Table of Contents
একটি পুরনো প্রবাদ আছে যে “প্রতিদিন একটি আপেল ডাক্তারকে দূরে রাখে”, অর্থাৎ প্রতিদিন একটি আপেল খেলে ডাক্তারের প্রয়োজন দূর হয়। আপেল স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী বলে বিবেচিত হয়। এতে ভিটামিন, ফাইবার এবং খনিজ পদার্থ সহ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা অনেক গুরুতর রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। আপেল খেলে হজমশক্তি উন্নত হয়, হৃদরোগের স্বাস্থ্য বজায় থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। সাধারণত, মানুষ বীজ অপসারণের পর আপেল খায়।
কখনও কখনও, কেউ কেউ ভুলবশত বীজ গিলে ফেলে। এই ক্ষেত্রে, কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে আপেলের বীজে বিষ থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু আপেলের বীজ কি সত্যিই বিষাক্ত? এগুলো গিলে ফেলা কি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ? আসুন এই প্রবন্ধে সত্যটি অন্বেষণ করি, যার মধ্যে রয়েছে আপেল খাওয়ার সঠিক উপায় এবং এর উপকারিতা।
আপেলের বীজকে কেন বিষাক্ত বলে মনে করা হয়?
আসলে, আপেলের বীজে অ্যামিগডালিন নামক একটি যৌগ থাকে, যা চিবিয়ে খেলে সায়ানাইড গ্যাস নির্গত হয়, যা বিষাক্ত বলে বিবেচিত হয়। তবে, যদি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হয়, তবে এগুলি ক্ষতিকারক নয়। সায়েন্টিফিক রিপোর্টস জার্নালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উত্তর হিমালয়ের আপেল বীজের আকৃতি, মাইক্রোস্ট্রাকচার এবং বিভিন্ন প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এই গবেষণাটি মূলত আকৃতি এবং তাদের ব্যবহারের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এই গবেষণায় আপেল বীজে উপস্থিত উপাদানগুলি এবং সেগুলি গ্রহণ স্বাস্থ্যের উপর কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা অন্বেষণ করা হয়েছে।
আপেল বীজ কেন বিষাক্ত?
আপেল বীজে অ্যামিগডালিন যৌগ পাওয়া যায়। এটি এক ধরণের সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড। বীজ চিবিয়ে খেলে, এগুলি শরীরের পাচনতন্ত্রে ভেঙে যায়, হাইড্রোজেন সায়ানাইড (HCN) নামক একটি বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে। তবে, প্রতিটি বীজে অ্যামিগডালিন পাওয়া যায় না। বরং, প্রতিটি বীজে অ্যামিগডালিনের পরিমাণ খুব কম। এমনকি যদি কয়েকটি বীজ ভুলবশত গিলে ফেলা হয়, তবুও আমাদের শরীর সহজেই সেগুলি হজম করতে পারে। তদুপরি, বীজের বাইরের স্তর এই যৌগটিকে নিঃসরণ হতে বাধা দেয়। অতএব, যদি বীজ চিবানো না হয়, তাহলে অ্যামিগডালিন নামক গ্যাস নিঃসৃত হয়, যা ক্ষতিকর।
আরও পড়ুন : কেন প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলার প্রতিদিন নারকেল জল পান করা উচিত, জানুন
কত বীজ বিপজ্জনক হতে পারে?
যেমনটি আমরা আগেই বলেছি, কয়েকটি বীজ খাওয়া ক্ষতিকারক নয়। তবে, গবেষণায় দেখা গেছে যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রায় ১৫০টি বীজ গ্রহণ করলে সায়ানাইডের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। শিশুদের জন্য, ৮০ থেকে ১০০টি বীজ গ্রহণ ক্ষতিকারক। যদি বীজ খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্য সমস্যা হয়, তাহলে কিছু সাধারণ লক্ষণ হল মাথা ঘোরা, বমি বা মাথাব্যথা। তবে, একসাথে এত বীজ খাওয়া কারো পক্ষে সাধারণ নয়। অতএব, ২-৪টি বীজ গিলে ফেলা উদ্বেগের কারণ নয়।
এই বিষয়গুলি মনে রাখবেন:
- আপেল খাওয়ার আগে বীজগুলি সরিয়ে ফেলুন।
- আপেল ভুলবশত ১-২টি বীজ গিলে ফেললে আতঙ্কিত হবেন না।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বীজ খাবেন না।
- শিশুদের আপেলের বীজ খাওয়া থেকে বিরত রাখুন।
Disclaimer: এই নিবন্ধটি কেবল তথ্যবহুল এবং চিকিৎসা পরামর্শের বিকল্প নয়।