এবার সৌজন্যের নজির বসিরহাটে, সিপিএমের পার্টি অফিস ফিরিয়ে দিল তৃণমূল

by Chhanda Basak

ওয়েব ডেস্ক: দলীয় কার্যালয় দখলকে কেন্দ্র করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছড়িয়েছে শাসক দল সহ বিরোধী দলগুলির মধ্যে। কিন্তু এক অন্যরকম ছবি দেখা গেল বসিরহাটে এক নম্বর ব্লকের গ্রাম পঞ্চায়েতে। এখানে সিপিএমের কৃষক সভার একটি কার্যালয়, যেখানে বামফ্রন্ট ১৯৮৫,সালে এই পার্টি অফিস টি তৈরি করে।

 

একুশের নির্বাচনের পর এই CPIM এর পার্টি অফিস দখল করে নিয়েছিল তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। রাতারাতি সেখানে তৃণমূলের পতাকা তোলা হয়। বদলে যায় ঘরের ছবিগুলিও। অনেক চেষ্টার পরেও কার্যালয়টি পুনরুদ্ধার করতে পারেনি সিপিএম। কিন্তু জানতো না বিধায়ক, ব্লকের তৃণমূলের নেতারা। তাই এদিন সিপিএম নেতৃত্ব বারবার প্রশাসনকে বলার পরে ব্যাপারটা নজরে আসে।

বসিরহাট ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি শাহানুর মণ্ডল, বসিরহাটের দক্ষিণ বিধায়ক সপ্তর্ষি ব্যানার্জি নেতৃত্বে বসিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক সুরিন্দর সিং সহ পুলিশ আধিকারিকদের সামনে রেখে CPIM এর পার্টি অফিস নিজে হাতে খুলে দেয় বসিরহাট এক নম্বর ব্লক সভাপতি শাহানুর মণ্ডল বিধায়ক সপ্তর্ষি ব্যানার্জি।

উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য বানানর বিরোধিতায় সরকারের পাশে দাঁড়াল বাম-কংগ্রেস

এ দিন সোমবার বিকেল বেলা বসিরহাট দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে সেই কার্যালয়ের চাবি ফেরত দেওয়া হয় সিপিএম নেতাদের হাতে। উপস্থিত ছিলেন উত্তর ২৪ পরগনা সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য রাজু আহমেদ, সুধাংশু শীল, শহিদুল ইসলাম। সৌজন্যের দৃষ্টান্ত স্থাপনে বিধায়ক এনেছিলেন লেডিগেনি। চাবি হস্তান্তরের পরে সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য রাজু আহমেদকে মিষ্টিমুখ করান সপ্তর্ষি-বাবু। পাল্টা বিধায়ককে লাল মিষ্টি ও লাল ফুলের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ওই সিপিএম নেতা। তার পরে দু’জনই শান্তির বার্তা দেন দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে।

মিষ্টিমুখ-পর্বের শেষে সপ্তর্ষি বলেন, ‘‘মা-মাটি-মানুষের সরকার রাজ্যে গণতন্ত্র চায়। সাম্প্রদায়িক কোনও শক্তিকে রাজ্যে চাই না। বিরোধী হিসাবে চাই সিপিএমকে।’’ আর, রাজুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল নেতাদের ধন্যবাদ। এটা সৌজন্যের নজির হয়ে থাকবে।’’

এবার কি মিশন ২০২৪? মঙ্গলবার পাওয়ারের ডাকা বিরোধীদের বৈঠক ঘিরে জল্পনা

এ দিন কার্যালয়ের চাবি হস্তান্তর-পর্বে হাজির ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সাহানুর মণ্ডল এবং বসিরহাট থানার আই সি সুরিন্দার সিংহ। সাহানুর বলেন, ‘‘কোনও দলের কার্যালয় দখল করা আমাদের দলের সংস্কৃতি নয়। যারা করেছিল, তাদের সেই কথা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ আমরা কারও কার্যালয় দখল করলে, কাল অন্য কেউ আমাদের কার্যালয়ের দখল নেবে। এই পরম্পরা চলতেই থাকবে। আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে।’’

বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি রাজনীতির মানুষ কোনোদিনই ছিলাম না। চিকিৎসক ছিলাম। এখন বিধায়ক হয়েছি। সিপিএমের কার্যালয় দখল করা হয়েছে, এই অভিযোগ পেয়েই আমি সেটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য কথাবার্তা শুরু করি। পুলিশও এ বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে।’’

রাজুর বক্তব্য, ‘‘আমরা দলীয় কার্যালয় দখলের রাজনীতি করি না। এই এলাকায় সিপিএম এবং তৃণমূলের বহু কর্মী আছেন। শান্তি রেখেই কার্যালয় পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করেছি।’’

Copyright © 2025 NEWS24-BENGALI.COM | All Rights Reserved.

google-news