া যায়। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, এমন খাবার খাওয়া চলবে না, যাতে ওজন বেড়ে যায়।
কি কি কাড়নে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বারে ?
যারা প্রত্যেকদিন প্রচুর পরিমাণে মাছ-মাংস খান, তাঁদের ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাবার ঝুঁকি বেশি। মদ্যপান ও কার্বোনেটেড কোলা জাতীয় ঠাণ্ডা পানীয় নিয়ম করে খেলেও ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। স্বাভাবিকের থেকে বেশি ওজন হলেও ঝুঁকি থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে এই সমস্যা কিছুটা বংশগত। ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার ঝুঁকি বেশি। অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদযন্ত্রের সমস্যা, কিডনির অসুখ থাকলে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যেতে পারে।
গ্যাস-অম্বলের(Acidity) সমস্যাই ভুগছেন? যেনে নিন আয়ুর্বেদিক পদ্ধতিতে কিভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়াই
কি কি খাবেন না
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে নিজের খাদ্য তালিকায় প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত করুন। ডাল, দুধ ইত্যাদি খাবার এড়িয়ে চলুন। আবার দেশী ছোলা, রাজমা, কাবুলি ছোলা, মটর খাওয়া উচিত নয়। এ ছাড়াও ব্রকোলি, মাশরুম, রেড মিট, মিষ্টি ফল, পেস্ট্রি, বার্গার খাবেন না।
কৃত্রিম রং, চিনি বা কর্ন সিরাপ দেওয়া খাবার একেবারে বন্ধ করা উচিত। কোলা জাতীয় পানীয়, রং দেওয়া জেলি, জ্যাম, সিরাপ, কৌট বন্দি ফ্রুট জ্যুস খাওয়া চলবে না। বলছেন দীপঙ্কর সরকার। স্মোকড ও ক্যানড ফুড খাওয়া চলবে না। আচার, চানাচুর, নোনা মাছ খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। পালং শাক, বিনস, বরবটি, রাজমা খেলে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায়। তবে রান্না করা শিম, কড়াইশুঁটি, ঢ্যাঁড়স বা টোম্যাটো খেলে কোনও সমস্যা হয় না। পালং শাক, পুঁই শাক, মুসুর ডাল, বিউলি ডাল, মাটন, সমুদ্রের মাছ খাওয়া মানা। মাছ, চিকেন বা ডিম খাওয়া যায়। তবে সব মিলিয়ে দিনে ৫০ গ্রামের বেশি নয়। সুবর্ণা বলছেন, মাছ বা চিকেন নিয়মিত খাওয়া গেলেও, মাছের মুড়ো, চিকেন বা মাটনের মেটে বাদ দিন। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ অনেক বেড়ে গেলে মূত্রনালীতে ইউরিক অ্যাসিড জমে স্টোন তৈরি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই দিনে সাড়ে ৩ থেকে ৪ লিটার জল খান। ওজন স্বাভাবিক রাখতে সপ্তাহে ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করুন।
মুখে ও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ সকলের সামনে কথা বলতে লজ্জা ? যেনে নিন কিছু ঘরোয়া সমাধান
ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি পেলে এই ঘরোয়া উপায় তা নিয়ন্ত্রণে করতে পারেন—
১. ব্ল্যাক চেরির জুস ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম করে। কিডনি স্টোনের সমস্যা থাকলে এই জুস পান করে উপকার পেতে পারেন। ব্ল্যাক চেরিতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি গুণ বর্তমান থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিড কম করতে সাহায্য করে।
২. ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে এবং কিডনিতে স্টোনের সমস্যা দেখা দিলে অধিক পরিমাণে জল পান করুন। এর ফলে ইউরিক অ্যাসিডের ঘনত্ব কমে এবং তা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।
৩. অ্যাপেল সিডার ভিনিগারও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কম করতে সাহায্য করে। এতে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটারি গুণ শরীরে ক্ষারীয় অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে।