ওয়েব ডেস্ক: রাজ্যে ২০১৬ সাল থেকেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে চলছে সিপিএম। কারণ বাংলার কংগ্রেস তৃণমূল-বিরোধী। কিন্তু জাতীয় ক্ষেত্রে বিরোধী জোট নিয়ে মাঝেমধ্যেই ঠক্কর খেতে হয় সিপিএমকে। তাঁরা তৃতীয় ফ্রন্ট গড়বে নাকি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে চলবে, তা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। কারণ সেই তৃণমূল। জাতীয় ক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস-বান্ধব থাকাতেই সিপিএমের সমস্যা।
প্রকাশ কারাট নিয়ন্ত্রিত কেরল লবির প্রবল চাপ সত্ত্বেও বিজেপিকে ঠেকাতে কংগ্রেসের পাশে থাকার সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তবে যে রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের বনিবনা নেই সেখানে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের শেষদিনে সাফ জানিয়ে দিলেন ইয়েচুরি। একইসঙ্গে প্রকাশ কারাতের মস্তিষ্ক প্রসূত তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের প্রস্তাবও খারিজ করেন।
বর্তমানে তৃণমূল প্রবলভাবে কংগ্রেস বিরোধী হয়ে উঠেছে। মমতার দলের কংগ্রেস বিরোধিতার ফলে সিপিএমের সুবিধা হয়েছে। কংগ্রেস আর তৃণমূল সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে বৈঠকে বসে সিপিএম। সম্প্রতি তিনদিনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে জোট নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌছনো সম্ভব হয়নি। তাই সোমবার ফের বৈঠক ডাকেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। সেই বৈঠকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
মোদী সরকার কোভিড ভ্যাক্সিনেশন পরিসংখ্যানে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: অধীর
বৈঠকের প্রথম দিনেই কংগ্রেসের পাশে থাকার প্রশ্নে প্রবল আপত্তি তোলে দক্ষিণী রাজ্যগুলি। মূলত কেরল (Kerala), তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশের নেতৃত্ব চাপে ফেলে দেয় সীতারাম ইয়েচুরি ও বঙ্গ সিপিএমকে (CPIM)। বিজেপির মতো কংগ্রেসের সঙ্গেও সমান দূরত্ব রেখে চলার পক্ষে সওয়াল করেন তাঁরা। পালটা এই মুহূর্তে বিজেপিকে ঠেকানো পার্টির প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে গলা ফাটান বাংলার নেতারা।
প্রকাশ কারাট ও পিনারাই বিজয়নদের সঙ্গে আলোচনায় সীতারাম ইয়েচুরি বুঝিয়ে বলেন, সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেসের সঙ্গে চলতে তাদের অসুবিধা নেই। সমস্যা তৈরি হচ্ছে রাজ্যস্তরে। তিনটি রাজ্যে জোট নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তা হল কেরল, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গ। পশ্চিমবঙ্গে সিপিএম তলানিতে চলে গিয়েছে। আর কেরলে তারাই ক্ষমতায়, ত্রিপুরায় প্রধান বিরোধী দল।
‘কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে ক্ষতি হয়েছে’, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে নিশানায় বঙ্গ ব্রিগেড
সীতারাম ইয়েচুরি বক্তব্যে খানিকটা হলেও নমনীয় হয় কেরল লবি। বিষয়টি নিয়ে আগামী এপ্রিল মাসে কান্নুরে আয়োজিত পার্টি কংগ্রেসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের সঙ্গে এখন সহমত হলেও পার্টি কংগ্রেস কারাট শিবির যে ভিন্ন কোন চাল দেবে সে ব্যাপারে কার্যত নিশ্চিত সীতা শিবির।