ওয়েব ডেস্ক: উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল না হলে পৃথক রাজ্য। এই ইস্যুতে বিজেপির ভেতর থেকে উস্কানি দেওয়া হলেও মুখে বলা হচ্ছে বাংলা ভাগ চাই না। স্বয়ং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলছেন, উত্তরবঙ্গের যন্ত্রণা আমরা বুঝি। রাজ্যপাল নয়াদিল্লির নির্দেশে এক সপ্তাহের জন্য উত্তরবঙ্গ সফরে যাচ্ছেন। সেখানকার সাংসদ আলাদা রাজ্যের দাবি তুলেছেন। এবার এই পরিস্থিতিতে সেখানের সংগঠন মজবুত করতে নামানো হয়েছে মুকুল রায়কে। যিনি সদ্য বিজেপি ত্যাগ করে তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরেছেন। তৃণমূল কংগ্রেস দক্ষিণবঙ্গে ভাল ফল করলেও উত্তরবঙ্গ সাফল্য আসেনি।
বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। আর তারপর থেকেই বিজেপিতে বড়সড় ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যা তরান্বিত হয়েছে মুকুল রায়ের তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমে। আর সেই সূত্রেই এবার আলিপুরদুয়ার বিজেপি জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা যোগ দিলেন তৃণমূলে। তাঁর সঙ্গে যোগ দিলেন ওই জেলারই আরও ৮ বিজেপি নেতা। ফলে এবারের বিধানসভা ভোটেও বেশ ভালো ফল করা আলিপুরদুয়ারে বিজেপির চরম ক্ষতি হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর দলবদল করে গঙ্গাপ্রসাদ নিশানা করেছেন বিজেপি নেতৃত্বকেই।
তাঁর কথায়, ‘জেলার নেতৃত্বকে কখনই গুরুত্ব দেয় না বিজেপি। ভোটের আগে কাজ করলাম আমরা, আর আমাদেরই কোনও গুরুত্ব দেয়নি। ভোটের আগেই দলবদল করতে পারতাম। কিন্তু তা করলে আমাকে গদ্দার বলা হত। আমি দলকে পাঁচটা আসন দিয়েছি। তাও বিজেপি জেলার নেতাদের গুরুত্বই নেই। তাই দল ছেড়ে এলাম।’ আর যার উপস্থিতিতে এই যোগদান, সেই মুকুল রায় বলেন, ‘এটা শেষের শুরু। বিজেপি যেখানে নিজেদের শক্তিশালী বলে দাবি করছে, সেই উত্তরবঙ্গ থেকেই আগে ভাঙন ধরল ওই দলে। এরপর আরও দেখবেন।’ জেলার রাজনৈতিক মহলেরও মতে, গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার বিজেপি ত্যাগ গোটা জেলায় গেরুয়া শিবিরকে বিপুল ক্ষতির মুখে ফেলবে।
রক্তে Cholesterol বেড়েছে? ঘরোয়া পদ্ধতিতে কি করে এটি নিয়ন্ত্রণ করবেন যেনে নিন
গঙ্গাপ্রসাদের দলবদল নিয়ে গতকাল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘আমরা আরও বড় গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তৈরি করব’। এদিন তার জবাব দিয়েছেন গঙ্গাপ্রসাদ। বলেন, ‘শুভেন্দু বাবু তো পদের লোভেই দলে এসেছেন। বিধানসভার টিকিট না দিলে, বিরোধী দলনেতা না করলে তিনি কি বিজেপিতে থাকবেন? এই তো দলে এলেন। বড়বড় কথা বলছেন এখন। আর বিজেপি এদের নিয়ে নাচানাচি করছে। নিজের দলের নেতাদের কোনও গুরুত্বই দেয় না।’ তবে মুকুল রায় যেভাবে বিজেপির শেষের শুরু নিয়ে মন্তব্য করেছেন, তাতে গেরুয়া শিবিরে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
অপরদিকে, তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার বিজেপি নেতা তপন সিনহা। শনিবার সন্ধ্যায় গোবরডাঙা টাউনহলে তৃণমূলের এক সভায় যোগদান করেন তিনি। বিজেপিতে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তপনবাবু। মুকুল রায় যেদিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন, সেদিনই বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিজেপিতে কাজ করতে পারছেন না। শেষমেশ শনিবার তৃণমূলে যোগদান করেন তিনি।
ভুলগুলিকে উপলব্ধি না করতে পেরে আরও বড় ভুলের জন্ম দিয়েছে CPIM: সীতারাম ইয়েচুরি
উত্তরবঙ্গে আসন রয়েছে ৫৪টি। এবার এই ৫৪ টি আসনের মধ্যে এখন বিজেপির দখলে রয়েছে ২৯ টি আর তৃণমূলের দখলে ২৫ টি। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে উত্তরবঙ্গে ভাল ফল করেছে তৃণমূল। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি দখল করেছিল ৩৬ টি আসন। আসন সংখ্যার নিরিখে আটটি আসনের মধ্যে সাতটি দখল করেছিল বিজেপি। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরে ভাল ফল করেছে।